
শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত একটি কোম্পানির চেয়ারম্যান তাঁর স্বামীকে প্রায় ২১ কোটি টাকার শেয়ার উপহার দিচ্ছেন। মুন্নু সিরামিকের উদ্যোক্তা পরিচালক আফরোজা খানম তাঁর স্বামী মঈনুল ইসলামকে এই শেয়ার উপহার দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। আজ সোমবার আফরোজা খানমের পক্ষ থেকে স্বামীকে শেয়ার উপহার দেওয়ার এই ঘোষণা দেওয়া হয়।
দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) দেওয়া এক ঘোষণায় বলা হয়েছে, শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত সিরামিক খাতের কোম্পানি মুন্নু সিরামিকের উদ্যোক্তা আফরোজা খানম কোম্পানিটির প্রায় ২৬ লাখ শেয়ার উপহার দেবেন।
ঢাকার শেয়ারবাজারে আজ সোমবার মুন্নু সিরামিকের প্রতিটি শেয়ারের বাজারমূল্য ছিল প্রায় ৭৯ টাকা। সেই হিসাবে ২৬ লাখ শেয়ারের বাজারমূল্য দাঁড়ায় ২০ কোটি ৫৪ লাখ টাকা।
ডিএসইতে প্রকাশিত ঘোষণায় আরও বলা হয়েছে, আফরোজা খানম মুন্নু সিরামিকের একজন উদ্যোক্তা। বর্তমানে তিনি কোম্পানিটির চেয়ারম্যানের দায়িত্বে রয়েছেন। আফরোজা খানম মুন্নু গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা হারুনুর রশীদ খান মুন্নুর মেয়ে। আর মঈনুল ইসলাম মুন্নু সিরামিকের একজন সাধারণ শেয়ারধারী। সাধারণ শেয়ারধারী হলেও তিনি কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদে নেই।
শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নিয়ম অনুযায়ী, তালিকাভুক্ত কোনো কোম্পানির পরিচালক হতে হলে ওই পরিচালকের হাতে কোম্পানিটির ন্যূনতম ২ শতাংশ শেয়ার থাকা বাধ্যতামূলক।
ডিএসইতে দেওয়া শেয়ার উপহারের ঘোষণায় দেখা যাচ্ছে, আফরোজা খানম তাঁর স্বামীকে যে পরিমাণ শেয়ার উপহার দিচ্ছেন, তা কোম্পানিটির মোট শেয়ারের ৭ শতাংশের বেশি। ফলে উপহারের এই শেয়ার নিয়েই মঈনুল ইসলাম চাইলে কোম্পানিটির পরিচালক হতে পারবেন। কারণ, উপহারের এই শেয়ারে তিনি ন্যূনতম শেয়ার ধারণের শর্ত পূরণ করবেন। জানা যায়, মূলত স্বামীকে কোম্পানির পরিচালক করতেই স্ত্রীর পক্ষ থেকে এই শেয়ার উপহার দেওয়া হচ্ছে। চলতি মাসের মধ্যে উপহারের এই শেয়ার হস্তান্তর সম্পন্ন করা হবে।
ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী, ১৯৮৩ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয় মুন্নু সিরামিক। সর্বশেষ গত সেপ্টেম্বর শেষে কোম্পানিটির শেয়ারের ৩৭ দশমিক ৪৩ শতাংশই ছিল এটির উদ্যোক্তা-পরিচালকদের হাতে। সাধারণ শেয়ারধারীদের হাতে ছিল ৪৮ দশমিক ১৮ শতাংশ শেয়ার। বাকি শেয়ার ছিল প্রাতিষ্ঠানিক ও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের হাতে। কোম্পানি মাঝারি মানের কোম্পানি হিসেবে ‘বি’ শ্রেণিভুক্ত। সর্বশেষ গত জুনে সমাপ্ত আর্থিক বছরের জন্য শেয়ারধারীদের প্রতি শেয়ারের বিপরীতে ২ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল।
সর্বশেষ গত জুনে সমাপ্ত অর্থবছরের আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, গত অর্থবছর কোম্পানিটি প্রায় ৮৩ লাখ টাকা মুনাফা করেছে। গত বছরের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল প্রায় দেড় কোটি টাকা।