ঢাকা   সোমবার ২৮ এপ্রিল ২০২৫, ১৫ বৈশাখ ১৪৩২

ভিক্ষা করে মসজিদ নির্মাণ করেছেন বৃদ্ধা

ধর্ম

প্রকাশিত: ১৪:৫৭, ১১ অক্টোবর ২০১৬

আপডেট: ১৯:০৯, ১১ অক্টোবর ২০১৬

ভিক্ষা করে মসজিদ নির্মাণ করেছেন বৃদ্ধা

চার বছর আগে স্বামী মারা যায় কালুজান বেওয়ার। চার সন্তান থাকলেও তারা মায়ের কোনো খোঁজ নেয় না। তাই বেঁচে থাকার তাগিদেই ভিক্ষাবৃত্তি শুরু করেন ৭০ বছর বয়সী কালুজান। বয়স্ক ভাতা আর বাড়ি বাড়ি ভিক্ষা করেই সংসার চলে তার। ভিক্ষা করলেও তার জীনের শেষ ইচ্ছে ছিল স্বামীর রেখে জায়গায় একটি মসজিদ নির্মাণ করবেন। সেই ভাবনা থেকেই টাকা জমানো শুরু করেন। বয়স্ক ভাতা আর ভিক্ষে করে জমানো সেই টাকা দিয়ে মসজিদ নির্মাণের কাজ শুরু করেন। ইতোমধ্যে মসজিদটির নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে।

টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার তরফপুর ইউনিয়নের শীরঘাটা গ্রামে নির্মিত এই মসজিদটিতে মুসুল্লিরা এখন নিয়মিত নামাজ পড়ছেন। বিনাবেতনে একজন ইমামও রাখা হয়েছে।

বৃদ্ধা কালুজান জানান, ভিক্ষা ও বয়স্ক ভাতার টাকায় সংসার চালানো পর যে টাকা উদ্বৃত্ত হতো সেই টাকা তরফপুর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব বজলুর রশিদ বাজেদের কাছে জমা রাখতেন। এরপর সেই জমানো টাকা দিয়ে স্বামীর রেখে যাওয়া শেষ সম্বল ২৪ শতাংশ জমির উপর মসজিদটি নির্মাণ করেন।

বজলুর রশিদ জানান, বয়স্ক ভাতা ও ভিক্ষার টাকা তিনি দীর্ঘদিন ধরে তার কাছে জমাতে থাকেন। এভাবে খেয়ে না খেয়ে দুই লাখ চার হাজার টাকা জমা করেন কালুজান। এলাকাবাসী তাকে জমানো টাকা দিয়ে স্বামীর নামে খরচ (মানুষ খাওয়ানো) করার পরামর্শ দেন। কিন্তু তাদের কথায় কান দিয়ে কালুজান তার মনের কথা সবাইকে জানান। পরে তার স্বামীর রেখে যাওয়া ২৪ শতাংশ জমিতে মসজিদটি নির্মাণ করা হয়।

বজলুর রশিদ আরও জানান, ইতোমধ্যে মসজিদ ঘরের নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। জমানো টাকা শেষ হয়ে যাওয়ায় ঘরের ফ্লোর পাকা করা সম্ভব হয়নি। তরফপুর-মির্জাপুর-বাঁশতৈল যাওয়ার রাস্তা সংলগ্ন জমির পাশে মসজিদটি নির্মিত হওয়ায় এলাকার লোকজন ছাড়াও পথচারীরাও নামাজ পড়ছেন। একজন ইমামও রাখা হয়েছে। তবে বর্তমানে তাকে বেতন দিতে হয় না।

মসজিদের মোমবাতি ও আগরবাতিসহ আনুষাঙ্গিক খরচও বৃদ্ধা কালুজান বেওয়া বহন করছেন বলে জানালেন বজলুর রশিদ।

শেয়ার বিজনেস24.কম