
শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক (ইউসিবি) ২০২৪ সালে প্রকৃতপক্ষে ৩ হাজার ৮৮৮ কোটি টাকার বেশি লোকসান করেছে, যা শেয়ারপ্রতি লোকসান হিসাব করলে দাঁড়ায় ২৫ টাকা ০৮ পয়সা। অথচ ব্যাংকটি সঞ্চিতি গঠন না করেই উল্টো ০৫ পয়সা শেয়ারপ্রতি মুনাফা দেখিয়েছে। তা সত্ত্বেও ব্যাংকটির মূলধনে ৯৭৩ কোটি টাকার ঘাটতি রয়েছে, যা সঞ্চিতি ঘাটনা অন্তর্ভুক্ত করলে দাঁড়ায় ৩ হাজার ৬১৩ কোটি টাকারও বেশি।
২০২৪ সালের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে। নিরীক্ষকের ভাষ্যমতে, ব্যাসেল-৩ অনুযায়ী ইউসিবির মূলধনের প্রয়োজন ৬ হাজার ৩৫৮ কোটি ৭৮ লাখ টাকা, কিন্তু ব্যাংকের বর্তমান মূলধন রয়েছে মাত্র ৫ হাজার ৩৮৫ কোটি ৯০ লাখ টাকা। ফলে ৯৭২ কোটি ৮৭ লাখ টাকার ঘাটতি রয়ে গেছে।
মূলধন পর্যাপ্ততা অনুপাত (সিআরএআর) নিয়েও রয়েছে বড় ধরনের বিচ্যুতি। যেখানে অনুপাত থাকার কথা ১২.৫০ শতাংশ, সেখানে ইউসিবির প্রকৃত অনুপাত দাঁড়িয়েছে ১০.৫৯ শতাংশে। আবার যদি সঞ্চিতি ঘাটতিকে বিবেচনায় নেওয়া হয়, তবে এই অনুপাত আরও কমে দাঁড়ায় ৫.৪০ শতাংশে, যা ব্যাংকটির আর্থিক স্থিতিশীলতার জন্য বড় হুমকি।
এদিকে ১৯৮৬ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ইউসিবির পরিশোধিত মূলধন ১ হাজার ৫৫০ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। এর মধ্যে উদ্যোক্তা বা পরিচালকদের বাইরে থাকা সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে প্রায় ৮৯.৭৩ শতাংশ শেয়ারের মালিকানা।
এই পরিস্থিতিতে বিনিয়োগকারীরা ইউসিবির আর্থিক স্বচ্ছতা ও ভবিষ্যৎ পরিচালনাগত সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন। বিশ্লেষকদের মতে, প্রকৃত লোকসান আড়াল করে মুনাফা দেখানো হলে বাজারে ভুল বার্তা যায় এবং বিনিয়োগকারীদের ঝুঁকি আরও বাড়ে।