
এক সপ্তাহ বন্ধ থাকার পর রাজধানীর আগারগাঁওয়ে জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে গত বুধবার থেকে সীমিত আকারে জরুরি সেবা চালু হলেও এখনও পুরোপুরি চিকিৎসাসেবা চালু হয়নি। ফলে রোগীরা পড়েছেন চরম ভোগান্তিতে। যেসব রোগীর জটিল পরীক্ষা-নিরীক্ষা বা অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন, তারা চিকিৎসা না পেয়ে এক হাসপাতাল থেকে আরেক হাসপাতালে ঘুরছেন।
আজ মঙ্গলবার সকালেও হাসপাতালে দেখা গেছে, জরুরি বিভাগে নারী, শিশু ও বৃদ্ধসহ প্রায় অর্ধশত রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। তবে বহির্বিভাগের সেবা না থাকায় বেশিরভাগ রোগীকেই ফেরত যেতে হচ্ছে। হাসপাতালের যন্ত্রপাতি চালু না থাকায় কেউ পরীক্ষার জন্য ছুটছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ, কেউ আবার শিশু হাসপাতালে। তবে অনেকেই এসব জায়গায় পরীক্ষাও করাতে পারছেন না।
রাজধানীর বছিলা থেকে আসা নিরাপত্তাকর্মী জসীম উদ্দিনের শিশু পুত্র চোখ ফুলে যাওয়ার কারণে হাসপাতালে এলে প্রাথমিক চিকিৎসা পেলেও দরকারি পরীক্ষাগুলো করাতে পারেননি। শিশু হাসপাতালে গিয়েও সন্তানের কান্নাকাটির কারণে পরীক্ষা অসম্পূর্ণ রেখে ফিরে এসেছেন তিনি। এখন অপেক্ষায় আছেন হাসপাতালের পূর্ণ সেবা চালুর।
চক্ষু হাসপাতালের নার্স ও কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, জরুরি বিভাগের অনেক রোগীর অস্ত্রোপচার প্রয়োজন হলেও এখন তা করা যাচ্ছে না। রোগীদের একাংশ বিশেষায়িত ওয়ার্ডে ভর্তি থাকলেও সেখানে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। চতুর্থ তলার ওয়ার্ডে তালা লাগানো অবস্থায় অবস্থান করছেন কিছু জুলাই আহত রোগী।
হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডা. জানে আলম গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, আপাতত জরুরি সেবা চালু রাখা হয়েছে এবং আগামী শনিবারের মধ্যে সব সেবা চালুর চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে আহত রোগীদের সঠিক সংখ্যা জানাতে পারেননি তিনি। শুধু জানিয়েছেন, তাঁরা খাবার নিচ্ছেন কিন্তু ভেতরে ঠিক কতজন অবস্থান করছেন তা নিশ্চিত নয়।
সকালে হাসপাতাল ঘুরে দেখা গেছে, দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে রোগীরা আসছেন চিকিৎসার আশায়। কিন্তু যারা জরুরি না, তাদের ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। রাজবাড়ী থেকে আসা লিয়াকত শিকদার বা কুমিল্লার দেবীদ্বার থেকে আসা বৃদ্ধ আবদুল মান্নান—দুজনেই সেবার জন্য অপেক্ষা করেও চিকিৎসা পাননি।
হাসপাতালের আনসার সদস্যরা জানান, এখনো জরুরি বিভাগ ছাড়া সব সেবা বন্ধ। যারা আসছেন, তাদের শনিবার আসার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। সেবা বন্ধ থাকায় বাড়ছে রোগীদের ভোগান্তি আর আশাহীন অপেক্ষা।