
সিরাজগঞ্জের তাড়াশে এলজিইডির নির্মাণাধীন সেতুর বিকল্প সড়ক নির্মাণ করায় উজানের পানিপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছিল। এতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ায় ডুবে যায় তিন ইউনিয়নের ফসলি জমি। এ ঘটনায় উপজেলার তাড়াশ-কাঁটাগাড়ি আঞ্চলিক সড়কের ভাদাস সেতুসংলগ্ন বিকল্প সড়ক কেটে দিয়েছেন বিক্ষুব্ধ কৃষকরা।
আজ রবিবার( ৩ আগস্ট) দুপুর ১টার দিকে বাঁধটি কেটে দেওয়া হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত কয়েক দিন ধরে তাড়াশ অঞ্চলে থেমে থেমে মাঝারি ও ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। এতে উজানে থাকা উপজেলার দেশিগ্রাম, তালম, মাধাইনগর ইউনিয়নের অন্তত ৩০ থেকে ৩৫টি গ্রামের ফসলি মাঠে ভয়াবহ জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। ইতোমধ্যে ওই তিন ইউনিয়নে রোপা আমন ধান লাগানোর জন্য প্রস্তুত করা প্রায় এক হাজার ২০০ হেক্টর জমি ও সে জমিতে থাকা রোপা আমনের বীজতলা তলিয়ে গেছে।
ভাদাস গ্রামের কৃষক মো. আলম, ওয়াশির গ্রামের কৃষক কাওছার হোসেনসহ অনেকেই জানান, তাড়াশ-কাঁটাগাড়ি আঞ্চলিক সড়কের ভাদাস ওয়াবদা বাঁধ এলাকায় সেতু নির্মাণের কারণে পাশের সড়কে মাত্র দুটি রিং স্লাব বসিয়ে পানিপ্রবাহের ব্যবস্থা করা হয়।
কিন্তু ওই স্থানটি পানিপ্রবাহের জন্য খুবই সংকীর্ণ। এ কারণে উজানে বৃষ্টির পানি ফুলেফেঁপে উঠতে থাকে। এতে প্রতিদিন নতুন নতুন এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। জলাবদ্ধতা থেকে রোপা আমনের বীজতলা ও জমি রক্ষায় শতাধিক বিক্ষুদ্ধ কৃষক কোদাল, শাবল নিয়ে পানিপ্রবাহের একমাত্র স্থান তাড়াশ-কাঁটাগাড়ি আঞ্চলিক সড়কের ভাদাস ওয়াবদা বাঁধ এলাকার সেতু সংলগ্ন সড়কের বাঁধ কেটে দেন।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, তাড়াশ-কাটাগাড়ি আঞ্চলিক ভাদাস খালে বাঁধ দিয়ে ব্রিজ নির্মাণের কাজ করছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। বাঁধের ওপর দিয়ে যান চলাচলের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা করলেও পানি যাওয়া-আসার সুযোগ রাখা হয়নি। এতে বাঁধের পূর্বদিকের অংশের ফসলী মাঠ ভয়াবহ জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে, সেতুর বিকল্প সড়ক কেটে দেওয়ায় পানিপ্রবাহের পথ উন্মুক্ত হলেও সড়কটি ব্যবহারকারী স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ পথচারীরা পড়েছেন চরম দুর্ভোগে।
তাড়াশ মহিলা ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থী মোছা. মরিয়ম খাতুন, সুরাইয়া ইয়াসমিন লিমা, রোজিনা আক্তারসহ অনেকেই জানান, ওই সড়কটি তাদের কলেজে আসা-যাওয়ার একমাত্র সড়ক।
হঠাৎ করে বিক্ষুব্ধ কৃষকরা তাদের প্রয়োজনে রাস্তাটি কেটে দিয়েছেন। এতে পথচারী, শিক্ষার্থীসহ হাজারো মানুষ দুর্ভোগে পড়েছেন।
এ ব্যাপারে তাড়াশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নুসরাত জাহান বলেন, বিষয়টি জেনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।