বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)-এ নজিরবিহীন এক পদক্ষেপে হঠাৎ করে বরখাস্ত করা হয়েছে ২২ জন কর্মকর্তাকে। মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) কমিশনের বিশেষ সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় বলে একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্র নিশ্চিত করেছে।
বরখাস্ত হওয়া কর্মকর্তাদের মধ্যে ১৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে। এদের কেউ কেউ জামিনে মুক্ত হয়ে পুনরায় কাজে ফিরেছিলেন। তবে হঠাৎ এমন সিদ্ধান্তে দপ্তরে চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
এক বরখাস্ত হওয়া কর্মকর্তা জানান, “কমিশন সভার নির্ধারিত এজেন্ডায় বিষয়টি ছিল না। হঠাৎ করেই ২২ জনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।”
আরেক কর্মকর্তা বলেন, “কমিশন সভায় সিদ্ধান্ত হলেও এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো প্রশাসনিক নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। সম্ভবত আগামীকাল নির্দেশনা জারি হতে পারে।”
এর আগে ৪ মার্চ নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমানকে ‘বাধ্যতামূলক অবসরে’ পাঠানো হয়। কমিশনের দাবি, দায়িত্ব পালনের সময় তাঁর বিরুদ্ধে অনিয়মের প্রমাণ মিলেছে। এই ঘটনার পর থেকেই বিএসইসির অভ্যন্তরে অসন্তোষের আগুন জ্বলতে শুরু করে।
সূত্র মতে, কর্মকর্তারা চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের কাছে ক্ষোভ প্রকাশ করতে গেলে উত্তেজনা বাড়ে। শেষপর্যন্ত পরিস্থিতি এতটাই তীব্র হয়ে ওঠে যে, সেনাবাহিনীর সহায়তায় কমিশনের সদস্যরা কার্যালয় ত্যাগ করতে বাধ্য হন।
সাইফুর রহমানসহ মোট ১৬ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন জামিনে মুক্তি পেয়ে পুনরায় দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তবে শেষ পর্যন্ত তাঁদের অনেককেই বরখাস্ত হতে হলো।
বরখাস্ত হওয়া জামিনপ্রাপ্ত ১৪ কর্মকর্তা হলেন:
সাবেক নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমান (৫৮), নির্বাহী পরিচালক মাহবুবুল আলম (৫৭), নির্বাহী পরিচালক রেজাউল করিম (৫৪), পরিচালক আবু রায়হান মো. মোহতাছিন বিল্লা (৫১), অতিরিক্ত পরিচালক নজরুল ইসলাম (৫০), যুগ্ম পরিচালক রাশেদুল ইসলাম (৪৮), উপপরিচালক বনী ইয়ামিন (৪৫), আল ইসলাম (৩৮), শহিদুল ইসলাম (৪২), তৌহিদুল ইসলাম (৩২), সহকারী পরিচালক জনি হোসেন (৩১), রায়হান কবীর (৩০), সাজ্জাদ হোসেন (৩০), আবদুল বাতেন (৩২), লাইব্রেরিয়ান সেলিম রেজা বাপ্পী (৩১) ও ব্যক্তিগত কর্মকর্তা আবু ইউসুফ (২৯)।
বিশ্লেষকদের মতে, বিএসইসির সাম্প্রতিক এই রদবদল প্রতিষ্ঠানটির অভ্যন্তরীণ সংকটকে আরও গভীর করতে পারে।
