
গ্রাহকদের ডিজিটাল লেনদেন সুরক্ষিত রাখতে আরও নজরদারিতে আসছে দেশের বিকাশ, রকেট ও নগদের মতো মোবাইল আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো। পাশাপাশি পেমেন্ট সার্ভিস প্রোভাইডার ও পেমেন্ট সিস্টেম অপারেটরগুলোকে নজরদারির আওতায় আনা হচ্ছে। এ জন্য এসব সেবার কার্যক্রম নিয়মিত মূল্যায়নের আওতায় আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর মাধ্যমে জানা যাবে, কোন প্রতিষ্ঠান গ্রাহকদের কতটা মানসম্মত সেবা দিচ্ছে।
বর্তমানে দেশে ১৩টি এমএফএস ও ২১টি পিএসপি এবং পিএসও প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানকে সম্প্রতি একটি চিঠি পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এতে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত স্বমূল্যায়নপ্রক্রিয়ায় অংশ নিতে বলা হয়েছে।
যেভাবে মূল্যায়ন করা হবে
প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা যাচাইয়ে নির্দিষ্ট প্রশ্নপত্র ও কিছু সূচক দেওয়া হয়েছে। এতে প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের সাংগঠনিক ও আইনি কাঠামো, আর্থিক অবস্থা, প্রযুক্তিগত সক্ষমতা, ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা, অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো খতিয়ে দেখা হবে।
মূল্যায়নের জন্য প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে প্রশ্নগুলোর উত্তর ‘হ্যাঁ’, ‘না’ অথবা ‘আংশিক’ আকারে দিতে হবে। প্রতিটি উত্তরের জন্য থাকবে মন্তব্য কলাম, যা পূরণ করা বাধ্যতামূলক।
মান নির্ধারণ ও ব্যবস্থা গ্রহণ
মূল্যায়নে প্রাপ্ত স্কোরের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠানগুলোকে পাঁচটি শ্রেণিতে ভাগ করা হবে—শক্তিশালী, সন্তোষজনক, মোটামুটি, প্রান্তিক ও দুর্বল। ফলে কোন প্রতিষ্ঠানের কোন খাতে ঝুঁকি রয়েছে, তা চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারবে বাংলাদেশ ব্যাংক।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই উদ্যোগ ডিজিটাল লেনদেনব্যবস্থায় স্বচ্ছতা, নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করবে, যা গ্রাহকদের আস্থা বাড়াতে সাহায্য করবে। ডিজিটাল লেনদেন যখন বাড়ছে, তখন এই উদ্যোগকে সময়োপযোগী মনে করছেন তাঁরা।
দেশে দীর্ঘদিন ধরেই মোবাইলে আর্থিক সেবা দিচ্ছে বিকাশ, রকেট ও নগদের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো। পাশাপাশি ডিজিটাল আর্থিক লেনদেনব্যবস্থা সম্পন্ন করে দিচ্ছে পেমেন্ট সার্ভিস প্রোভাইডার (পিএসপি) ও পেমেন্ট সিস্টেম অপারেটর (পিএসও)।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পরিশোধসংক্রান্ত কার্যক্রমে স্বচ্ছতা, নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে স্বমূল্যায়নপ্রক্রিয়া গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এতে দেশের ডিজিটাল লেনদেনব্যবস্থার ওপর মানুষের বিশ্বাস আরও বাড়বে। সামনে ডিজিটাল লেনদেন বাড়বে। তাই এ সময়ে এই উদ্যোগ সময়োপযোগী।