ঢাকা   বৃহস্পতিবার ২৬ জুন ২০২৫, ১১ আষাঢ় ১৪৩২

এনসিসি না থাকলে প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদকাল প্রস্তাব মানবে বিএনপি

রাজনীতি

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ২১:১৩, ২৫ জুন ২০২৫

এনসিসি না থাকলে প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদকাল প্রস্তাব মানবে বিএনপি

জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল (এনসিসি) বা এমন কোনো পর্ষদের চিন্তা বাদ দিলে এক ব্যক্তি জীবনে সর্বোচ্চ ১০ বছর প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করতে পারবেন বলে যে প্রস্তাব জাতীয় ঐকমত্য কমিশন তুলেছে, সেটা মেনে নেবে বিএনপি। আজ বুধবার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় দফা বৈঠকের ষষ্ঠ দিনের আলোচনা শেষে দলের এই অবস্থান তুলে ধরেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।

রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আজকের আলোচনা শেষে সালাহউদ্দিন আহমদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘এনসিসির মতো আর কোনো বডি নির্বাহী ক্ষমতার কর্মকাণ্ড বাধাগ্রস্ত করে বা ইন্টারফেয়ার করে বা এমন ব্যবস্থা থাকলে আমরা সে প্রস্তাবটা গ্রহণ করব না। এনসিসির মতো ব্যবস্থা থাকলে আমরা আগের অবস্থায় থাকব (কারও প্রধানমন্ত্রিত্বের মেয়াদ ১০ বছর মানবেন না)।’

সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী না করে শুধু নির্বাহী বিভাগের ক্ষমতা সব জায়গায় কমিয়ে একটি সুষ্ঠু সরকার বা রাষ্ট্র পরিচালনা কখনো সম্ভব হয় না বলে মন্তব্য করেন বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, ‘ফ্রিডম অব প্রেস (সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা) যদি আমরা নিশ্চিত করতে পারি, দুদকসহ অন্যান্য রিলেটেড প্রতিষ্ঠানগুলো যদি আমরা শক্তিশালী করতে পারি, এখানে গণতন্ত্র রক্ষাকবচ হিসেবে কাজ করবে তারা। এসব প্রতিষ্ঠান ছাড়া গণতন্ত্র কখনো শক্তিশালী হবে না।’

রাষ্ট্রের সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোর জবাবদিহি ও স্বচ্ছতা বজায় রাখার জন্য আইনে বিধান রাখার কথা বলেন বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, ‘সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানসহ অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোতে জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে, ট্রান্সপারেন্সি (স্বচ্ছতা) নিশ্চিত করতে হবে। যেসব সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান এটার সঙ্গে সম্পর্কিত, সেগুলোর আইন না থাকলে আইন করা। আর যেগুলোর আইন আছে, সে আইন সংস্কার করা। তাহলে রাষ্ট্রে ক্ষমতার মধ্যে চেক অ্যান্ড ব্যালান্স (ক্ষমতার ভারসাম্য) তৈরি হবে।’

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীন, স্বাধীন নির্বাচন কমিশন যদি স্বাধীনভাবে নির্বাচন পরিচালনা করে এবং জুডিশিয়ারির (বিচার বিভাগ) স্বাধীনতা পুরোপুরি নিশ্চিত করা যায় এবং দুদকসহ অন্যান্য যেসব প্রতিষ্ঠান সম্পর্কিত, সেগুলোকে যদি শক্তিশালী করা যায় তাহলে তা গণতন্ত্রের রক্ষাকবচ হিসেবে কাজ করবে। এসব প্রতিষ্ঠান ছাড়া, গণতন্ত্রের রক্ষাকবচ ছাড়া, গণতন্ত্র কখনো শক্তিশালী হবে না।

বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরামের এই সদস্য বলেন, যে দেশে ফ্রিডম অব প্রেস বেশি, সে দেশে গণতন্ত্র শক্তিশালী হয়। এগুলো না করে শুধু নির্বাহী বিভাগের ক্ষমতাকে সব জায়গায় কমিয়ে একটি সুষ্ঠু সরকার বা রাষ্ট্র পরিচালনা কখনো সম্ভব হয় না।

আজকের আলোচনায় বিএনপি ছাড়াও জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), ইসলামী আন্দোলন, গণসংহতি আন্দোলনসহ ৩০টি রাজনৈতিক দল অংশ নিয়েছে। বৈঠকে সংবিধান ও রাষ্ট্রের মূলনীতি, এনসিসি, দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ, রাষ্ট্রপতি নির্বাচন পদ্ধতি, নারী প্রতিনিধিত্ব নিয়ে আলোচনা হলেও কোনো বিষয়ে ঐকমত্য হয়নি।

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারের সঞ্চালনায় আজকের আলোচনায় আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য বদিউল আলম মজুমদার, বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ইফতেখারুজ্জামান ও মো. আইয়ুব মিয়া।