
যুক্তরাষ্ট্রের টিকাবিষয়ক অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপদেষ্টা প্যানেল ‘অ্যাডভাইজরি কমিটি অন ইমিউনাইজেশন প্র্যাকটিসেস’ (ACIP)-এর সব সদস্যকে বরখাস্ত করেছেন দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী রবার্ট এফ কেনেডি জুনিয়র। সোমবার (স্থানীয় সময়) প্রকাশিত এক মতামত কলাম ও সরকারি বিবৃতির মাধ্যমে এই নাটকীয় পদক্ষেপের কথা জানানো হয়। কেনেডির অভিযোগ, কমিটির সদস্যদের মধ্যে স্বার্থের দ্বন্দ্ব রয়েছে এবং ওষুধ প্রস্তুতকারী কোম্পানিগুলোর সঙ্গে আর্থিক সম্পর্ক গড়ে তুলে তারা নিরপেক্ষতা হারিয়েছেন।
দীর্ঘদিন ধরেই টিকার কার্যকারিতা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে আসা কেনেডি এই সিদ্ধান্তকে ‘জনসাধারণের আস্থা পুনরুদ্ধারে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ’ হিসেবে আখ্যা দেন। তাঁর ভাষায়, ACIP এখন কেবল টিকা অনুমোদনের জন্য তৈরি একটি ‘সিলমারা সংস্থায়’ পরিণত হয়েছে, যেখানে স্বার্থের দ্বন্দ্ব উপেক্ষা করা হচ্ছে।
বহিষ্কৃত ১৭ জন সদস্যই সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন আমলে নিয়োগপ্রাপ্ত ছিলেন। কেনেডি জানান, তাদের জায়গায় নতুন, নিরপেক্ষ এবং স্বচ্ছ সদস্য নিয়োগ দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। তাঁর মতে, টিকাবিষয়ক যেকোনো এজেন্ডা নয়, বরং জনগণের আস্থা এবং স্বার্থকেই সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
তবে কেনেডির এই পদক্ষেপ নিয়ে সমালোচনাও উঠেছে। শিশু চিকিৎসক ও ভাইরাস–বিশেষজ্ঞ পল অফিট, যিনি ১৯৯৮–২০০৩ সাল পর্যন্ত ACIP-এর সদস্য ছিলেন, একে ‘অপ্রয়োজনীয় ও ভিত্তিহীন’ সিদ্ধান্ত হিসেবে অভিহিত করেন। তাঁর বক্তব্য, “যাঁরা টিকার পক্ষে সুপারিশ করেন, কেনেডি তাঁদের সবাইকে ওষুধ কোম্পানির পক্ষপাতদুষ্ট মনে করেন, যা বাস্তবতার সঙ্গে মেলে না।”
তিনি আরও বলেন, “কেনেডি এমন এক সমস্যার সমাধান করতে যাচ্ছেন, যার বাস্তবে কোনো অস্তিত্বই নেই।”
ACIP-এর পরবর্তী বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ২৫–২৭ জুন, যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র (CDC)-এর আটলান্টা সদর দপ্তরে। ওই বৈঠকে অ্যানথ্রাক্স, কোভিড-১৯, প্যাপিলোমাভাইরাস, ইনফ্লুয়েঞ্জা, লাইম রোগসহ আরও কয়েকটি টিকা নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে। তবে নতুন সদস্য নিয়োগের আগেই বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হবে কি না, তা নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা।