
মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক পিএলসি (এমটিবি) তিনজন বিশিষ্ট পেশাজীবীকে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে নির্বাচিত করেছে। তারা হলেন — সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর এবং তপন চৌধুরী পরিচালক হিসেবে এবং জারিন মাহমুদ হোসেন স্বতন্ত্র পরিচালক হিসেবে।
সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর, পরিচালক:
সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর একজন প্রখ্যাত বাংলাদেশি শিল্পপতি এবং দেশের শীর্ষস্থানীয় চামড়াজাত পণ্য প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান এপেক্স ফুটওয়্যার লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। তিনি এমটিবির পরিচালনা পর্ষদে পরিচালক হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি প্রয়াত সৈয়দ মঞ্জুর এলাহীর পুত্র, যিনি একজন খ্যাতিমান উদ্যোক্তা, বাংলাদেশের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা এবং মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক পিএলসি (এমটিবি)-এর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ছিলেন। এপেক্স ফুটওয়্যারের পাশাপাশি তিনি ল্যান্ডমার্ক ফুটওয়্যার লিমিটেডের চেয়ারম্যান এবং এপেক্স ট্যানারি লিমিটেড, এপেক্স ফার্মা লিমিটেড এবং ব্লু ওশান ফুটওয়্যার লিমিটেডের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
করপোরেট নেতৃত্বের পাশাপাশি তিনি দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিভিন্ন নাগরিক উদ্যোগে সক্রিয়ভাবে যুক্ত। তিনি লেদার গুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (এলএফএমইএবি)-এর সভাপতি, মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই)-এর দুইবারের সাবেক সভাপতি এবং ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি। তিনি ফ্রেন্ডশিপ এবং এসপিবিএ-এর মতো এনজিওগুলোর সঙ্গেও যুক্ত আছেন এবং উদ্যোক্তা, উদ্ভাবন ও রপ্তানি প্রসারে বিভিন্ন জাতীয় কমিটিতে কাজ করছেন। তিনি ইউনিভার্সিটি অব পেনসিলভানিয়ার ওয়ারটন স্কুল থেকে ইকোনমিক্সে বিএসসি সম্পন্ন করেছেন, যেখানে তাঁর মূল ফোকাস ছিল উদ্যোক্তা ব্যবস্থাপনা।
তপন চৌধুরী, পরিচালক:
তপন চৌধুরী এমটিবির পরিচালনা পর্ষদে আস্ট্রাজ লিমিটেডের প্রতিনিধি হিসেবে পরিচালক নির্বাচিত হয়েছেন, পূর্ববর্তী পরিচালক আনিকা চৌধুরীর স্থলাভিষিক্ত হয়ে। তিনি বাংলাদেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় শিল্পপতি এবং স্কয়ার গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত স্যামসন এইচ. চৌধুরীর দ্বিতীয় পুত্র।
স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসে মার্কেটিং বিভাগে কর্মজীবন শুরু করে তিনি সারা দেশে চিকিৎসকদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে পণ্য প্রচারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ১৯৯৫ সালে তিনি স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে নিয়োগ পান এবং বর্তমানে স্কয়ার টেক্সটাইলস লিমিটেডের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
তাঁর নেতৃত্বে স্কয়ার গ্রুপ হাসপাতাল, টেক্সটাইল, টয়লেট্রিজ, খাদ্য ও পানীয়, আইটি, অর্গানিক চা-বাগান, পুঁজিবাজার কার্যক্রম এবং স্যাটেলাইট টিভি সম্প্রচারের মতো বিভিন্ন খাতে বিস্তৃত হয়েছে।
করপোরেট খাতে ভূমিকার পাশাপাশি তিনি জনসেবামূলক কাজেও সম্পৃক্ত। ২০০৭ সালে তিনি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, যুব ও ক্রীড়া, খাদ্য ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই), বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএমএ), বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব পাবলিকলি লিস্টেড কোম্পানিজ (বিএপিএলসি) এবং ইয়াং মেনস খ্রিস্টান অ্যাসোসিয়েশন (ওয়াইএমসিএ)-এর সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে তাঁর সহায়তার জন্য তিনি সুপরিচিত এবং বহুবার দেশের অন্যতম সর্বোচ্চ করদাতা হিসেবে ভূষিত হয়েছেন। তাঁর নেতৃত্বে স্কয়ার গ্রুপ উদ্ভাবন, সততা ও সামাজিক উন্নয়নের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন এবং যুক্তরাজ্যে বিজনেস ম্যানেজমেন্ট ও স্ট্র্যাটেজিক প্ল্যানিং, সুইজারল্যান্ড ও বেলজিয়ামে ফার্মাসিউটিক্যাল মার্কেটিংয়ের ওপর বিশেষায়িত প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন।
জারিন মাহমুদ হোসেন, স্বতন্ত্র পরিচালক:
জারিন মাহমুদ হোসেন এমটিবির স্বতন্ত্র পরিচালক হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর রয়েছে ২০ বছরেরও বেশি সময়ের ফাইন্যান্সিয়াল ম্যানেজমেন্ট ও নেতৃত্বদানের অভিজ্ঞতা। তিনি স্নেহাশীষ মাহমুদ অ্যান্ড কোং, চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টসের প্রতিষ্ঠাতা অংশীদার। তিনি হারস্টোরি ফাউন্ডেশন ও চলোপড়ি — একটি ব্লেন্ডেড লার্নিং প্ল্যাটফর্মের প্রতিষ্ঠাতা।
এছাড়াও, তিনি ‘হারস্টোরিজ: অ্যাডভেঞ্চারস অব সুপারগার্লস’ নামক দেশীয় নারী রোল মডেল নিয়ে লেখা দুই খণ্ডের গ্রন্থের সম্পাদক।
তাঁর পেশাগত যাত্রা শুরু হয় নিউইয়র্ক সিটি মেয়রস বাজেট অফিসে এবং পরবর্তীতে কেপিএমজি এলএলপি (নিউইয়র্ক)-এ কর্মরত অবস্থায় তিনি সার্টিফায়েড পাবলিক অ্যাকাউন্ট্যান্ট (সিপিএ) হিসেবে যোগ্যতা অর্জন করেন। পরে তিনি বাংলাদেশে ফিরে এসে এসিএনএবিআইএনে কাজ করেন এবং নিজস্ব ফার্ম প্রতিষ্ঠা করেন।
তিনি ক্যাম্প ফর পপুলার এডুকেশন (সিএএমপিই), শাশা ডেনিমস লিমিটেড, বাংলাদেশ মহিলা সমিতি এবং এন্ট্রাপ্রেনার্স অর্গানাইজেশন (ইও) বাংলাদেশ-এর বোর্ডে দায়িত্ব পালন করছেন। অতীতে তিনি আগা খান ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, সাজিদা ফাউন্ডেশন এবং ঘাসফুলের বোর্ডে দায়িত্ব পালন করেছেন এবং ইও বাংলাদেশ-এর প্রেসিডেন্ট ছিলেন।