
অর্থ মন্ত্রণালয়ের সাম্প্রতিক ঘোষণায় শরিয়াহভিত্তিক পাঁচটি ব্যাংকের শেয়ারে হঠাৎ লেনদেনের ধুম পড়েছে। এর প্রভাব পড়েছে পুরো পুঁজিবাজারে।
সোমবার (১৩ অক্টোবর) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) এই পাঁচ ব্যাংকের শেয়ার লেনদেন কয়েকগুণ বেড়ে যায়, যদিও দর তেমন বাড়েনি। আজ মঙ্গলবারও সেই ধারা অব্যাহত রয়েছে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে জানানো হয়, শরিয়াহভিত্তিক পাঁচ ব্যাংকের একীভূতকরণ প্রক্রিয়ায় সাধারণ বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সুরক্ষাকে সরকার সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে। মন্ত্রণালয় স্পষ্ট করেছে—একটি স্বার্থান্বেষী মহল গুজব ছড়াচ্ছে যে বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন, কিন্তু এখন পর্যন্ত এমন কোনো সিদ্ধান্ত সরকার নেয়নি যা বিনিয়োগকারীদের ক্ষতি করতে পারে।
ঘোষণার পর থেকেই ডিএসইতে পাঁচ ব্যাংকের লেনদেনে রেকর্ড বৃদ্ধি দেখা যায়—
এক্সিম ব্যাংক:৩.৯ লাখ থেকে বেড়ে ৬০.৮ লাখ শেয়ার, লেনদেনমূল্য ১৪ লাখ → ২.০৮ কোটি টাকা
ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক: ১১.৯ লাখ থেকে ৬৯.৮ লাখ শেয়ার, মূল্য ৩২ লাখ → ১.৮২ কোটি টাকা
গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক: ৪.১ লাখ থেকে ৩১.৯ লাখ শেয়ার, মূল্য ৭৫ হাজার → ৫৫.৬৫ লাখ টাকা
সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক: ২৭ হাজার থেকে ৩৬.৭ লাখ শেয়ার, মূল্য ১২ হাজার → ১.৪৬ কোটি টাকা
ইউনিয়ন ব্যাংক: ৬.৯ লাখ থেকে **২৭.৬ লাখ শেয়ার, মূল্য ১১.৮৬ লাখ → ৪৫.৩৪ লাখ টাকা
তবে এত লেনদেন বৃদ্ধির পরও শেয়ারের দাম উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়েনি।
একজন খুচরা বিনিয়োগকারী কাজী মো. নজরুল ইসলাম বলেন, “অর্থ মন্ত্রণালয়ের ঘোষণায় কিছুটা স্বস্তি মিলেছে। এখন সরকারের উচিত বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষায় বাস্তব পদক্ষেপ নেওয়া।”
এর আগে ‘ইউনাইটেড ইসলামী ব্যাংক’ বা ‘সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংক’ নামে নতুন ব্যাংক গঠনের প্রস্তাব উপদেষ্টা পরিষদে গৃহীত হয়, যেখানে মূলধন ঘাটতি থাকা ব্যাংকগুলোর শেয়ারহোল্ডারদের দাবি পরিশোধের সুযোগ না থাকার কথা উল্লেখ করা হয়েছিল।
এদিকে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) জানিয়েছে, এ প্রক্রিয়া “অবসায়ন নয়, বরং একীভূতকরণ।” তাই বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সংরক্ষণ করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
বিএসইসির পরিচালক ও মুখপাত্র আবুল কালাম বলেন, “যে ব্যাংকের বাজারমূল্য বেশি, বিনিয়োগকারীদের সে দামেই প্রতিফলন দিতে হবে। সরকার ও নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিনিয়োগকারীদের স্বার্থেই কাজ করছে।”