ঢাকা   মঙ্গলবার ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৩১ ভাদ্র ১৪৩২

সালমান রহমানের শেয়ার কারসাজির অভিযোগে নড়েচড়ে বসলো বিএসইসি

শেয়ারবাজার

শেয়ারবিজনেস ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৫:১৩, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সালমান রহমানের শেয়ার কারসাজির অভিযোগে নড়েচড়ে বসলো বিএসইসি

বেক্সিমকো গ্রুপের কর্ণধার ও সরকারের বেসরকারি খাত বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের বিরুদ্ধে নতুন করে শেয়ার কারসাজি ও অর্থপাচারের অভিযোগ উঠেছে। ব্যাংক ঋণ ব্যবহার করে শেয়ারবাজারে কারসাজির এই ঘটনায় বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।

বিএসইসি জানিয়েছে, সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের অধীনস্থ বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ওই প্রতিবেদনে দেখা গেছে, সালমান রহমানের সঙ্গে যুক্ত আটটি কোম্পানি ও ৩৪ জন ব্যক্তি প্রায় ৬ হাজার ৭৯৭ কোটি টাকা শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করেছে। প্রাথমিক অনুসন্ধানে শেয়ার কারসাজির প্রমাণও পাওয়া গেছে।


তদন্ত সূত্রে জানা গেছে, অস্তিত্বহীন বা কাগুজে কোম্পানির নামে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে বিপুল অঙ্কের ঋণ নেওয়া হয়, যার মধ্যে আইএফআইসি ব্যাংকও রয়েছে। তখন আইএফআইসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান ছিলেন সালমান এফ রহমান। এসব ঋণ সংশ্লিষ্ট আট কোম্পানির অ্যাকাউন্টে জমা হয় এবং পরবর্তীতে সেই অর্থ শেয়ারবাজারে ব্যবহার করা হয়।

অভিযোগ রয়েছে, এই অর্থ বিনিয়োগ করা হয়েছিল মূলত বেক্সিমকো গ্রুপসহ কয়েকটি কোম্পানির শেয়ারদর কৃত্রিমভাবে বাড়ানোর উদ্দেশ্যে। এ কারণে বিএসইসি মনে করছে, বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ ক্ষুণ্ণ করার মতো অনিয়ম এতে সংঘটিত হয়েছে।

তদন্তের আওতায় আসা প্রতিষ্ঠানগুলো হলো— অ্যাবসোলুট কনস্ট্রাকশন অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, অ্যাপোলো ট্রেডিং লিমিটেড, বেক্সিমকো হোল্ডিংস লিমিটেড, জুপিটার বিজনেস লিমিটেড, নিউ ঢাকা ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, ক্রিসেন্ট লিমিটেড, সেন্ট্রাল ল্যান্ড অ্যান্ড বিল্ডিং লিমিটেড এবং ট্রেড নেক্সট ইন্টারনাল লিমিটেড।

একইসাথে কমিটি বেক্সিমকো গ্রিন সুকুক ও আইএফআইসি আমার বন্ড-সংক্রান্ত অনিয়মও খতিয়ে দেখবে। অভিযোগ রয়েছে, ২০২১ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে বেক্সিমকো গ্রিন সুকুক বন্ডের মাধ্যমে ৩ হাজার কোটি টাকা এবং আইএফআইসি গ্যারান্টেড শ্রীপুর টাউনশিপ জিরো কুপন বন্ডের মাধ্যমে আরও ১ হাজার কোটি টাকা সংগ্রহ করা হয়। যদিও এই বন্ডে আইএফআইসি ব্যাংক কেবল গ্যারান্টারের ভূমিকায় ছিল, কিন্তু বেক্সিমকো এটিকে ‘আইএফআইসি আমার বন্ড’ নামে প্রচার করে বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করেছিল।


বিএসইসির মুখপাত্র আবুল কালাম বলেন, “বিএফআইইউর প্রতিবেদনে পাওয়া তথ্য থেকে মনে হচ্ছে, শেয়ারবাজার ও ব্যাংকিং ব্যবস্থা ব্যবহার করে বিনিয়োগকারীদের অর্থ আত্মসাতের একটি চক্র সক্রিয় ছিল।” তিনি আরও জানান, তদন্ত শেষ হলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।