ঢাকা   মঙ্গলবার ০৪ নভেম্বর ২০২৫, ২০ কার্তিক ১৪৩২

দরপতন! চার এনবিএফআইয়ের শেয়ার নামল এক টাকার নিচে

দরপতন! চার এনবিএফআইয়ের শেয়ার নামল এক টাকার নিচে

শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত চারটি নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের (এনবিএফআই) শেয়ারদর নেমে গেছে এক টাকার নিচে। বাজারে তারল্য সংকট ও বিনিয়োগকারীদের অনীহায় এসব কোম্পানির শেয়ারের দাম ক্রমেই নিম্নমুখী হচ্ছে।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) -এর সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, যেসব প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ১ টাকার নিচে লেনদেন হচ্ছে সেগুলো হলো— পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেড, প্রিমিয়ার লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস, এবং ফারইস্ট ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড।


সোমবার (০৩ নভেম্বর) প্রিমিয়ার লিজিং ও ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৯০ পয়সায়। এর আগেই পিপলস লিজিংয়ের শেয়ার ২১ অক্টোবর এবং ফারইস্ট ফাইন্যান্সের শেয়ার ২৬ অক্টোবর ৯০ পয়সায় নেমে আসে।

এই পরিস্থিতিতে দুর্বল ও স্বল্পমূল্যের শেয়ারগুলোর লেনদেন দক্ষতা বাড়াতে নতুন উদ্যোগ নিয়েছে ডিএসই। বাজারের অদক্ষতা কমাতে সংস্থাটি নতুন টিক সাইজ নিয়ম চালু করেছে, যা কার্যকর হয়েছে ২৯ অক্টোবর, ২০২৫ থেকে।

আগে শেয়ারদর ওঠানামা করত সর্বনিম্ন ১০ পয়সা ব্যবধানে। ফলে স্বল্পমূল্যের শেয়ারগুলো সহজে সমন্বয় করতে পারত না। এখন থেকে ১ টাকার নিচে থাকা সিকিউরিটিজগুলোর দাম ১ পয়সা ব্যবধানে ওঠানামা করতে পারবে। এতে মূল্য সমন্বয় হবে আরও সূক্ষ্মভাবে, যা লেনদেনকে করবে মসৃণ ও বাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।

ডিএসই আশা করছে, এই সংস্কার সার্কিট ব্রেকারের কারণে তৈরি স্থবিরতা দূর করবে এবং স্বল্পমূল্যের শেয়ারগুলোর তারল্য (লিকুইডিটি) বৃদ্ধি করবে। এই নতুন নিয়মটি ডিএসইর অটোমেটেড ট্রেডিং রেগুলেশনস, ১৯৯৯-এর ১৮ নম্বর বিধি অনুসারে বাস্তবায়িত হচ্ছে।

ডিএসইর সাম্প্রতিক তথ্য বলছে, বর্তমানে ১০০টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ড তাদের ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের নিচে লেনদেন করছে। এর মধ্যে প্রায় ৭০টি কোম্পানি (ব্যাংক, বীমা, এনবিএফআই, টেক্সটাইল, খাদ্য, পরিষেবা ও প্রকৌশল খাত) এবং ৩৪টি মিউচুয়াল ফান্ড রয়েছে। উদ্বেগের বিষয়, ৫৫টি কোম্পানির শেয়ারদর ৫ টাকারও নিচে নেমে গেছে।

বাজার বিশেষজ্ঞরা এই দীর্ঘমেয়াদি মন্দার জন্য রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা, তারল্য সংকট এবং দুর্বল প্রাতিষ্ঠানিক অংশগ্রহণকে দায়ী করছেন। তাদের মতে, চলমান হতাশা নতুন বিনিয়োগকারীদের দূরে ঠেলে দিচ্ছে এবং পুরোনো বিনিয়োগকারীদের বিক্রিমুখী করছে, যা লেনদেনের পরিমাণ কমিয়ে দিচ্ছে ও দামকে আরও নিচে নামাচ্ছে।