ঢাকা   শুক্রবার ০৪ জুলাই ২০২৫, ২০ আষাঢ় ১৪৩২

চলতি অর্থবছরের শুরুতেই রাজস্বে চমক

লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩১৬ কোটি টাকা বেশি আদায় বেনাপোলে

অর্থ ও বাণিজ্য

বেনাপোল প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৯:৫৩, ২ জুলাই ২০২৫

লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩১৬ কোটি টাকা বেশি আদায় বেনাপোলে

বেনাপোল কাস্টমস হাউস ২০২৪-২৫ অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩১৬.৫১ কোটি টাকার রাজস্ব বেশি আদায় করেছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ৬ হাজার ৭০৫ কোটি টাকার রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল। আদায় হয়েছে ৭ হাজার ২১.৫১ কোটি টাকা, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে শতকরা ৪ দশমিক ৭২ শতাংশ বেশি।

কাস্টমস সূত্র জানায়, গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫ হাজার ৯৪৮ কোটি টাকা। আদায় হয়েছিল ৬ হাজার ১৬৭.৩৮ কোটি টাকা, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২১৯.৩৮ কোটি টাকা বেশি।

কাস্টমস ও বাণিজ্য সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অস্থিরতা এবং রাজস্ব বোর্ড সংস্কার ঐক্য পরিষদের কলম বিরতি ও শাটডাউনের মধ্যেও রাজস্ব আদায়ের ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছে বেনাপোল কাস্টমস। কাস্টমস হাউস কমিশনারসহ কর্মকর্তারা দফতরে উপস্থিত থেকে তদারকি করায় চলতি অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি রাজস্ব আদায় সম্ভব হয়েছে বলে জানান ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সাব-কমিটির পরিচালক মতিয়ার রহমান।

বেনাপোল থেকে ভারতের দূরত্ব কম ও যাতায়াত ব্যবস্থা উন্নত হওয়ায় বাংলাদেশ-ভারতের স্থলপথে প্রায় ৮০ শতাংশ আমদানি হয় এই বন্দরের মাধ্যমে। বছরে প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকার পণ্য আমদানি হয়, যেখান থেকে সরকার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করে।

এনবিআর থেকে অর্থবছরের শুরুতেই রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। সে অনুযায়ী ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বেনাপোল কাস্টমস হাউসের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬ হাজার ৭০৫ কোটি টাকা।
২০২৩-২৪ অর্থবছরে বেনাপোল বন্দর দিয়ে ১৫ লাখ ৮১ হাজার ৯৫৪.২৪ মে. টন পণ্য আমদানি হয়েছিল। আর ২০২৪-২৫ অর্থবছরে আমদানি হয়েছে ১৫ লাখ ৩৪ হাজার ৩৪০.২১ মে. টন। আমদানি কম হলেও বেশি রাজস্ব আদায় সম্ভব হয়েছে।
কাস্টমস কর্মকর্তারা রাজস্ব ফাঁকি রোধে কঠোর নজরদারি ও সঠিক শুল্কায়নের ফলে এই সফলতা এসেছে।

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক লতা জানান, বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে প্রতিদিন প্রায় ৪০০ থেকে ৫০০ ট্রাক পণ্য আমদানি এবং ১৫০ থেকে ২০০ ট্রাক পণ্য রপ্তানি হচ্ছে। কাস্টমস কর্তৃপক্ষ রাজস্ব ফাঁকি রোধে কঠোর অবস্থান নেওয়ায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি রাজস্ব আদায় সম্ভব হয়েছে।

বেনাপোল স্থলবন্দরের উপ-পরিচালক মামুন কবির তরফদার জানান, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৩ লাখ ৫০ হাজার ৭৭৪.৮৫ মে. টন পণ্য রপ্তানি হয়েছিল। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে রপ্তানি হয়েছে ৩ লাখ ৮১ হাজার ৪৪০.৭৭ মে. টন, যা আগের বছরের তুলনায় ৩০,৬৬৫.৯২ মে. টন বেশি। বন্দরের অবকাঠামো উন্নয়ন কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

বেনাপোল কাস্টমস হাউসের অতিরিক্ত কমিশনার এইচ এম শরিফুল ইসলাম জানান, রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় আদায়ের প্রবৃদ্ধি ১৩ দশমিক ৫১ শতাংশ বেড়েছে, যা হাউসটির একটি উল্লেখযোগ্য অর্জন। তিনি আরও বলেন, রাজস্ব ফাঁকি রোধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি অনুসরণ করায় শুল্ক ফাঁকির প্রবণতা কমে এসেছে। অনিয়ম ধরা পড়লে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।