ঢাকা   সোমবার ০৭ জুলাই ২০২৫, ২৩ আষাঢ় ১৪৩২

বোতলজাত পানির দামে বিক্রি হচ্ছে দুধ

গ্রামবাংলা

রাব্বিউল হাসান, জয়পুরহাট

প্রকাশিত: ১৮:৩৭, ৭ জুলাই ২০২৫

বোতলজাত পানির দামে বিক্রি হচ্ছে দুধ

জয়পুরহাটের কালাইয়ে প্রায় ২০লদিন ধরে এক লিটার গরুর দুধ বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকায়। দুধের আমদানি বেশি হলে প্রতি লিটার দুধ বিক্রি হচ্ছে ২৫ টাকায়। আবার আমদানি কম হলে প্রতি লিটার ৩৫ টাকায়। যেখানে এক লিটার বোতলজাত পানি বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা ও আধা লিটার বোতলজাত পানি বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকায়।

বাজারে দুধের সরবরাহ বেশি এবং চাহিদা কমে যাওয়ায় অনেক খামারি এখন বাধ্য হয়ে কম দামে দুধ বিক্রি করছেন। অন্যদিকে গো-খাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তারা।

উপজেলার সবচেয়ে বড় দুধের বাজার বসে পুনট হাটে। সেখানে প্রতিদিন বসে দুধের বাজার। আর এই দুধের বাজারে উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে দুধ বিক্রি করতে এসেছেন খামারিরা। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দুধ বিক্রি করতে এসেছেন খামারি ও প্রান্তিক খামারিরা। বাজারের শেডের দুই পাশে সারিবদ্ধ হয়ে ১২ জন ছানা ব্যবসায়ী দুধ কিনছেন। আবার অনেক প্রান্তিক খামারি একটু বেশি দামে বিক্রি করার আশায় বসে রয়েছেন।

দুধ বিক্রি করতে আসা কয়েকজন দুগ্ধ খামারি এবং দুধ বিক্রি করতে আসা প্রান্তিক খামারিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, একজন খামারির ১০ লিটার দুধ উৎপাদনে একটি দুগ্ধবতী গাভীর জন্য ভুষি, খৈল, ঘাস, ভিটামিন, বিদ্যুৎ বিল, লবণ, মজুরি, চিকিৎসা খরচসহ হয় প্রায়  ৪০০টাকা। এক লিটার দুধ বিক্রি করে পায় ৩০ টাকা। এতে দুগ্ধ খামারির লোকসান গুনতে হচ্ছে ১০০-১৫০ টাকা আবার একজন প্রান্তিক খামারি দুই লিটার দুধ বিক্রি করে লোকসান হয় ৩০ টাকা।

উপজেলার বাইগুনি গ্রামের দুগ্ধ খামারি শাহজাহান আলী বলেন, দুধ বিক্রির জন্য নির্ধারিত ক্রয়কেন্দ্র প্রয়োজন। কিন্তু তাদের এখানে নির্দিষ্ট ক্রয়কেন্দ্র না থাকায় আমাদের লোকসান গুনতে হয়। আবার ক্রেতা না পেয়ে লোকসান করেই দুধ বিক্রি করতে হয়। সরকার যদি খামারিদের দিকে নজর না দেয় আনেকেই এ পেশা থেকে সরে আসবেন।

দুধ বিক্রি করতে এসেছেন উপজেলার তিশরাপাড়া গ্রামের রাজা মিয়া। তিনি বলেন, আজকে প্রতি লিটার দুধ ৩০ টাকা দরে বিক্রি করেছি। গো-খাদ্য কিনে চা খাওয়ার টাকাও থাকল না।

উপজেলার এলতা গ্রাম থেকে দুধ বিক্রি করতে এসেছেন বক্কের আলী। তিনি বলেন, দুধের যে দাম তাতে গরু পালন করাই কঠিন। সরকারের কাছে দাবি জানাই স্থানীয়ভাবে নির্দিষ্ট মূল্যে যেন দুধ ক্র‍য় করা হয়। এতে কিছুটা হলেও আমাদের মতো খামারিদের উপকার হবে।

পুনট হাটের দুধ ব্যবসায়ী ফেরদৌস হোসেন বলেন, ছানার চাহিদা কম থাকায় দুধের দাম কম। আগে প্রতি কেজি ছানা বিক্রি হতো ৩০০ টাকা, এখন বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ২৫০টাকায়। আবার দই ও মিষ্টির চাহিদা কমে যাওয়া ও দুধের আমদানি বেশি হওয়ার জন্য দুধের দাম এখন অনেকটা কম।

এ বিষয়ে কালাই উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মনিরুজ্জামান বলেন, মাঠ ফাঁকা ও পর্যাপ্ত ঘাস থাকার কারণে দুধের উৎপাদন বেশি হচ্ছে। আবার দুধ ও ছানার চাহিদা কম যাওয়ায় দুধের দাম গিয়েছে। দুধের বাজার অল্প সময়ের মধ্যে আবার ঠিক হয়ে যাবে।