০৭ আগস্ট ২০১৫ শুক্রবার, ০৮:০৮ পিএম
এজবাস্টনের পর ট্রেন্ট ব্রিজেও দুই দিনে টেস্ট হারতে বসেছিল অস্ট্রেলিয়া। গত টেস্টে ভয়ংকর এই অপমান থেকে তাদের বাঁচিয়েছিল সাত আর নয়ে নামা দুই ব্যাটসম্যানের দুটো ফিফটি। এবার বোধ হয় বাঁচিয়ে দিল ভাগ্য! দিনের খেলা তখনো ২০ ওভারের মতো বাকি। গত ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার লজ্জার পরিত্রাতা পিটার নেভিল ক্যাচ তুলে দিলেন স্লিপে। অ্যালিস্টার কুক তালুবন্দীও করলেন। নেভিল হাঁটা ধরেছেন সাজঘরে। তাঁকে ফিরিয়ে আনল তৃতীয় আম্পায়ারের স্বেচ্ছা নো-বলের রিভিউ। রিপ্লেতে ধরা পড়ল, গোড়ালিটা দাগের বাইরে ফেলেছেন স্টিভেন ফিন। জেমস অ্যান্ডারসনের ৪০০ আর স্টুয়ার্ট ব্রডের ৩০০-এর পর ফিনের ১০০ উইকেট পূর্ণ হওয়ার উদযাপন মুহূর্তেই থেমে গেল। বড় বাঁচা বেঁচে গেল অস্ট্রেলিয়াও। না হলে শেষ চার উইকেট নিয়ে দ্বিতীয় দিনের শেষ কুড়িটা ওভার টেকা আগুন-পরীক্ষা হয়েই থাকত মাইকেল ক্লার্কের দলের জন্য। পরে নেভিল আর মিচেল জনসন আউট হওয়ার পর অস্ট্রেলিয়ার কাঁপা কাঁপি দেখে সেটা আরও স্পষ্ট হয়েছে। হ্যাঁ, লড়াইটা আগেই সীমাবদ্ধ হয়ে গেছে ‘অস্ট্রেলিয়া কখন হারবে’—এই প্রশ্নের মধ্যেই। ৯ উইকেটে ৩৯১ রান তুলে লাঞ্চের আগমুহূর্তে ইনিংস ঘোষণা করেছিল ইংল্যান্ড। ৪০০ ছোঁয়নি, তবু ৩৩১ রানের লিড! প্রথম ইনিংসের শোক কাটেনি বলেই হয়তো ক্যারিয়াস-সেরা বোলিং (৬/১১১) করেও মুখে হাসি ছিল না মিচেল স্টার্কের। প্রথম ইনিংসের সেই শোক চেপেই শুরু করেছিল অস্ট্রেলিয়া। রজার্স-ওয়ার্নারের উদ্বোধনী জুটিতে ওঠা ১১৩ রান চোয়ালবাঁধা লড়াইয়েরই প্রতিচ্ছবিও ছিল। কিন্তু ২৭ বলের মধ্যে এলোমেলো হয়ে গেল সব। নিজের টানা তিন ওভারে তিনজনকে ফেরালেন বেন স্টোকস। আসলে চারজনই তাঁর শিকার। চতুর্থজনকে বোলারের বদলে ফিল্ডার হিসেবে ফিরিয়েছেন—ক্যাচ নিয়ে। একে একে ফিফটি তোলা দুই ওপেনারের পর মার্শ আর স্মিথও ফিরে গেলে হুট করে অস্ট্রেলিয়ার স্কোর হয়ে যায় ১৩৬/৪। মাত্র ২৩ রানের মধ্যে ৪ উইকেট নেই। ভীষণ অস্বস্তি নিয়ে চা বিরতিতে গেলেন ক্লার্ক। অস্ট্রেলীয় অধিনায়ক তখনো রানের খাতা খোলেননি। সঙ্গী ভোজেস অপরাজিত মাত্র ২ রানে। ৪৮ রানে অপরাজিত ভোজেস একা লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। ১৩ রান করে আগেই লড়াইটাতে আত্মসমর্পণ করেছেন ক্লার্ক। কুকের অসাধারণ বুদ্ধিদীপ্ততায় আউট হয়েছেন বেলের হাতে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে। পরে নেভিল আর জনসনকে ফিরিয়ে ৫ উইকেট পূর্ণ করেছেন স্টোকস। আলোকস্বল্পতার কারণে ৫ ওভার আগেই খেলার ইতি টেনেছেন আম্পায়ার। কোনো মতে দিনটা পার করলেও সোয়া দুই দিনে টেস্ট হারের লজ্জা মোটামুটি নির্ধারিতই মনে হচ্ছে অস্ট্রেলিয়ার জন্য। যে হারের সঙ্গে সঙ্গে সিরিজটাও হেরে যাবে তারা। এখনো যে ইংল্যান্ডের প্রথম ইনিংসের চেয়ে ৯০ রানে পিছিয়ে, হাতে মাত্র ৩ উইকেট। গত দশ মাসে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ২৪ ইনিংস মিলিয়ে তোলা ৬১৮ রান, সঙ্গে অ্যাশেজ হার—ক্লার্কে অধিনায়কত্ব আর ক্যারিয়ার দুটোরই ভবিষ্যৎ এখন অন্ধকার গহ্বরে।
শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।