ঢাকা   মঙ্গলবার ২৯ জুলাই ২০২৫, ১৪ শ্রাবণ ১৪৩২

স্বল্পমেয়াদি মুনাফা তুলতেই সূচকের স্বাভাবিক সংশোধন

স্বল্পমেয়াদি মুনাফা তুলতেই সূচকের স্বাভাবিক সংশোধন

টানা আট দিন দেশের শেয়ারবাজারে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা বজায় থাকার পর আজ রোববার (২৭ জুলাই) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সূচক কিছুটা হোঁচট খেয়েছে। দিনের শেষে ডিএসইর প্রধান সূচক ৩৭ পয়েন্টের বেশি কমেছে। তবে বাজার বিশ্লেষকদের মতে, এটি বাজারের স্বাভাবিক ‘কারেকশন’। টানা উত্থানের পর কিছুটা মুনাফা তুলে নেওয়া হয় সাধারণ নিয়মেই, তাই এই পতন খুব একটা নেতিবাচক বার্তা নয়।

ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী, গত আট কর্মদিবসে ডিএসইর প্রধান সূচক বেড়েছে ৩৩১ পয়েন্ট। বাজারে তখন প্রবল বিনিয়োগ আগ্রহ লক্ষ্য করা গেছে, যা একটি স্থিতিশীল ধারা গড়ে তোলার ইঙ্গিত দেয়। সেই ধারার মধ্যেই আজ দিনের শুরুতে সূচক ২৫ পয়েন্ট বেড়ে লেনদেন শুরু করে, যা বাজারে আস্থা বজায় থাকার প্রতিফলন। কিন্তু বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কিছু বিনিয়োগকারী মুনাফা তুলতে শুরু করলে সূচক এক পর্যায়ে ৪৫ পয়েন্ট পর্যন্ত নেমে যায়। শেষ পর্যন্ত তা কিছুটা ঘুরে দাঁড়িয়ে ৩৭ পয়েন্টের বেশি কমে দিনের লেনদেন শেষ হয়।

লেনদেনের দিক থেকে আজ কিছুটা মিশ্রতা দেখা গেছে। আজ ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ৮৬৫ কোটি ৪ লাখ টাকার, যা আগের কর্মদিবসের তুলনায় কিছুটা কম। আগের দিন বৃহস্পতিবার লেনদেন হয়েছিল ৯৫১ কোটি ৭৮ লাখ টাকা এবং তার আগের দিন বুধবার ৯৮৬ কোটি ৫৩ লাখ টাকায়। তবে লেনদেনের এই হ্রাসও বিশ্লেষকদের কাছে অস্বাভাবিক মনে হয়নি, বরং তারা এটিকে পরিস্থিতি অনুযায়ী স্বাভাবিক বলেই দেখছেন।

আজ ডিএসইতে ১১৭টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারদাম বেড়েছে, ২৩২টি প্রতিষ্ঠানের দাম কমেছে এবং ৫০টি অপরিবর্তিত ছিল।

অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) একই প্রবণতা দেখা গেছে। সিএসইর পাঁচটি সূচকই আজ সংশোধন হয়েছে। সেখানে ৮৩টি কোম্পানির শেয়ারদাম বেড়েছে, ১৪০টির কমেছে এবং ২৪টির অপরিবর্তিত ছিল।

বাজারসংশ্লিষ্টরা বলছেন, সাম্প্রতিক সময়ে সরকারের পক্ষ থেকে নেওয়া কিছু ইতিবাচক পদক্ষেপ, ভালো কোম্পানির আর্থিক ফলাফল এবং কিছু কাঙ্ক্ষিত নীতিমালা বিনিয়োগকারীদের আস্থায় ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। তারই ধারাবাহিকতায় সূচকের এই একদিনের পতন বড় কোনো ধাক্কা নয়।


তারা আরও মনে করেন, বাজারে লাভের সুযোগ তৈরি হলে কিছু বিনিয়োগকারী স্বাভাবিকভাবেই তা তুলে নিতে চান। একে দুর্বলতা হিসেবে না দেখে বরং সুস্থ বাজারচক্রের অংশ হিসেবে দেখা উচিত। এমন পরিস্থিতিতে আতঙ্কিত না হয়ে বিনিয়োগকারীদের উচিত পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া।

সব মিলিয়ে বলা যায়, আজকের সূচক পতন সত্ত্বেও বাজারে সামগ্রিকভাবে একটি ইতিবাচক ধারা বিরাজ করছে। আগামী ২-৩ দিন এমনই মিশ্র প্রবণতায় বাজার থাকতে পারে। তারপর আবারও ইতিবাচক ধারায় বাজার সামনে এগুবে— এমন আশাবাদ বাজার সংশ্লিষ্টদের।