ঢাকা   মঙ্গলবার ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ৯ পৌষ ১৪৩২

বিএসইসির দ্বিমুখী নীতি: বোনাস ডিভিডেন্ডে বিতর্ক

বিএসইসির দ্বিমুখী নীতি: বোনাস ডিভিডেন্ডে বিতর্ক

শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর বোনাস ডিভিডেন্ড অনুমোদনকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)-এর সাম্প্রতিক সিদ্ধান্ত নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। অডিট রিপোর্টে নেতিবাচক পর্যবেক্ষণ থাকা সত্ত্বেও কিছু কোম্পানি বোনাস শেয়ার ইস্যুর অনুমতি পেয়েছে, কিন্তু একই কারণে অন্য কোম্পানির আবেদন প্রত্যাখ্যাত হয়েছে। এই বৈষম্যমূলক অবস্থান বাজারের অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে।

বিএসইসির সর্বশেষ সিদ্ধান্তে হিমাদ্রি লিমিটেড এবং কেঅ্যান্ডকিউ (বাংলাদেশ)-এর বোনাস ডিভিডেন্ড প্রস্তাব প্রত্যাখ্যাত হয়েছে। হিমাদ্রি ১০০ শতাংশ এবং কেঅ্যান্ডকিউ ৬ শতাংশ বোনাস শেয়ার ঘোষণা করেছিল। কমিশন জানিয়েছে, পর্যাপ্ত পুঁজি না থাকা এবং ৩০ জুন ২০২৫ সমাপ্ত অর্থবছরের আর্থিক প্রতিবেদনে গুরুতর অডিট আপত্তি থাকায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কেঅ্যান্ডকিউ এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করার পরিকল্পনা করছে।

বিএসইসির একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে কমিশন ত্রুটিপূর্ণ আর্থিক প্রতিবেদন সম্পন্ন কোম্পানিগুলোকে বোনাস ডিভিডেন্ড দিতে নিরুৎসাহিত করছে। তবে আইনি ফাঁকফোকরের কারণে কিছু কোম্পানি বিএসইসির অনুমতি ছাড়া বোনাস শেয়ার বিতরণ করতে পারছে। উদাহরণ হিসেবে ইনডেক্স অ্যাগ্রো, ইস্টার্ন লুব্রিকেন্টস ও লাভেলো আইসক্রিম অডিট আপত্তি থাকা সত্ত্বেও বোনাস শেয়ার ঘোষণা করেছে।

অন্যদিকে, সিভিও পেট্রোকেমিক্যাল, মামুন অ্যাগ্রো ও কাসেম ইন্ডাস্ট্রিজের মতো কোম্পানি নেতিবাচক অডিট থাকা সত্ত্বেও অনুমতি পেয়েছে, কিন্তু আছিয়া সি ফুড এবং বিডিকম অনলাইন এখনো অনুমতির অপেক্ষায় আছে।

বাজার বিশ্লেষকদের মতে, বিএসইসির এই দ্বিমুখী আচরণ এবং আইনি শিথিলতা শেয়ারবাজারে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় বড় অন্তরায়। যদি কমিশন নিয়ম প্রয়োগে অভিন্ন ও নিরপেক্ষ অবস্থান বজায় রাখতে ব্যর্থ হয়, তবে তা বাজারে আস্থার সংকট সৃষ্টি করবে এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য বিভ্রান্তিকর হবে।