
ভারত-পাকিস্তান রাজনৈতিক উত্তেজনার জেরে আবারও ক্ষতির মুখে পড়েছেন সাংস্কৃতিক অঙ্গনের শিল্পীরা। কাশ্মীর ইস্যু ও পুলওয়ামা হামলার পর ভারতে পাকিস্তানি শিল্পীদের বয়কট করার প্রবণতা বেড়েছে। ফাওাদ খান, হানিয়া আমিরসহ অনেকেই এই বয়কটের শিকার।
তবে ইতিহাসের দিকে চোখ রাখলে দেখা যায়, ভারতীয় বিনোদন জগতের অনেক উজ্জ্বল তারকার জন্ম হয়েছে বর্তমান পাকিস্তানে, অর্থাৎ তৎকালীন অবিভক্ত ভারতের সীমানায়। সেই মাটিতে জন্ম নেওয়া এসব মানুষ মুম্বাইয়ে এসে নিজেকে প্রমাণ করেছেন কিংবদন্তি হিসেবে। আজও যাঁদের নাম ভারতীয় চলচ্চিত্রের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা রয়েছে।
গুলজার:
পুরো নাম সম্পুরন সিং কালরা। জন্ম পাকিস্তানের ডিনা শহরে। পরবর্তীতে ভারতে এসে গীতিকার, পরিচালক ও সাহিত্যিক হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন। কলকাতা ও মুম্বাইয়ে কাটে তাঁর সৃষ্টিশীল সময়। গুলজার আজও ভারতের গর্ব হিসেবে সমাদৃত।
দীলিপ কুমার:
সবার প্রিয় ইউসুফ ভাই, ভারতীয় চলচ্চিত্রের ‘ট্র্যাজেডি কিং’ দীলিপ কুমার জন্মগ্রহণ করেন পেশোয়ারে। তিনি একাধারে সুদর্শন, প্রতিভাবান এবং নিঃসন্দেহে এক যুগের মহাতারকা। ভারতীয় সিনেমার ইতিহাসে তিনি চিরস্মরণীয় হয়ে আছেন।
রাজ কাপুর:
‘দ্য গ্রেটেস্ট শো-ম্যান’ হিসেবে খ্যাত রাজ কাপুরের শিকড়ও পেশোয়ারে। তিনি ছিলেন একজন সফল পরিচালক, অভিনেতা ও প্রযোজক। তাঁর সৃষ্টি 'আওয়ারা', 'শ্রী ৪২০'-এর মতো সিনেমা আজও মানুষের হৃদয়ে গেঁথে আছে।
দেব আনন্দ:
বলিউডের চিরসবুজ রোমান্টিক নায়ক দেব আনন্দের জন্ম হয়েছিল পাকিস্তানের গুরদাসপুরে। তাঁর ক্যারিশমা, অভিনয় দক্ষতা ও স্টাইল আজও অনুপ্রেরণার উৎস। ‘গাইড’, ‘হরে রাম হরে কৃষ্ণ’ প্রভৃতি সিনেমা আজও কালজয়ী।
সুনীল দত্ত:
প্রখ্যাত অভিনেতা ও রাজনীতিবিদ সুনীল দত্তের জন্ম পাকিস্তানের ঝেলামে। শুধু অভিনয় নয়, রাজনৈতিক অঙ্গনেও তিনি ছিলেন সম্মানিত এক নাম। অভিনেতা সঞ্জয় দত্তের বাবা এই গুণী মানুষ ভারতীয় চলচ্চিত্রে রেখে গেছেন অনন্য অবদান।
শেষ কথা:
রাজনীতি তাদের জন্মভূমিকে ভাগ করলেও, মুম্বাইয়ের রূপালি পর্দায় তাদের অবদান আজও অখণ্ড। পাকিস্তানে জন্ম হলেও তারা হৃদয়ে ছিলেন, আছেন এবং থাকবেন ভারতীয়। এই পাঁচ নক্ষত্র প্রমাণ করে দিয়েছেন—কলা, প্রতিভা ও আবেগের কোনো সীমান্ত নেই।