facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ২৭ জুলাই শনিবার, ২০২৪

Walton

রাষ্ট্রায়ত্ত ৮ ব্যাংকে ৭৯৬ কোটি টাকার আপত্তি


২৩ নভেম্বর ২০১৬ বুধবার, ০৪:৩২  পিএম

শেয়ার বিজনেস24.কম


রাষ্ট্রায়ত্ত ৮ ব্যাংকে ৭৯৬ কোটি টাকার আপত্তি

সরকারের খাস খতিয়ানভুক্ত ইজারা দেয়া জমি জামানত হিসেবে গ্রহণ করে ঋণ বিতরণ করেছে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন জনতা ব্যাংক। আর এ ঋণ নিয়ে গ্রাহক ওয়ান ডেনিম মিলস তাদের প্রকল্প চালু করতে পারেনি। বাংলাদেশ ব্যাংক ২০১০ সালের জুনে ঋণটিকে ক্ষতিমানের শ্রেণীতে অন্তর্ভুক্ত করেছে। ফলে ঋণের অর্থ উদ্ধার অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। নিরীক্ষা বিভাগের ২০০৯-১০ অর্থবছরের নিরীক্ষা প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। শুধু জনতা ব্যাংকই নয়, বিভিন্ন ব্যাংকের বিপরীতে এমন মোট ৪৫টি নিরীক্ষা আপত্তির কথা জানানো হয়েছে প্রতিবেদনে। এতে জড়িত মোট অর্থের পরিমাণ ৭৯৬ কোটি ৮ লাখ টাকা।

জাতীয় সংসদ ভবনে সরকারি হিসাব-সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে মঙ্গলবার নিরীক্ষা বিভাগ থেকে এ তথ্য উপস্থাপন করা হয়। বৈঠকের কার্যপত্র থেকে জানা যায়, এতে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পায় জনতা ব্যাংকের নিরীক্ষা আপত্তির বিষয়টি। এছাড়া সোনালী, অগ্রণী, রূপালী, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক, আইসিবি, বেসিক ব্যাংক ও বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের ২০০৯-১০ অর্থবছরের নিরীক্ষা প্রতিবেদন নিয়ে আলোচনা হয়। এতে মোট ৪৫টি আপত্তি রয়েছে। এর সঙ্গে জড়িত টাকার পরিমাণ ৭৯৬ কোটি ৮ লাখ টাকা। কমিটি আপত্তিগুলো দ্রুত নিষ্পত্তির সুপারিশ করেছে বলে সংসদ সচিবালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

বৈঠকের কার্যপত্র থেকে জানা যায়, ডেনিম কাপড় উৎপাদনের জন্য গ্রাহকদের ঋণ দেয়ার জন্য জনতা ব্যাংকের নেতৃত্বে সাতটি ব্যাংক জোটবদ্ধ হয়। অনুপাত অনুযায়ী জনতা ব্যাংক ২০০৭ সালে ওয়ান ডেনিমকে ৮ কোটি টাকা ঋণ দিতে চুক্তিবদ্ধ হয়। কিন্তু চুক্তি অনুযায়ী অন্য ছয়টি ব্যাংক থেকে অনুপাত অনুযায়ী টাকা পাওয়ার আগেই জনতা ব্যাংক যন্ত্রপাতি আমদানির জন্য ঋণপত্র খুলতে স্বীকৃতি দেয়। জনতা ব্যাংক আগাম কাজ করায় শেষ পর্যন্ত জোটের অংশীদার প্রিমিয়ার ব্যাংক সম্পূর্ণ ও অন্য দুটি ব্যাংক আংশিক টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানায়। এ কারণে পুরো আমদানি ঋণপত্রের দায় জনতা ব্যাংক পরিশোধ করে।

এদিকে জনতা ব্যাংকের নিরীক্ষা আপত্তি সম্পর্কে অর্থ মন্ত্রণালয় বলছে, গত ১৭ অক্টোবর পর্যন্ত ওয়ান ডেনিমের কাছ থেকে ১১ কোটি ৯৪ লাখ টাকা আদায় করা সম্ভব হয়েছে। এছাড়া খাস জমি জামানত হিসেবে গ্রহণ করার পেছনে জড়িতদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জনতা ব্যাংককে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

বৈঠক শেষে কমিটির সদস্য আবদুস শহীদ সাংবাদিকদের বলেন, চোরও চুরি করার সময় বুদ্ধি খাটায়, যাতে সে ধরা না পড়ে। জনতা ব্যাংকের কর্মকর্তারা সে বুদ্ধির তোয়াক্কাও করেননি। সরকারি খাস খতিয়ানের জমি বন্ধক রেখে ঋণ দেয়া যায় না, এটা কে না জানে। জনতা ব্যাংকের কর্মকর্তারাও নিশ্চয়ই জানেন। জেনে-শুনেই তারা ঋণ বিতরণ করেছেন। কারণ তারা মনে করেন, এ নিয়ে তাদের প্রশ্নের মুখে পড়তে হবে না। কিন্তু সরকারি জমি সরকারের কাছেই বন্ধক রেখে টাকা নিয়ে যাওয়ার ঘটনা আমি আমার জীবনে কখনো শুনিনি।

কমিটির সভাপতি মহীউদ্দীন খান আলমগীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে কমিটির সদস্য একেএম মাঈদুল ইসলাম, আবদুস শহীদ, মোসলেম উদ্দিন, পঞ্চানন বিশ্বাস, রুস্তম আলী ফরাজী, শামসুল হক ও মইন উদ্দীন খান বাদল অংশ নেন।

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন: