বীমা খাতে দীর্ঘদিন ধরে চলমান মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) সংকট নিরসনে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা। এ লক্ষ্যে ‘বীমা কোম্পানির মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা নিয়োগ প্রবিধানমালা–২০১২’ সংশোধন করে সিইও নিয়োগের যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতার শর্ত শিথিল করা হয়েছে।
সংশোধিত প্রবিধানমালা অনুযায়ী এখন থেকে সাধারণ বীমা কর্পোরেশন ও জীবন বীমা কর্পোরেশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের পাশাপাশি বীমা কোম্পানির অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এডিএমডি) ও উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) পদে কর্মরত কর্মকর্তারাও মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার সুযোগ পাবেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)।
এ ছাড়া আন্তর্জাতিকভাবে পরিচিত বহুজাতিক বীমা কোম্পানিতে ঊর্ধ্বতন ব্যবস্থাপনা পর্যায়ে কর্মরত পেশাজীবীদের ক্ষেত্রেও সিইও নিয়োগের শর্ত আগের তুলনায় সহজ করা হয়েছে, যাতে অভিজ্ঞ ও দক্ষ জনবল খাতে যুক্ত হতে পারে।
নতুন সংশোধনীতে একচ্যুয়ারি, সিপিএ, সিএফএ, সিএলইউ, আইসিএবি, এসিসিএ ও আইসিএমএবি’র ফেলো বা অ্যাসোসিয়েটসহ স্বীকৃত পেশাগত ডিগ্রি ও পদবিধারীদের জন্যও মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা হওয়ার পথ সুগম করা হয়েছে। এর ফলে উচ্চমানের পেশাগত যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের সিইও পদে আসার সুযোগ উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়বে।
সংশোধিত প্রবিধানমালায় সিইও নিয়োগ বা নবায়ণের ক্ষেত্রে আবেদন গ্রহণ ও কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত জানানোর সময়সীমা আগের ১৫ দিনের পরিবর্তে বাড়িয়ে ৬০ দিন নির্ধারণ করা হয়েছে, যাতে যাচাই-বাছাই আরও কার্যকরভাবে সম্পন্ন করা যায়।
একই সঙ্গে দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়ে নতুন বিধান যুক্ত করা হয়েছে। কোনো বীমা কোম্পানি বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে দায়িত্ব পালনকালে ক্ষমতার অপব্যবহার, দুর্নীতি, মানিলন্ডারিং বা আর্থিক অনিয়মের কারণে অপসারিত ব্যক্তি কিংবা যাদের সিইও হিসেবে নিয়োগ বা নবায়ণের আবেদন প্রত্যাখ্যাত হয়েছে, তারা ভবিষ্যতে অন্য কোনো বীমা কোম্পানিতেও নিয়োগযোগ্য হবেন না।
আইডিআরএ জানিয়েছে, যোগ্য জনবলের ঘাটতির কারণে বর্তমানে বহু বীমা কোম্পানিতে মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তার পদ শূন্য রয়েছে। অথচ অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও উপব্যবস্থাপনা পরিচালক পর্যায়ে এমন অনেক কর্মকর্তা রয়েছেন, যারা সিইও হিসেবে দায়িত্ব পালনে সক্ষম।
কর্তৃপক্ষের মতে, সংশোধিত প্রবিধানমালার মাধ্যমে সম্ভাব্য সিইওদের পরিধি বিস্তৃত হয়েছে। এতে একদিকে দক্ষ ও পেশাদার নেতৃত্ব নিশ্চিত হবে, অন্যদিকে বীমা কোম্পানিতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বাড়বে। এর ফলে সামগ্রিকভাবে বীমা খাতের প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা আরও দৃঢ় হবে বলে আশা প্রকাশ করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা।
























