ঢাকা   মঙ্গলবার ১৮ নভেম্বর ২০২৫, ৪ অগ্রাহায়ণ ১৪৩২

বিলাসবহুল হোটেল স্টকে জাগরণ—রাজস্ব ঝড়ে ফিরছে বিনিয়োগকারীর আস্থা

শেয়ারবাজার

শেয়ারবিজনেস ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৫:২৭, ১৮ নভেম্বর ২০২৫

সর্বশেষ

বিলাসবহুল হোটেল স্টকে জাগরণ—রাজস্ব ঝড়ে ফিরছে বিনিয়োগকারীর আস্থা

শেয়ারবাজারের ভ্রমণ ও অবকাশ খাতে আবারও দেখা দিয়েছে আশার আলো। ২০২৫–২৬ অর্থবছরের জুলাই–সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে শক্তিশালী রাজস্ব প্রবৃদ্ধি প্রকাশের পর বিলাসবহুল হোটেলগুলোর শেয়ার নিয়ে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ চোখে পড়ার মতো বেড়েছে। যদিও টানা দ্বিতীয় সপ্তাহেও পুরো খাতটি সামগ্রিকভাবে নেতিবাচক রিটার্ন দিয়েছে, তবুও প্রান্তিক পারফরম্যান্সের এই ইতিবাচক ধাক্কা খাতে নতুন প্রাণ ফিরিয়েছে।

সাম্প্রতিক আর্থিক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, দেশের সব প্রধান পাঁচ-তারকা হোটেল গত বছরের তুলনায় উল্লেখযোগ্য রাজস্ব বৃদ্ধি করেছে। উচ্চ অকুপেন্সি, বাড়তি রুম রেট, কর্পোরেট ইভেন্ট ও কনফারেন্স বুকিং বেড়ে যাওয়ায় ইন্টারকন্টিনেন্টাল ঢাকার আয় বেড়েছে ৭৩%, দাঁড়িয়েছে ৩৯ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। ইউনিক হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টসের আয় বেড়েছে ৫৪% হয়ে ৪৭ কোটি ২৬ লাখ টাকা, আর শেরাটন ঢাকার রাজস্ব প্রায় দ্বিগুণ হয়ে পৌঁছেছে ২১ কোটি ৫৩ লাখ টাকায়। কক্সবাজারের সি পার্ল বিচ রিসোর্ট এবং দ্য পেনিনসুলা চট্টগ্রামও শক্তিশালী প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে।

তবে পুরো খাতে চিত্র এক নয়। ইউনিক হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টস মুনাফায় বড় ধাক্কা দিয়ে প্রান্তিকে অর্জন করেছে ৪০ কোটি ১৬ লাখ টাকা। উন্নত খরচ ব্যবস্থাপনা, আতিথেয়তা খাতের পুনরুদ্ধার এবং তাদের যৌথ উদ্যোগের বিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে পাওয়া ৩১ কোটি ৩ লাখ টাকার লাভ—এসব মিলিয়েই মুনাফায় উত্থান এসেছে। পাশাপাশি তালিকাভুক্ত সিকিউরিটিজে লাভও তাদের আয়ে ইতিবাচক অবদান রেখেছে।

অন্যদিকে দ্য পেনিনসুলা চট্টগ্রাম দেখিয়েছে সবচেয়ে চমকপ্রদ টার্নঅ্যারাউন্ড—৬০.৭% রাজস্ব বৃদ্ধির পাশাপাশি পরিচালন লোকসান পুষিয়ে তারা প্রান্তিকে দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ৫০ লাখ টাকার লাভে। উন্নত মূল্য নির্ধারণ কৌশল ও শক্তিশালী মূল হোটেল ব্যবসার কারণে এই অগ্রগতি সম্ভব হয়েছে।

কিন্তু সব হোটেলই লাভজনক হতে পারেনি। উচ্চ সুদে নেওয়া ঋণের চাপ এবং সুদের ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় বাংলাদেশ সার্ভিসেস লিমিটেড লোকসানে রয়েছে ২৪ কোটি ২৮ লাখ টাকা, আর সি পার্ল বিচ রিসোর্ট লোকসান কমালেও এখনও রয়েছে ১০ কোটি ১৪ লাখ টাকা ঘাটতিতে। বিশ্লেষকরা বলছেন, খাতে সুদ খরচ বৃদ্ধি এখন বড় ঝুঁকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ডিভিডেন্ড ঘোষণা পরিস্থিতিও আর্থিক বৈষম্য স্পষ্ট করেছে। ইউনিক হোটেল দিয়েছে ১৬% ক্যাশ ডিভিডেন্ড; পেনিনসুলা মাত্র ০.৫%, আর সি পার্ল ঘোষণা করেছে ১% ডিভিডেন্ড। বিপরীতে বাংলাদেশ সার্ভিসেস কোনো ডিভিডেন্ড দেয়নি, যা তাদের আর্থিক সংকটকে আরও স্পষ্ট করেছে।

সর্বশেষ