ঢাকা   শুক্রবার ০৩ অক্টোবর ২০২৫, ১৭ আশ্বিন ১৪৩২

ইসলামী ব্যাংকে তোলপাড়: আরও ২০০ কর্মীকে চাকরিচ্যুত করা হলো

শেয়ারবাজার

শেয়ারবিজনেস ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৯:৪৯, ২ অক্টোবর ২০২৫

সর্বশেষ

ইসলামী ব্যাংকে তোলপাড়: আরও ২০০ কর্মীকে চাকরিচ্যুত করা হলো

শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত দেশের বেসরকারি খাতের শীর্ষ ব্যাংক ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি-তে আবারও বড় ধরনের কর্মী ছাঁটাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। চাকরি বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ এবং দক্ষতা যাচাই প্রক্রিয়া অনুসরণ করে কর্তৃপক্ষ এবার একসঙ্গে আরও ২০০ কর্মীকে অব্যাহতি দিয়েছে। এর আগে চলতি সপ্তাহের শুরুতেও প্রথম দফায় ২০০ কর্মীকে ছাঁটাই করা হয়েছিল। এর ফলে মাত্র কয়েক দিনের ব্যবধানে ব্যাংকটিতে মোট ৪০০ কর্মী চাকরি হারালেন।

ব্যাংক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, কর্মীদের দক্ষতা যাচাই এবং অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা নিশ্চিত করার অংশ হিসেবে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (আইবিএ)-এর তত্ত্বাবধানে একটি বিশেষ যোগ্যতা মূল্যায়ন পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়, যার ভিত্তিতেই এই পুরো প্রক্রিয়া শুরু হয়।

যোগ্যতা যাচাই ও অব্যাহতির কারণ

• পরীক্ষার ফলাফল: মোট ৪১৪ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী এই পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন। এদের মধ্যে প্রায় ৮৮ শতাংশ বা ৩৬৪ জনই উত্তীর্ণ হয়েছেন। তবে পরীক্ষায় ব্যর্থ হওয়া ৫০ জনকে প্রশিক্ষণ দিয়ে পুনরায় মূল্যায়নের সুযোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ব্যাংক।

• পরীক্ষায় বিরত থাকা কর্মীরা: প্রায় পাঁচ হাজার কর্মী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ থেকে বিরত ছিলেন। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তাদের আপাতত বিশেষ দায়িত্বে সংযুক্ত (ওএসডি) করেছে এবং ভবিষ্যতে তাদের জন্য আলাদা সুযোগ রাখার পরিকল্পনা রয়েছে।


• শৃঙ্খলার প্রশ্ন: ছাঁটাই হওয়া কর্মীদের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র দক্ষতার ঘাটতিই নয়, শৃঙ্খলার অভাবকেও কারণ হিসেবে দেখানো হয়েছে। ব্যাংকের বিভিন্ন সূত্রমতে, অনেক কর্মী পরীক্ষার বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপপ্রচার চালিয়েছেন, সহকর্মীদের নিরুৎসাহিত করেছেন এবং ব্যাংকের ভাবমূর্তির বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে অবস্থান নিয়েছেন। এই কারণগুলোকেও অব্যাহতির সিদ্ধান্তে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

ব্যাংকের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও মানবসম্পদ উন্নয়ন বিভাগের প্রধান ড. কামাল উদ্দীন জসীম এই বিষয়ে বলেন, “আমাদের প্রধান লক্ষ্য কর্মীদের দক্ষতা যাচাই ও প্রাতিষ্ঠানিক বৈধতা নিশ্চিত করা, কাউকে ছাঁটাই করা নয়। পরীক্ষায় অংশ নেওয়া অধিকাংশই সফলভাবে উত্তীর্ণ হয়েছেন। যারা ব্যর্থ হয়েছেন, তাদের প্রশিক্ষণের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। আর যারা অংশ নেননি, তাদের জন্যও নতুন করে সুযোগ রাখা হবে।”

দেশের ব্যাংক খাতের এই সর্ববৃহৎ প্রতিষ্ঠানে ধারাবাহিক এই পদক্ষেপ কর্মীদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি করলেও, ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের দাবি হলো—এই উদ্যোগের ফলে দীর্ঘমেয়াদে ইসলামী ব্যাংক আরও দক্ষ, শৃঙ্খলাপরায়ণ এবং টেকসই কর্মী বাহিনী গড়ে তুলতে সক্ষম হবে।

সর্বশেষ