
দেশের শীর্ষস্থানীয় বেসরকারি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান সিটি ব্যাংক নতুন করে বড় ধরনের শেয়ার কেলেঙ্কারির ঘটনায় আলোচনায় এসেছে। প্রতিষ্ঠানের এক পোর্টফোলিও ম্যানেজারের বিরুদ্ধে ব্যাংকের শেয়ার আত্মসাৎ করে ব্যক্তিগতভাবে কোটি টাকার মুনাফা করার অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে।
বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) অস্বাভাবিক লেনদেন শনাক্ত করার পর গত জুনে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। তদন্তে শুধু ওই পোর্টফোলিও ম্যানেজারই নন, ব্যাংকের ট্রেজারি প্রধান ও অন্তত তিনজন ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টরও অনিয়মিত লেনদেন থেকে সুবিধা নিয়েছেন বলে উঠে এসেছে।
প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, কর্পোরেট স্ট্র্যাটেজিক বিজনেস ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. সানোয়ার খান ব্যাংকের নিজস্ব বিও অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে তার ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে ক্যাপিটেক গ্রামীণ ব্যাংক গ্রোথ ফান্ডের ১০ লাখ ইউনিট শেয়ার প্রতিটি ১৩ টাকা ৮০ পয়সা দরে কেনেন, যখন বাজারদর ছিল ১৫ টাকা ৬০ পয়সা। পরে বাজারদরে বিক্রি করে প্রায় ১৮ লাখ টাকা অবৈধ মুনাফা করেন, আর্থিক ক্ষতিগ্রস্ত হয় ব্যাংকটি। একই কৌশলে তিনি নিজের আরেকটি অ্যাকাউন্ট ও স্ত্রীর বিও অ্যাকাউন্টও ব্যবহার করেন।
তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, সানোয়ার খান ও তার স্ত্রী এডিএন টেলিকম, তৌফিকা ফুডস অ্যান্ড লাভেলো আইসক্রিম, বিডি পেইন্টস-এর শেয়ার লেনদেন করেও অনিয়ম করেছেন। এ বিষয়ে বিএসইসি গত ৩ জুন তদন্ত শুরু করে এবং ৯ জুলাই ব্যাংকের ট্রেজারি প্রধানকে চিঠি দিয়ে এসব লেনদেনের ব্যাখ্যা ও ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ নীতিমালা সম্পর্কে ব্যাখ্যা চায়।
বিএসইসির পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, ট্রেজারি প্রধানসহ দুজন ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টরও এসব লেনদেন থেকে লাভবান হয়েছেন। তবে ব্যাংক কর্তৃপক্ষের দাবি, এসব কার্যক্রম সম্পর্কে শীর্ষ কর্মকর্তারা অবগত ছিলেন না; তারা কেবল বিনিয়োগের উদ্দেশ্যে অর্থ দিয়েছিলেন। অভিযুক্ত পোর্টফোলিও ম্যানেজারের বিরুদ্ধেই দায়ভার বর্তেছে বলে তাদের দাবি।
ব্যাংকের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, অভিযুক্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। তবে পুঁজিবাজারে আলোচিত এ কেলেঙ্কারির ঘটনায় ব্যাংকটির সুনাম বড় ধরনের প্রশ্নের মুখে পড়েছে।