
বাংলাদেশের বেসরকারি খাতের শীর্ষ প্রতিষ্ঠান প্রাইম ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে আসছে বড় ধাক্কা। প্রায় তিন দশক ধরে প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ও ইস্ট কোস্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান আজম জে চৌধুরীর পরিবারের নিয়ন্ত্রণে থাকা বোর্ডে এবার আসছে বড় রদবদল। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রস্তাবিত ব্যাংক কোম্পানি আইন সংশোধনের খসড়া অনুযায়ী, একই পরিবার থেকে সর্বোচ্চ দুজন বোর্ড সদস্য থাকতে পারবেন এবং টানা ছয় বছরের বেশি দায়িত্বে থাকা পরিচালকদের বাধ্যতামূলক অবসর নিতে হবে।
এছাড়া নতুন আইনে বোর্ডের ৫০ শতাংশ সদস্য হবেন স্বতন্ত্র পরিচালক, যাদের মনোনয়ন আসবে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদিত প্যানেল থেকে। ফলে ব্যাংকগুলো আর নিজের পছন্দমতো কেউকে বোর্ডে নিয়োগ দিতে পারবে না।
এই আইনের ফলে আজম জে চৌধুরী, তার ছেলে তানজিল চৌধুরী ও তানভীর চৌধুরীর মধ্যে অন্তত একজনকে সরে দাঁড়াতে হবে। একই সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদে দায়িত্ব পালনকারী অন্য পরিচালকদেরও বিদায় নিতে হবে।
প্রাইম ব্যাংকের যাত্রা শুরু হয় ১৯৯৫ সালে। প্রতিষ্ঠাতা আজম জে চৌধুরী একাধিকবার চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এবং ২০২০ সালে পদ ছাড়লেও এখনও নীতিনির্ধারণে তার প্রভাব রয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, দেশের ব্যাংকিং খাতে গুটিকয়েক উদ্যোক্তা পরিবারের হাতে নীতিনির্ধারণী ক্ষমতা থাকায় বোর্ডে ভারসাম্যহীনতা তৈরি হয় এবং সাধারণ আমানতকারীদের স্বার্থ উপেক্ষিত হয়।
বিশ্বব্যাংকের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন এই উদ্যোগকে ইতিবাচক আখ্যা দিয়ে বলেন, “এটি সব ব্যাংকের ক্ষেত্রে সমভাবে প্রয়োগ করতে হবে, কাউকে ছাড় দিলে এর কার্যকারিতা থাকবে না।”
প্রাইম ব্যাংকের চেয়ারম্যান তানজিল চৌধুরী জানান, “বাংলাদেশ ব্যাংকের আইন আমরা অবশ্যই মেনে চলব। আমাদের বোর্ড স্বচ্ছ ও অংশগ্রহণমূলক এবং বিশেষ করে স্বতন্ত্র পরিচালকদের মতামত আমরা গুরুত্ব দিই।”
নতুন আইন কার্যকর হলে প্রাইম ব্যাংকের দীর্ঘদিনের পারিবারিক নিয়ন্ত্রণের অবসান ঘটবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি ব্যাংক খাতে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা এবং আমানতকারীর স্বার্থ রক্ষায় বড় পদক্ষেপ হবে।
আপনি চাইলে আমি এই খবরটি টিভি নিউজ স্ক্রিপ্ট আকারেও সাজিয়ে দিতে পারি, যাতে সরাসরি পড়া যায় এবং দর্শকদের কাছে আরও প্রভাবশালী হয়।