ঈদুল আজহার কোরবানির পাঁচ দিনের মধ্যেই কাঁচা চামড়া সংরক্ষণের কাজ প্রায় শেষ। এবার সারা দেশে পশু কোরবানি কম হওয়ায় চামড়ার জোগানও কমেছে। ফলে আড়তদাররা চামড়ার ভালো দামের প্রত্যাশায় আছেন। ট্যানারির ডাকের অপেক্ষায় থাকা আড়তগুলো বলছে, দাম নির্ধারণে এবার তাঁদের জিম্মি করা যাবে না।
সরকার এবার প্রতি বর্গফুট লবণযুক্ত চামড়ার দাম ঢাকায় ৬০-৬৫ টাকা এবং ঢাকার বাইরে ৫০-৫৫ টাকা নির্ধারণ করেছে। চামড়ার আকার অনুযায়ী একেকটির দাম দাঁড়ায় ১,৫০০ থেকে ১,৬২৫ টাকা পর্যন্ত। আড়তদারদের মতে, ৭০০–৯০০ টাকায় কেনা চামড়ায় লবণ ও শ্রমিক খরচসহ ব্যয় হয়েছে ১,৩০০ টাকা পর্যন্ত। ফলে টিকে থাকতে হলে প্রতিটি চামড়া কমপক্ষে ১,৫০০ টাকায় বিক্রি করতে হবে।
এ বছর কোরবানির সংখ্যা ৯১ লাখ, যা গত বছরের তুলনায় প্রায় ১৩ লাখ কম। ঢাকায় কোরবানি কমেছে অর্ধেকের বেশি—১২ লাখ থেকে ৬ লাখে নেমেছে। চামড়া কমে যাওয়ায় বাজারে ঘাটতি তৈরি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা।
পোস্তার আড়তদার ইমতেয়াজ জানান, প্রতি চামড়ায় ন্যূনতম খরচ ৩০০ টাকা। কিন্তু ট্যানারিদের কাছ থেকে বকেয়া টাকা পেতে দীর্ঘ সময় লাগে, ব্যাংকঋণ মেলে না—এসব কারণে অনেকেই চামড়ার ব্যবসা ছেড়ে দিচ্ছেন। ইউরোপের বাজার উন্মুক্ত না হলে শুধু দাম নির্ধারণ করে এই শিল্প বাঁচানো কঠিন।
বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান শাহিন আহমেদ জানিয়েছেন, এবার ৮০ লাখ চামড়া সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকায় ৮ লাখ, এরই মধ্যে ৪ লাখ চামড়া ট্যানারিতে ঢুকেছে। সরকার নির্ধারিত দামে চামড়া সংগ্রহ চলছে।
সংশ্লিষ্টদের ধারণা, কোরবানি কম হওয়ায় চাহিদা বাড়বে এবং তা দাম বাড়ার পথ খুলে দিতে পারে। তবে বাজারের ভারসাম্য রক্ষায় রপ্তানির সুযোগ ও অর্থনৈতিক কাঠামোতে দীর্ঘমেয়াদি সমাধান প্রয়োজন বলে মনে করছেন খাতসংশ্লিষ্টরা।
