ঢাকা   মঙ্গলবার ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৪ ভাদ্র ১৪৩২

একীভূতকরণের বিরুদ্ধে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের অংশীদারদের অবস্থান স্পষ্ট

শেয়ারবাজার

শেয়ারবিজনেস ডেস্ক

প্রকাশিত: ২২:৫৫, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫

একীভূতকরণের বিরুদ্ধে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের অংশীদারদের অবস্থান স্পষ্ট

সংকটে থাকা অন্যান্য শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করার সরকারি সিদ্ধান্তকে প্রত্যাখ্যান করেছে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক পিএলসি-এর অংশীজনরা। তাদের দাবি, এ পদক্ষেপ গ্রাহক ও বিনিয়োগকারীদের স্বার্থের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর হতে পারে।

আজ সোমবার (০৮ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ব্যাংকের শেয়ারহোল্ডার, সাবেক পরিচালক ও কর্মকর্তারা এই বিরোধিতা জানান।

অংশীজনদের বক্তব্য

সংবাদ সম্মেলনে ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মেজর (অব.) এম রেজাউল হক অভিযোগ করে বলেন, “এক সময় বন্দুকের নলের মুখে আমাদের ব্যাংক দখল করা হয়েছিল। এখন আবার এটিকে সরকারি খাতে নেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। আমাদের কোনো অপরাধ নেই। তাই কোনো অবস্থাতেই এই ব্যাংক হস্তান্তর করা যাবে না। আমরা ইতোমধ্যে আদালতে রিট করেছি, সেটির নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত এ ধরনের সিদ্ধান্ত কার্যকর হতে পারে না।”

প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান সুলতান মাহমুদ চৌধুরী বলেন, “ব্যবসায়ীরা যদি একটি ব্যাংক চালাতে না পারে, তাহলে অন্যরা কীভাবে তা পরিচালনা করবে? সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক আমাদের সম্পদ, সরকার কি ইচ্ছেমতো কারও বাড়ি বা সম্পত্তি নিয়ে নিতে পারে?”


সাবেক পরিচালক আসাদুজ্জামান বলেন, “আমরা বিদেশ থেকে অর্থ এনে এই ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেছি। অনেক কষ্টে এর ভিত্তি গড়ে তুলেছি। এখন কেন এটিকে জাতীয়করণ করা হবে?”

অভিযোগ ও প্রেক্ষাপট

বক্তারা আরও বলেন, দীর্ঘদিন ধরে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক স্থিতিশীলভাবে পরিচালিত হলেও ২০১৭ সালের পর ব্যবস্থাপনা পরিবর্তন ও নানা সিদ্ধান্তের কারণে আর্থিক সংকট তৈরি হয়। ২০০০ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির পর থেকে ব্যাংকটি নিয়মিত ডিভিডেন্ড প্রদান করে আসছে বলেও তারা উল্লেখ করেন।

তাদের অভিযোগ, ৫ আগস্টের পর বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক গঠিত নতুন পরিচালনা পর্ষদে মূল প্রতিষ্ঠাতা ও শেয়ারহোল্ডারদের প্রতিনিধিত্ব নেই। এর ফলে গ্রাহকদের আস্থা নষ্ট হয়েছে এবং আমানত উত্তোলনের প্রবণতা বেড়েছে।

অংশীজনদের মতে, যদি প্রতিষ্ঠাতা ও শেয়ারহোল্ডারদের নেতৃত্বে ব্যাংক পরিচালনা করা হয়, তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের সহযোগিতায় খুব দ্রুত পুনরুদ্ধার সম্ভব। একইসঙ্গে তারা ক্ষুদ্রঋণ, এসএমই এবং ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের অর্থায়নে অগ্রাধিকার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।

সরকারি উদ্যোগ

উল্লেখ্য, সরকার সম্প্রতি দুর্বল পাঁচটি ইসলামী ব্যাংক একীভূত করার পরিকল্পনা অনুমোদন করেছে। এগুলো হলো—ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক এবং এক্সিম ব্যাংক। এর মধ্যে প্রথম চারটি ব্যাংক একীভূতকরণ প্রক্রিয়ায় রাজি হলেও এক্সিম ব্যাংক অতিরিক্ত সময় চেয়েছে।