
খাতুনগঞ্জে স্থিতিশীল রয়েছে পেঁয়াজের দাম। দুই সপ্তাহ আগে সরবরাহ সংকটে নিত্য এ পণ্যটির দাম বেড়ে কেজিপ্রতি ২৮ টাকায় উঠে গেলেও বর্তমানে তা বিক্রি হচ্ছে ১৮-২০ টাকায়। আগামীতে দেশী পেঁয়াজের সরবরাহ শুরু হলে দাম আরো কমবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
দেশে ভোগ্যপণ্যের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জের বিভিন্ন আড়তে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার পাইকারিতে ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হয় প্রতি কেজি ১৮ থেকে সর্বোচ্চ ২০ টাকায়। এর মধ্যে কেজিপ্রতি দক্ষিণী জাতের পেঁয়াজ ২০ এবং নাসিক জাতের পেঁয়াজ ১৮ টাকায় লেনদেন হয়। চাহিদা না থাকায় খাতুনগঞ্জে দেশী পেঁয়াজের লেনদেন নেই বললেই চলে। তবে আগামী উৎপাদন মৌসুমে সরবরাহ বৃদ্ধিজনিত কারণে খাতুনগঞ্জে দেশী পেঁয়াজের সরবরাহ বাড়বে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।
খাতুনগঞ্জের কাঁচা পণ্য ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইদ্রিস বলেন, ভারতে শুরু হয়েছে পেঁয়াজ উত্তোলন মৌসুম। আগাম জাতের কারণে দেশের বাজারেও পণ্যটির পর্যাপ্ত সরবরাহ রয়েছে। এতে করে পণ্যটির বাজার এখন স্থিতিশীল। দুই সপ্তাহ আগে বৃষ্টিপাত ও বিরূপ আবহাওয়ার কারণে পেঁয়াজের সরবরাহ কমে যাওয়া এবং মান নষ্ট হওয়ায় পণ্যটির দাম বেড়ে যায়। ওই সময়ে প্রতি কেজি পেঁয়াজ প্রায় ২৮ টাকা দরে বিক্রি হয়েছিল। তবে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বাজারে এর সরবরাহ বেড়েছে। এ অবস্থায় পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধির সম্ভাবনা নেই বলে জানান তিনি।
ব্যবসায়ীরা জানান, পাইকারি বাজারে দৈনিক ৮-১০ ট্রাক পেঁয়াজ প্রবেশ করে। আমদানিকারকরা দেশের প্রধান চারটি স্থলবন্দর দিয়ে দেশে পণ্যটি আমদানি করেন। এর পর তারা দেশের বিভিন্ন আড়তে পেঁয়াজ সরবরাহ করে থাকেন। এক্ষেত্রে শুধু কমিশন নিয়েই ব্যবসা পরিচালনা করে খাতুনগঞ্জের আড়তগুলো। তবে কেউ কেউ আমদানিকারকদের কাছ থেকে পেঁয়াজ সংগ্রহ করে তা বিভিন্ন দামে বিক্রি করে।
দেশের ফরিদপুর, মেহেরপুর, কুষ্টিয়াসহ বেশকিছু জেলায় বড় পরিসরে পেঁয়াজের আবাদ হয়। বর্তমানে মুড়িকাটা পেঁয়াজের রোপণ মৌসুম শুরু হয়েছে। আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই পেঁয়াজের রোপণ শেষ হবে। ফলে দেড় থেকে দুই মাসের মধ্যে দেশে নতুন মৌসুমের পেঁয়াজ উত্তোলন শুরু হবে। ওই সময় দেশে পেঁয়াজের দাম আরো কমবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
জানা গেছে, দেশের অন্যতম পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জ দেশের বিভিন্ন জেলা ও ভারতীয় পেঁয়াজের আমদানির ওপর সম্পূর্ণ নির্ভরশীল। চট্টগ্রাম অঞ্চলে পেঁয়াজের আবাদ না হওয়ায় দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে রবি মৌসুমে পণ্যটির সরবরাহ শুরু হয়। ফলে বছরের অধিকাংশ সময় ভারতীয় পেঁয়াজের ওপর নির্ভরশীল থাকে খাতুনগঞ্জ। কয়েক মাস ধরে বৃষ্টিপাত ও বিরূপ আবহাওয়ায় পেঁয়াজ সরবরাহ ব্যবস্থা বিঘ্ন ঘটায় এর দাম উত্থান-পতনের মধ্যেই ছিল। তবে শীত মৌসুম শুরু হওয়ায় পণ্যটির দাম স্থিতিশীল পর্যায়ে নেমে এসেছে। দেশীয় পেঁয়াজের জাত ছোট হওয়ায় ক্রেতা পর্যায়ে চট্টগ্রামে ভারতীয় পেঁয়াজের চাহিদাই বেশি।
শেয়ার বিজনেস24.কম