১৯ নভেম্বর ২০১৬ শনিবার, ০৮:৪০ পিএম
শেয়ার বিজনেস24.কম
![]() |
প্রতিযোগিতামূলক আন্তর্জাতিক বাজারের গতিশীলতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ প্রায়োগিক বাণিজ্যিক কার্যক্রমে ঘাটতি রয়েছে বাংলাদেশের। বর্তমানে এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ চাইছে সরকারও। এ লক্ষ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন আমদানি-রফতানি প্রধান নিয়ন্ত্রকের দপ্তরকে ডিপার্টমেন্ট অব ট্রেডে রূপান্তরের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
সূত্র অনুযায়ী, আমদানি-রফতানি প্রধান নিয়ন্ত্রকের দপ্তরের বিরাজমান বিভিন্ন সমস্যার কারণে বাণিজ্যিক কার্যক্রমের গতি আরো স্লথ হয়ে পড়ে। পাশাপাশি প্রযুক্তিগত দক্ষতারও ঘাটতি রয়েছে। এর প্রভাবে সংস্থাটির কার্যক্রমে অস্বচ্ছতার পাশাপাশি প্রাতিষ্ঠানিক সুশাসনের অভাবও দেখা দিয়েছে। ফলে স্থবির হয়ে পড়ছে দেশের আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ বাণিজ্যিক কার্যক্রম। আবার সমন্বয়কের ভূমিকার অভাবে ব্যবসায়ীরাও হয়রানির শিকার হচ্ছেন। সামগ্রিক প্রেক্ষাপটেই বিদ্যমান সংস্থাকে নতুন রূপে রূপান্তরের পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। এরই ধারাবাহিকতায় ডিপার্টমেন্ট অব ট্রেডে রূপান্তর হতে যাচ্ছে আমদানি-রফতানি প্রধান নিয়ন্ত্রকের দপ্তর।
এরই মধ্যে নতুন দপ্তর সৃষ্টির সম্ভাব্যতা যাচাই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সম্প্রতি বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে এ-সংক্রান্ত একটি আদেশও জারি হয়। এ আদেশবলে রূপান্তরিত দপ্তর সৃষ্টির সম্ভাব্যতা যাচাই কমিটিও গঠন করে দেয়া হয়। আদেশটিতে যাচাই শেষে কমিটিকে একটি প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। কমিটিকে আদেশ জারির ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে এ কার্যক্রম সম্পন্নের নির্দেশনা দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
কমিটির কার্যপরিধির মধ্যে প্রতিবেশী বিভিন্ন দেশের বাণিজ্য বিভাগ পর্যালোচনা এবং আমদানি-রফতানি প্রধান নিয়ন্ত্রকের দপ্তরে ট্রেড ডিপার্টমেন্টের আদলে একটি রূপান্তরিত দপ্তর সৃষ্টির সম্ভাব্যতা যাচাই করে প্রতিবেদন তৈরিসহ আরো বেশকিছু কর্মকাণ্ড রাখা হয়েছে।
সূত্র অনুযায়ী, ছয় সদস্যবিশিষ্ট কমিটির সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও ডব্লিউটিও সেলের মহাপরিচালক শুভাশীষ বসু। এছাড়া সদস্য হিসেবে রয়েছেন প্রধান আমদানি- রফতানি নিয়ন্ত্রক আফরোজা খান, যুগ্ম সচিব রুহিদাস জদ্দার, উপসচিব বেগম রুখসানা হাসিন ও সিনিয়র সহকারী সচিব মোছাম্মদ নারগিস মুরশিদা। কমিটির সদস্য সচিবের দায়িত্বে রয়েছেন যুগ্ম সচিব মো. রুহুল আমিন।
আমদানি-রফতানি প্রধান নিয়ন্ত্রকের দপ্তরের কার্যক্রম পরিচালিত হয় দি ইম্পোর্টস অ্যান্ড এক্সপোর্টস (কন্ট্রোল) অ্যাক্ট-১৯৫০-এর আওতায়। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে পরিচালিত সংস্থাটির গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে অভ্যন্তরীণ ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধির ক্ষেত্রে আমদানি-রফতানি নিবন্ধন সনদপত্র প্রদান ও নবায়ন, আমদানি নীতি আদেশ বাস্তবায়নে সহায়তা, শিল্প আমদানি নিবন্ধন সনদ প্রদান ইত্যাদি। এছাড়া যৌথ ও বিদেশী উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানকে ব্যবসায়িক সহায়তা প্রদান, নিবন্ধন সনদ বিতরণ ও সহায়কের ভূমিকা পালনও সংস্থাটির কার্যক্রমের মধ্যে পড়ে। এর বাইরে শুল্ক কর্তৃপক্ষ, বিনিয়োগ বোর্ড ও বিসিকসহ সরকারি অন্যান্য দপ্তর, মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কার্যক্রমের সঙ্গে সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করে সংস্থাটি।
জানা গেছে, আমদানি-রফতানি প্রধান নিয়ন্ত্রকের দপ্তরে বিরাজমান সমস্যাগুলোর অন্যতম হলো জনবল সংকট। দেশে বাণিজ্যের ব্যাপ্তি যখন ৫-১০ বিলিয়ন ডলারের মধ্যে ছিল, তখন বাণিজ্য ক্যাডারে সরকারি কর্মকর্তা ছিলেন ১২৭ জন। বর্তমানে তা ৭০ বিলিয়ন ডলার ছাড়ালেও এ-সংক্রান্ত ট্রেড ক্যাডার রয়েছেন ২২ জন।
জনবল সংকট ছাড়াও নিয়োগ দিতে না পারা, যানবাহনের স্বল্পতা, সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তরগুলোর সঙ্গে সমন্বয়ের অভাবে দ্রুততম সময়ে আমদানি-রফতানিসংক্রান্ত তথ্য হাতে না পাওয়ার সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে সংস্থাটি।
এ প্রসঙ্গে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন এনডিসি বলেন, বিশ্বব্যাপী বাণিজ্যসংক্রান্ত কাজের প্রক্রিয়ায় অনেক জটিলতা এসেছে। ফলে দেশেও আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ বাণিজ্যের জটিল কাজগুলো সম্পাদনে বিশেষজ্ঞ জনবলের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। সুষ্ঠুভাবে ও গতিশীলতার সঙ্গে বিশেষ বিভাগের মাধ্যমে কাজগুলো সমাধার লক্ষ্যেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ট্রেড ডিপার্টমেন্টের আদলে দপ্তর গঠনের বিষয়টি পর্যালোচনা করা হচ্ছে।
শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।