
টি-টোয়েন্টির নেতৃত্ব নিজ থেকে ছেড়েছেন। চ্যাম্পিয়নস ট্রফির পর ওয়ানডের নেতৃত্বে বিসিবিই আর রাখেনি তাঁকে। এরপর আজ নাজমুল হোসেন নিজ থেকে সরে দাঁড়ালেন টেস্ট দলের নেতৃত্ব থেকেও। কিন্তু তিনি আজই যে সিদ্ধান্তটা জানাবেন, সেটা নাকি জানত না বিসিবি!
আজ শ্রীলঙ্কা সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট–পরবর্তী সংবাদ সম্মেলন শেষ করে নাজমুল ঘোষণা দেন, টেস্ট দলের অধিনায়কত্ব আর করবেন না। সঙ্গে বলেছেন, কোনো ব্যক্তিগত রাগ-ক্ষোভ থেকে এই সিদ্ধান্ত নয়। তিনি মনে করেন বাংলাদেশ দলের ড্রেসিংরুমে টেস্ট, ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টির জন্য তিনজন আলাদা অধিনায়কের প্রয়োজন নেই। সে কারণে দলের ভালো চিন্তা করেই সিদ্ধান্তটা নিয়েছেন।
ওয়ানডে দলের নেতৃত্ব থেকে তাঁকে সরিয়ে দেওয়ার পর থেকেই আলোচনা ছিল, নাজমুল আর টেস্টেও নেতৃত্ব দিতে চান না। শ্রীলঙ্কা সিরিজের পর দায়িত্বটা ছেড়ে দেবেন বলেও গুঞ্জন ছিল।
তবে আজ সকালে কলম্বো টেস্টের চতুর্থ দিনের খেলা শুরুর আগে বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা প্রধান নাজমূল আবেদীন গণমাধ্যম কে বলেছিলেন, নাজমুল আজই অধিনায়কত্ব ছাড়ার ঘোষণা দেবেন, এ রকম কিছু তাঁর জানা নেই। নাজমুলের নেতৃত্ব ছাড়ার ঘোষণা দেওয়ার পরও একই কথা বলেছেন তিনি।
আজ দুপুরে সিংহলিজ স্পোর্টস ক্লাব মাঠে নাজমূল আবেদীন এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘আমরা জানতাম না, ও আজই সংবাদ সম্মেলনে অধিনায়কত্ব ছাড়া ঘোষণা দেবে। এ রকম কোনো কথা হয়নি। তবে আপনারাও জানেন, এ নিয়ে একটা আলোচনা চলছিল; আমরা যদিও ভেবেছিলাম এ নিয়ে আরও কথা হবে। শ্রীলঙ্কায় এখনো ওয়ানডে, টি–টোয়েন্টি সিরিজ আছে। যা হওয়ার এই সফরের পর হবে। আজই সিদ্ধান্ত জানাবে, এটা আশা করিনি।’
১২ জুন বিসিবি নাজমুল হোসেনকে সরিয়ে মেহেদী হাসান মিরাজকে নতুন ওয়ানডে অধিনায়ক ঘোষণা করে। আর আগে ক্রিকেট পরিচালনাপ্রধান নাজমুলকে জানান, বিসিবি তিন সংস্করণে তিন অধিনায়ক চাইছে। ওয়ানডেতে যেহেতু দল ভালো খেলছে না, তারা নেতৃত্বে পরিবর্তন এনে দেখতে চান কোনো ইতিবাচক ফল আসে কি না। কাজেই নাজমুল আর ওয়ানডের অধিনায়ক থাকছেন না। তিনি থাকেন শুধু টেস্ট অধিনায়ক। ওয়ানডে দলের দায়িত্ব দেওয়া হবে মিরাজকে।
নাজমুল হোসেন তখনই ক্রিকেট পরিচালনাপ্রধানকে জানিয়েছিলেন, সে ক্ষেত্রে তিনি আর টেস্ট দলকেও নেতৃত্ব দিতে চান না। কারণ, দলে তিন অধিনায়কের প্রয়োজন তিনি দেখেন না। সেই ধারাবাহিকতাতেই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ শেষ করে নাজমুল আজ নেতৃত্ব ছাড়ার ঘোষণা দিলেন।
নাজমুল বিসিবিকে না জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনে ঘোষণা দিয়েছেন বললেও তাঁর এই সিদ্ধান্তের প্রতি সম্মান জানিয়েছেন ক্রিকেট পরিচালনাপ্রধান, ‘আমরা আশা করেছিলাম এটা নিয়ে ও আমাদের সঙ্গে আরও কথা বলবে। তার নেতৃত্বগুণ নিয়ে কোনো সংশয় নেই, সে ভালো অধিনায়ক। তারপরও তার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তের প্রতি আমি সম্মান জানাই।’
নাজমূল আবেদীনের আশা, টেস্ট দলের অধিনায়কত্ব ছেড়ে দিলেও নাজমুল বাংলাদেশ দলের নেতৃত্বের বলয়ের মধ্যে থেকে তাঁর নেতৃত্বগুণ দিয়ে দলে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবেন। শেষে এ–ও বলেছেন, ‘আমার বিশ্বাস, সে আবার একদিন বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক হবে। সে কোয়ালিটি তার মধ্যে আছে।’
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দুই টেস্টের সিরিজ শেষ। আজ দ্বিতীয় টেস্টের চতুর্থ দিন সকালে ইনিংস ও ৭৮ রানে হেরে বাংলাদেশ সিরিজ হারল ১-০–তে। আগামী নভেম্বর-ডিসেম্বরে ঘরের মাঠে পরবর্তী টেস্ট সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ দল। নতুন টেস্ট অধিনায়ক কে হতে পারেন—এমন প্রশ্নে নাজমূল আবেদীন বলেছেন, ‘ও (নাজমুল হোসেন) তো সিদ্ধান্তটা জানালই আজকে। এখনো নতুন কারও কথা আমরা চিন্তা করিনি। দেখা যাক কাকে দেওয়া যায়। বোর্ডে আলাপ-আলোচনা করেই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হবে।’