
ঢাকা মাইলস্টোন কলেজে বিমান দুর্ঘটনায় নিহত ৮ম শ্রেণির শিক্ষার্থী মাহিয়া তাসনিম মায়ার জানাযা ও দাফন সম্পন্ন হয়েছে। শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টায় নানার বাড়ি মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার জয়পুর গ্রামের কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
ঢাকা মাইলস্টোন কলেজে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় ৮ম শ্রেণির শিক্ষার্থী মাহিয়া তাসনিম মায়া দগ্ধ হয়ে জাতীয় বার্ণ ইউনিটে চিকিৎসাধীন ছিলেন। গত ৪ দিন সেখানে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় বৃহস্পতিবার বিকেলে তার মৃত্যু হয়। অথচ গতকাল সকালে যখন চিকিৎসকরা বলে ছিলেন তার দেহের ৫০ শতাংশ পুড়ে গেছে তখন পরিবারটির মনে আশা দেখা দিয়েছিল। আর যখন বিকেলে তাকে মৃত ঘোষণা করলো চিকিৎসকরা তখন সবই শেষ হয়ে গেলো। মায়ার দাদার বাড়ি চুয়াডাঙ্গা জেলায় হলেও মায়ার বাবা গত পাঁচ বছর আগে দুবাই থাকাকালীন সময় স্ট্রোকজনীত কারণে মারা যান। সেজন্য অসহায় মায়ের চাওয়াতেই মায়ার মরদেহ ঢাকা থেকে নিয়ে মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার জয়পুর গ্রামে নানা বাড়িতে নেয়া হয়। মাহিয়া তাসনিম মায়ার মরদেহ গ্রামের বাড়িতে পৌছালে তাকে দেখতে ভিড় করেন স্বজন সহ এলাকার মানুষ। এসময় নানার বাড়ির আকাশ বাতাস কান্নায় ভারি হয়ে ওঠে।
উত্তরায় মায়ের সাথে নিজেদের বাসায় থেকে মাইলস্টোন কলেজে লেখাপড়া করতো মাহিয়া তাসনিম মায়া।
মাহিয়া তাসনিম মায়ার মা আফরোজা আক্তার বিউটি জানান, অন্যান্য দিনের মত ২০ জুলাই মাহিয়া তাসনিম মায়া স্কুলে গেছিল এবং শ্রেণি ক্লাস শেষ করে কলেজের তৃতীয় তলায় কোচিং ক্লাসের জন্য অপেক্ষা করছিল। এসময় বিমানটি ভবনে পড়ে বিদ্ধস্থ হলে অন্যদের মত মায়াও অগ্নিদগ্ধ হয়। উদ্ধার কর্মীরা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে ঢাকা মেডিকেলে এবং পরবর্তীতে বার্ণ ইউনিয়টে নেয় চিকিৎসকরা। ঐ সময় চিকিৎসকরা জানিয়েছিল মায়ার ৫০ ভাগ পুড়ে গেছে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার বিকেলে সে মারা যায়। এতটাই শ্বাস নালি পুড়ে গেছিল যে সে কোন কথা বলতে পারেনি। আমার শেষ সম্বল আমার মেয়ে সেও পৃথিবী ছেড়ে চলে গেলো। পাঁচ বছর আগে দুবাই থাকা অবস্থায় ওর বাবা স্ট্রোক করে মৃত্যু বরণ করে। তারপর থেকে ওকে নিয়েই আমি বেচে ছিলাম। আল্লাহ্ পাক তাও নিয়ে নিলো।
মাহিয়ার নানা নজরুল ইসলাম জানিয়েছেন, বেশ কয়েক বছর আগে আমার জামাতা মোহাম্মদ আলী দুবাইয়ে কর্মরত থাকা অবস্থায় মারা যায়। নাতনি মাহিয়াকে নিয়ে তার মা ঢাকা উত্তরায় নিজেদের বাসায় থাকতো। সেও চলে গেল আমার মেয়েটা এত কষ্ট সইবে কি করে।