ঢাকা   শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৫, ২৯ কার্তিক ১৪৩২

রেকর্ড পতনে স্তব্ধ শেয়ারবাজার, বিনিয়োগকারীদের দিশেহারা অবস্থা

রেকর্ড পতনে স্তব্ধ শেয়ারবাজার, বিনিয়োগকারীদের দিশেহারা অবস্থা

টানা দরপতনের পর আজ বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) দেশের শেয়ারবাজারে নেমেছে বড় ধরনের ধস। প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১২২.৬৪ পয়েন্ট কমে দিন শেষে লেনদেন শেষ হয়, যা সাম্প্রতিক সময়ে অন্যতম বড় পতন হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

সবচেয়ে উদ্বেগজনক বিষয় হলো, এদিন বাজারে ক্রেতার সঙ্কট চরম আকারে পৌঁছেছে। তিন ডজনেরও বেশি কোম্পানির শেয়ার ছিল সম্পূর্ণ ক্রেতাশূন্য। এতে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে, যা বাজারে নতুন করে নেতিবাচক মনোভাব সৃষ্টি করেছে।

এদিন ডিএসইর ২০ খাতের মধ্যে ১৩ খাতেই প্রায় সব কোম্পানির শেয়ারের দর কমেছে—যা এক প্রকার রেকর্ড পতন। দরপতন হওয়া খাতগুলোর মধ্যে রয়েছে খাদ্য ও আনুষঙ্গিক, জীবন বিমা, তথ্যপ্রযুক্তি, সিরামিক, ট্যানারি, সেবা ও আবাসন, ভ্রমণ ও বিনোদন, পাট, প্রিন্টিং ও প্রকাশনা এবং টেলিযোগাযোগ খাত। অন্যদিকে, ফার্মাসিউটিক্যালস ও রসায়ন খাতে ৩৪টির মধ্যে মাত্র ১টির, প্রকৌশল খাতে ৩৯টির মধ্যে ১টির, বিমা খাতে ৫৮টির মধ্যে ৩টির এবং বস্ত্র খাতে ৫৮টির মধ্যে মাত্র ২টি কোম্পানির দর বেড়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, খাতভিত্তিক এমন সর্বব্যাপী দরপতন সাম্প্রতিক বছরগুলোতে একেবারেই বিরল।

লেনদেনের পরিসংখ্যান বলছে, এদিন ৩৮৪টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৩৫২টির দর কমেছে, মাত্র ১৫টির বেড়েছে এবং ১৭টির দর অপরিবর্তিত ছিল। বাজার বিশ্লেষকদের মতে, বিনিয়োগকারীদের আস্থাহীনতা, তারল্য সঙ্কট ও নীতিগত অনিশ্চয়তা এ পতনের প্রধান কারণ। তারা মনে করছেন, যদি দ্রুত আস্থা ফিরিয়ে আনতে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া না হয়, তাহলে বাজার আরও নিম্নমুখী হতে পারে।

ডিএসইর বাজার মূলধনের তথ্যেও দেখা গেছে বড় ধাক্কা। গত ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে ডিএসইর প্রধান সূচক ছিল ৫ হাজার ৫০৯ পয়েন্টের বেশি এবং বাজার মূলধন ছিল ৭ লাখ ২৬ হাজার ৬৯২ কোটি টাকা। অথচ আজ তা নেমে এসেছে ৬ লাখ ৭৩ হাজার ৯৭৫ কোটি টাকায়। অর্থাৎ, দুই মাসের ব্যবধানে বাজার মূলধন কমেছে প্রায় ৫৩ হাজার কোটি টাকা, যা সাম্প্রতিক সময়ে বাজার পতনের গভীরতা স্পষ্ট করে তুলেছে।