
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নবনির্মিত ছাত্র হলের ভবন ধসে আহত ১২জন শ্রমিক। দশতলা বিশিষ্ট অত্যাধুনিক এ নির্মাণ কাঠামোর ভূপতিত হওয়ার কারণ জানতে করা হয়েছে ৬ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন। বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) বৃষ্টির মধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০ তলা ছাত্রহল ভবনটির ২য় তলার ছাদের ঢালাইয়ের কাজ শুরু হয়। ছাদের পূর্ব-দক্ষিণ কোণে ঢালাইয়ের কাজ শুরু হলে বিকেল ৪টা নাগাদ নড়বড়ে হয়ে পড়ে কাঠামো। এরপরই পুরো কাঠামো ধসে পড়ে এবং নির্মাণ কাজে থাকা শ্রমিকরাও ধ্বংসস্তুপের নিচে পড়ে আহত হন।
পুরো বিষয়টিকে খতিয়ে দেখতে করা হয়েছে তদন্ত কমিটি। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মাহবুবুর রহমানকে আহবায়ক এবং নির্মাণকর্মের দায়িত্বরত উপ-প্রধান প্রকৌশলী মাহবুবুল ইসলামকে সদস্য-সচিব করে ৬ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করে দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কমিটিকে আগামী ৫ দিনের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট জমার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
কমিটির বাকি সদস্যরা হলেন ড. মো. বখতিয়ার উদ্দিন (ডিন, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ), ড. মো. আশরাফুল আলম (পরিচালক, ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তর), মো. অলি উল্লাহ (সহকারী অধ্যাপক, লোক প্রশাসন ও সরকার পরিচালনা বিদ্যা), সৈয়দ মোফাছিরুল ইসলাম (প্রকল্প পরিচালক, ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প)
অত্যাধুনিক দশতলা বিশিষ্ট একটি নির্মানাধীন ভবনের এমনভাবে ধসে যাওয়ার ব্যাপারে ভবনটির দায়িত্বরত প্রকৌশলী মো. রাহাত হাসান দিদার বলেন, সবকিছুই পরিকল্পনা অনুযায়ী করা হয়েছে। বৃষ্টির কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে।’
শিক্ষার্থীরা জানান, ছাদ ঢালাইয়ে নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী, ছাদের সাটারিংয়ে দুর্বল খুঁটি, লোহার পাইপের পরিবর্তে বাঁশ, পাটের দড়ি ব্যবহার, ঠিকাদারি প্রশাসনের গাফিলতি এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের যথাযথ তদারকির অভাবেই এই ধরণের দুর্ঘটনা ঘটেছে।
এ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘ঘটনা তদন্তে ছয় সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। কী কারণে ধ্বসে পড়লো, কারো গাফিলতি আছে কি না, তা তদন্তে দেখা হবে। তারপর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
তবে প্রকল্প পরিচালক সৈয়দ মোফাছিরুল ইসলামের সাথে ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
সবশেষ তথ্যমতে, ভবনধসে আহত শ্রমিকদের সংখ্যা সর্বমোট ১২ জন। আহতদের সেখান থেকে ত্রিশাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখান থেকে আহত ৯ জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয় এবং ৩ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।