
বাংলাদেশ সরকার অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করে নতুন একটি নির্দেশনা জারি করেছে। এই নির্দেশনার আওতায় ব্যাংক ঋণ, মেয়াদি আমানত ও সঞ্চয়পত্রসহ মোট ২৪টি সেবায় আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
রোববার (৩ আগস্ট) বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সব তফসিলি ব্যাংকের উদ্দেশে পাঠানো এক সার্কুলারে জানানো হয়েছে, এখন থেকে নির্দিষ্ট কিছু ব্যাংকিং সেবা গ্রহণের আগে গ্রাহকদের আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার প্রমাণপত্র দাখিল করতে হবে।
নতুন নিয়ম অনুযায়ী, যদি কেউ ১০ লাখ টাকার বেশি মেয়াদি আমানত রাখতে চান বা ২০ লাখ টাকার বেশি ঋণ নিতে চান, তবে তাকে অবশ্যই আয়কর রিটার্ন জমা দিতে হবে। একইভাবে, ১০ লাখ টাকার বেশি সঞ্চয়পত্র কিনতেও রিটার্ন জমা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
এর আগে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে একটি গেজেট প্রকাশ করেছে। গেজেটে বলা হয়েছে, এসব আর্থিক লেনদেন বা সেবার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি রিটার্ন দাখিল না করলে ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান তাকে সেবা দিতে পারবে না।
এই নির্দেশনার আওতায় আরও যেসব সেবায় রিটার্ন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে—কোম্পানির পরিচালক বা স্পন্সর শেয়ারহোল্ডার হওয়া, আমদানি-রপ্তানি নিবন্ধন নবায়ন, ট্রেড লাইসেন্স বা পেশাজীবী লাইসেন্স নবায়ন, জমি বা ফ্ল্যাট রেজিস্ট্রেশন, গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংযোগ গ্রহণ।
এছাড়া ড্রাগ লাইসেন্স, পরিবেশ ছাড়পত্র, ফায়ার সার্ভিস ছাড়পত্র, ট্রলার বা নৌযানের সার্ভে সার্টিফিকেট, স্কুলে শিশু ভর্তি, এবং আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স গ্রহণের ক্ষেত্রেও আয়কর রিটার্ন জমা দিতে হবে।
সরকার বলছে, আয়কর রিটার্ন বাধ্যতামূলক করার এই উদ্যোগের মাধ্যমে করজালের আওতা বাড়ানো, রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি এবং আর্থিক লেনদেনে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। গেজেটে আরও বলা হয়, এই সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিক দ্বৈত কর পরিহার চুক্তির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণভাবে গৃহীত হয়েছে, যাতে দেশীয় আইন আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ থাকে।
সরকার আশা করছে, এই পদক্ষেপের ফলে অধিক সংখ্যক নাগরিক রিটার্ন দাখিলে আগ্রহী হবেন এবং দেশে কর সচেতনতা আরও বাড়বে।