
১৩ বছর আগে উত্তর ও দক্ষিণ—এ দুটি সিটি করপোরেশনে ভাগ হয়েছিল ঢাকা। এখন সেই বিভাজন তুলে দিয়ে সমগ্র ঢাকা মহানগরীর জন্য একক সিটি করপোরেশন গঠনের সুপারিশ করেছে স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশন। কাজের পরিধি, কাঠামো ও নির্বাচনের ধরনেও বড় পরিবর্তনের প্রস্তাব এসেছে চূড়ান্ত প্রতিবেদনে, যা গত রোববার প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জমা দেওয়া হয়।
সংস্কার কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী, বর্তমানে উত্তর ও দক্ষিণ সিটির আওতায় থাকা ২০টি অঞ্চল নিয়ে পৃথক 'সিটি কাউন্সিল' গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রতিটি সিটি কাউন্সিল নিজ নিজ এলাকায় সরাসরি নাগরিক সেবা দেবে। এর বাইরে বৃহত্তর ঢাকা সিটি করপোরেশন শুধু সমন্বয়ের দায়িত্ব পালন করবে। ওয়ার্ড কাউন্সিলররা সরাসরি ভোটে নির্বাচিত হবেন, আর কাউন্সিলের মেয়র ও মহানগর মেয়র নির্বাচিত হবেন কাউন্সিলরদের ভোটে।
১৮৬৪ সালে ঢাকাকে প্রথম পৌরসভা করা হয়। এরপর ১৯৯০ সালে ঢাকা সিটি করপোরেশন নামে পরিচিত হয় এবং ২০১১ সালে তা বিভক্ত করে ২০১২ সালে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের যাত্রা শুরু হয়। এখন লন্ডন মডেলের অনুকরণে দুই স্তরের 'মহানগর সরকার' গঠনের প্রস্তাব দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
কমিশনের মতে, ২০টি সিটি কাউন্সিল গঠন করা যেতে পারে, যেমন—মিরপুর, বনানী–বারিধারা–গুলশান, উত্তরা, ধানমন্ডি–রায়েরবাজার, রামপুরা–মালিবাগ–বাড্ডা ইত্যাদি। প্রতিটি কাউন্সিল থাকবে ৯ থেকে ১৫টি ওয়ার্ড নিয়ে। জনগণের সরাসরি ভোটে কাউন্সিলর নির্বাচিত হবেন এবং তাদের মধ্য থেকেই মেয়র নির্বাচিত হবে।
তবে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করছেন, সরাসরি ভোটে মেয়র নির্বাচন বাতিল হলে গণতান্ত্রিক চর্চা বাধাগ্রস্ত হতে পারে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সৈয়দা লাসনা কবীর বলেন, নাগরিক সেবার মান উন্নয়নে স্বাধীন সিদ্ধান্ত গ্রহণের সুযোগ থাকা জরুরি, কিন্তু জনগণের সরাসরি ভোটাধিকার খর্ব করা উচিত নয়।