
দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) আজ বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই)ও ইতিবাচক ধারায় দিন শেষ করেছে। প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৫.৫৮ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ১৩২.৪৭ পয়েন্টে। সূচকের পাশাপাশি লেনদেনেও দেখা গেছে উল্ল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি, যা বাজারে আস্থার ইঙ্গিত দেয়। তবে সূচকের এমন উত্থান সত্ত্বেও একাধিক খাত দুর্বল পারফরম্যান্স প্রদর্শন করেছে, যার মধ্যে সাধারণ বীমা, জীবন বীমা এবং তথ্যপ্রযুক্তি খাত ছিল সবচেয়ে বিপর্যস্ত।
সাধারণ বীমায় ভয়াবহ পতনসাধারণ বীমা খাতে থাকা ৪২টি কোম্পানির মধ্যে ৩৪টির (৮০.৯৫%) শেয়ারদর কমেছে। শুধুমাত্র ৬টি কোম্পানি (১৪.২৯%) দরবৃদ্ধি ধরে রাখতে পেরেছে, এবং ২টি কোম্পানির দর অপরিবর্তিত ছিল। সাম্প্রতিক সময়ে এই খাতটিতে অতিমূল্যায়নের শঙ্কা, স্বচ্ছ তথ্যের ঘাটতি এবং মৌলভিত্তির জোরালো ভিত্তি না থাকায় বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ হ্রাস পেয়েছে বলে বিশ্লেষকদের অভিমত।
জীবন বীমায়ও বড় ধাক্কাবিমা খাতের আরেকটি অংশ জীবন বীমা খাতেও একই চিত্র। ১৪টি কোম্পানির মধ্যে ১১টির (৭৩.৩৩%) শেয়ারদর কমেছে। মাত্র ৩টি কোম্পানি (২০%) ইতিবাচক পারফরম্যান্স দেখাতে পেরেছে। এই খাতে দীর্ঘদিন ধরেই কার্যকর পরিচালনা ও স্বচ্ছতা ঘাটতির অভিযোগ রয়েছে, যা বিনিয়োগকারীদের আস্থা ক্ষুন্ন করেছে।
তথ্যপ্রযুক্তি খাতেও হতাশাআশাবাদী খাতগুলোর একটি হিসেবে বিবেচিত তথ্যপ্রযুক্তি (আইটি) খাতেও ছিল বিক্রির চাপ। ১১টি কোম্পানির মধ্যে ৭টির (৬৩.৬৪%) দর কমেছে, ২টির বেড়েছে এবং ২টির দর অপরিবর্তিত ছিল। প্রযুক্তিখাতে কিছু শেয়ার অল্পসময়ে অতিমূল্যায়িত হয়ে পড়েছিল, যা সংশোধনের পর্যায়ে রয়েছে বলে বাজার বিশ্লেষকদের অভিমত।
অন্যান্য খাতে দুর্বল চিত্রএছাড়াও আজকের লেনদেনে ব্যাংক, ফার্মা ও রসায়ন এবং বস্ত্র খাতের বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারদর কমেছে, যদিও এগুলোর ওপর পতনের চাপ তুলনামূলকভাবে কিছুটা নিয়ন্ত্রিত ছিল।
এদিন বাজারের সামগ্রিক চিত্র বলছে, সূচক ও লেনদেন বাড়লেও সেটি মূলত নির্দিষ্ট কিছু শেয়ার ও খাতের প্রভাবে ঘটেছে। বেশিরভাগ খাতেই ছিল শেয়ার বিক্রির চাপ, যা মুনাফা তুলে নেওয়ার একটি প্রক্রিয়া বলেই বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
বাজার বিশ্লেষকদের মতে, বিনিয়োগকারীদের এখন অতিমূল্যায়িত বা স্বচ্ছতাহীন কোম্পানির শেয়ার থেকে ধীরে ধীরে সরে আসার প্রবণতা বাড়ছে। এতে করে বাজারে একটি প্রাকৃতিক সংশোধন ঘটছে, যা দীর্ঘমেয়াদে ইতিবাচক প্রবণতার দিক হিসেবেই বিবেচিত।