
শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান ইউনিয়ন ব্যাংকের হাটখোলা শাখায় চাঞ্চল্যকর এক আর্থিক কেলেঙ্কারি ফাঁস হয়েছে। শাখা ব্যবস্থাপক জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, তিনি গ্রাহকের অজ্ঞাতসারে অ্যাকাউন্ট থেকে ৮ কোটি ৬ লাখ ৮৮ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছেন। ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ তদন্তে এ গুরুতর অনিয়মের প্রমাণ পাওয়া গেছে।
তদন্তে উঠে এসেছে, গ্রাহকের সম্মতি ছাড়াই সঞ্চয় ও স্থায়ী আমানতের বিপরীতে ঋণ তৈরি, অ্যাকাউন্ট নকল, এবং বিভিন্ন অ্যাকাউন্টের মধ্যে অর্থ স্থানান্তর করে অর্থ হাতিয়ে নিতেন জাকির হোসেন। একটি গ্রাহক গত জানুয়ারি মাসে অর্থ উত্তোলন করতে এসে প্রথম অনিয়মটি ধরিয়ে দেন, এবং এর পরই শাখা ব্যবস্থাপককে সাময়িক বরখাস্ত করে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।
তবে ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকরা এখনো তাদের টাকা ফেরত পাননি। অন্তত ২০ জন গ্রাহক ব্যাংকের শাখা এবং প্রধান কার্যালয়ে বারবার যোগাযোগ করেও হতাশ হয়েছেন। ব্যাংক আশ্বাস দিলেও এখনো অর্থ পরিশোধের কোনো সুনির্দিষ্ট উদ্যোগ নেয়নি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৬ থেকে ২০২৫ পর্যন্ত দুই মেয়াদে দায়িত্ব পালনকালে জাকির নানা অনিয়মে যুক্ত ছিলেন। তিনি ভুয়া বিনিয়োগ ঋণ তৈরি, মুদারাবা টার্ম ডিপোজিট (MTDR) ব্লক নকল, ঋণ সৃষ্টিসহ নানা পদ্ধতি ব্যবহার করেছেন।
এ ধরনের একটি ঘটনার শিকার মিজানুর রহমান বলেন, তার ৬০ লাখ টাকার MTDR এর বিপরীতে একটি ঋণ তৈরি করে টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। অথচ তিনি নিজে কোনো ঋণ নেননি। শাখা ব্যবস্থাপকের কাছে MTDR এর আসল কপি জমা দেওয়ার পরই তার টাকা লোপাট হয়।
এদিকে, রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর মূলধন সংকটে থাকা ইউনিয়ন ব্যাংক শিগগিরই অন্য চারটি ইসলামিক ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। এর মধ্যে ব্যাংকটির আমানত ফেরতের সক্ষমতা এবং গ্রাহকের অর্থ নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে দুশ্চিন্তা তৈরি হয়েছে।