
কার্বোহাইড্রেট আমাদের শরীরের প্রধান জ্বালানি উৎস, যা কোষ এবং অঙ্গপ্রত্যঙ্গ—বিশেষ করে মস্তিষ্ক—সচল রাখতে সাহায্য করে। কিন্তু অনেকের মনেই প্রশ্ন থাকে, যদি খাদ্যতালিকা থেকে পুরোপুরি শর্করা বাদ দেওয়া হয়, তবে শরীরে কী ধরনের পরিবর্তন ঘটতে পারে?
পুষ্টিবিদরা জানিয়েছেন, শরীরে কার্বোহাইড্রেট ভেঙে গ্লুকোজে পরিণত হয়, যা থেকে তৈরি হয় অ্যাডিনোসিন ট্রাইফসফেট (এটিপি)। এটিপি-ই আমাদের বিপাকক্রিয়া চালিত করে এবং শরীরে শক্তি সরবরাহ করে। যদিও চর্বি থেকে কিটোসিসের মাধ্যমে এটিপি উৎপন্ন করা যায়, তবু মস্তিষ্ক স্বাভাবিকভাবে গ্লুকোজকেই প্রধান জ্বালানি হিসেবে পছন্দ করে।
কার্বোহাইড্রেট কম বা বাদ দিলে শরীরে প্রোটিন ভাঙা শুরু হয়, যা পেশি ক্ষয়ের কারণ হতে পারে। কিটোসিস কিছুটা পেশি ক্ষয় কমালেও, সম্পূর্ণরূপে তা রোধ করতে পারে না। তা ছাড়া, খাদ্য আঁশের অভাব অন্ত্রের স্বাস্থ্য এবং পরিপাকতন্ত্রের কার্যকারিতায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। আঁশ না থাকলে কোষ্ঠকাঠিন্য, হার্টের স্বাস্থ্যহানি এবং বিপাকক্রিয়ার ব্যাঘাত ঘটতে পারে।
পুষ্টিবিদদের মতে, পুরোপুরি কার্বোহাইড্রেট বাদ না দিয়ে এর মানের দিকে মনোযোগ দেওয়া উত্তম। কম প্রক্রিয়াজাত ও প্রাকৃতিক কার্বোহাইড্রেট, সঙ্গে প্রোটিন, স্বাস্থ্যকর চর্বি এবং পর্যাপ্ত ফলমূল-শাকসবজি খাদ্যতালিকায় রাখা উচিত।
অবশ্যই কিছু বিশেষ পরিস্থিতিতে কম কার্বোহাইড্রেট বা কিটো ডায়েট, যেমন মৃগীরোগ বা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী হতে পারে। তবে যেকোনো ধরনের খাদ্য পরিবর্তনে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়াই সবচেয়ে নিরাপদ এবং কার্যকর উপায়।
সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস