ঢাকা   মঙ্গলবার ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৩১ ভাদ্র ১৪৩২

ইয়াকিন পলিমারে আসছে নতুন মালিকানা

শেয়ারবাজার

শেয়ারবিজনেস ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৯:৩৮, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ইয়াকিন পলিমারে আসছে নতুন মালিকানা

শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি ইয়াকিন পলিমার লিমিটেডের ২১.৫০ শতাংশ শেয়ার অধিগ্রহণের পরিকল্পনা করছে রিয়েল এস্টেট ও বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান এফসিএস হোল্ডিংস লিমিটেড। এই অধিগ্রহণের জন্য সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)-এর কাছে একটি আবেদন জমা দেওয়া হয়েছে।

কোম্পানির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ইয়াকিন পলিমারের তিনজন স্পন্সর শেয়ারহোল্ডার এবং এফসিএস হোল্ডিংস যৌথভাবে এই আবেদনটি করেছে। এর মাধ্যমে ১ কোটি ৫৮ লাখ ৫২ হাজার ৯৯৩টি শেয়ার, যা কোম্পানির মোট শেয়ারের ২১.৫০ শতাংশ অংশ, এফসিএস হোল্ডিংসের কাছে হস্তান্তর করার অনুমতি চাওয়া হয়েছে।


এই শেয়ার হস্তান্তরের বিনিময়ে কোনো ক্যাশ দেওয়া হবে না। এর পরিবর্তে এফসিএস হোল্ডিংস ইয়াকিন পলিমারের বিদ্যমান ঋণ ও দায়-দেনা গ্রহণ করবে। এর মধ্যে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি এবং ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট ফাইন্যান্স কোম্পানি-এর ঋণসহ সরবরাহকারীদের বকেয়া বিল অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

বোর্ড পুনর্গঠন ও আধুনিকায়নের পরিকল্পনা

বিএসইসি-এর অনুমোদন পেলে ইয়াকিন পলিমারের পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করা হবে। নতুন স্পন্সর শেয়ারহোল্ডারের প্রতিনিধিরা বোর্ডে যুক্ত হবেন, তবে মোহাম্মদ হারুনর রশিদ ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে তার দায়িত্ব চালিয়ে যাবেন।

এফসিএস হোল্ডিংস আরও জানিয়েছে, তারা ইয়াকিন পলিমারের কার্যক্রম উন্নত ও আধুনিক করতে একটি বিএমআরই (ব্যালেন্সিং, মডার্নাইজেশন, রিহ্যাবিলিটেশন অ্যান্ড এক্সপানশন) প্রোগ্রাম হাতে নেবে। কোম্পানিটি আরও প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যে শেয়ার হস্তান্তর প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পর ২০২২ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত কোম্পানির সব অ-প্রতিপালনজনিত বিষয়গুলো সমাধান করা হবে।

দীর্ঘদিনের জটিলতা এবং বিনিয়োগকারীদের দুর্ভোগ

২০১৬ সালে ইয়াকিন পলিমার ব্যবসা সম্প্রসারণের জন্য ২০ কোটি টাকা সংগ্রহ করেছিল। কিন্তু সরকারের পাটের বস্তার ব্যবহারকে উৎসাহিত করার সিদ্ধান্তের পর তাদের কার্যক্রম হ্রাস পায়। এরপর কোম্পানিটি সর্বশেষ ২০২০ সালে ১ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়েছিল। তারপর থেকে কোম্পানিটি আর কোনো ডিভিডেন্ড সংক্রান্ত তথ্য জানায়নি এবং ২০২৩ সাল থেকে কোম্পানিটির শেয়ার "জেড" ক্যাটাগরিতে লেনদেন হচ্ছে।

গত বছরের জুন মাসে বর্তমান পরিচালনা পর্ষদ পূর্ববর্তী ব্যবস্থাপনা থেকে কোম্পানির ৩০.৫২ শতাংশ শেয়ার অধিগ্রহণ করে। কিন্তু কার্যনির্বাহী মূলধনের অভাব এবং ঋণ পুনর্গঠনে ব্যর্থতার কারণে কোম্পানিটি সুচারুভাবে চলতে পারেনি, যার কারণে বিনিয়োগকারীরা দীর্ঘ সময় ধরে ক্ষতির মুখে রয়েছেন।


উল্লেখ্য, এর আগে ২০২২ ও ২০২৩ সালেও শেয়ার হস্তান্তর প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য একাধিকবার সময়সীমা বাড়ানো হলেও তা ব্যর্থ হয়। এই খবর প্রকাশের পর সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) কোম্পানিটির শেয়ারের দাম ৬০ পয়সা বা ০.৬০ শতাংশ কমে ১৮ টাকায় নেমে এসেছে।