facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ৩০ এপ্রিল মঙ্গলবার, ২০২৪

Walton

শেয়ারবাজারে ব্র্যান্ড কোম্পানি হবে এস্কোয়্যার : এহসানুল হাবীব


১৮ ডিসেম্বর ২০১৭ সোমবার, ০৫:০৬  পিএম

নিজস্ব প্রতিবেদক


শেয়ারবাজারে ব্র্যান্ড কোম্পানি হবে এস্কোয়্যার : এহসানুল হাবীব
এস্কোয়্যার নিট কম্পোজিট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এহসানুল হাবীব

এস্কোয়্যার নিট কম্পোজিট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এহসানুল হাবীব নতুন প্রজন্মের উদ্যোক্তাদের একজন। যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিবিএ সম্পন্ন করে দেশে ফিরে বাবার হাতে তৈরি এস্কোয়্যার গ্রুপে যোগ দেন। অল্প সময়ের মধ্যে সফল উদ্যোক্তা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। উন্নত বিশ্বের ব্যবস্থাপনা, বিপণন ও প্রযুক্তিগত জ্ঞান কাজে লাগিয়ে এস্কোয়্যার গ্রুপ এবং এর অঙ্গপ্রতিষ্ঠানগুলোকে এক ধাপ এগিয়ে নিতে সক্ষম হয়েছেন। তিনি নিজে এস্কোয়্যার নিট কম্পোজিটের ইন্টারন্যাশন্যাল মার্কেটিং দেখাশোনা করেন। কোম্পানিটি শেয়ারবাজারে বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে তালিকাভুক্ত হতে ইতোমধ্যে রোড শো সম্পন্ন করেছে। কোম্পানির নানাদিক নিয়ে সম্প্রতি তিনি কথা বলেন।

এস্কোয়্যার নিট কম্পোজিটের শুরুর কথা বলতে গিয়ে এহসানুল হাবীব বলেন, আমাদের গ্রুপের যাত্রা ১৯৭৪ সালে। এস্কোয়্যার গ্রুপের একটি অঙ্গপ্রতিষ্ঠান এস্কোয়্যার নিট কম্পোজিট লিমিটেড। শতভাগ রফতানিমুখী তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান। ২০০০ সালে এস্কোয়্যার নিট কম্পোজিট লিমিটেড প্রতিষ্ঠিত হয়। আর এটি ২০১৫ সালে পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিতে রূপান্তরিত হয়। তাছাড়া আমরা নতুন একটি ইউনিটে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি। এজন্য বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে আইপিওর মাধ্যমে পুঁজিবাজারে যাচ্ছি। শুরু থেকে প্রতিষ্ঠানটি সফলতার সঙ্গে ব্যবসা করে আসছে। এছাড়া বিশ্ববাজারে আমাদের পণ্যের চাহিদাও রয়েছে।

প্রতিষ্ঠানটির পণ্যের ক্রেতা দেশের কথা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা মূলত ইউরোপিয়ান বাজারেই বেশি রফতানি করছি। ডেনমার্ক, নরওয়ে ও সুইডেনে বেশ কিছু ক্রেতা আছে। চাহিদাও দিন দিন বাড়ছে। আমাদের নর্থ আমেরিকান মার্কেটে উপস্থিতি কম। এর বাইরে আমাদের কিছু নন ট্রেডিশনাল বাজার আছে; যেমন চায়না ও রাশিয়া। আমরা অস্ট্রেলিয়ার বাজারে প্রবেশের চেষ্টা করছি। যেসব ব্র্যান্ড আমাদের ক্রেতা তালিকায় রয়েছে, তার মধ্যে সি অ্যান্ড এ, বেস্ট সেলার, অস্টিন, এসপিরিট, মাসকট, সেলিও, নেক্সট, টি জেইস, পুল অ্যান্ড বিয়ার প্রভৃতি অন্যতম।

নিট পণ্যের চাহিদা ও বাংলাদেশের অবস্থান সম্পর্কে এহসানুল হাবীব বলেন, বিশ্ববাজার লক্ষ্য করলে দেখা যায় নিট পণ্য রফতানিতে প্রথম স্থানে চীন, এরপরই রয়েছে বাংলাদেশ। দিন দিন এগিয়ে যাচ্ছে আমাদের এ খাত। আমাদের দেশের ভিশন-২০২১-এ রফতানির লক্ষ্যমাত্রা ৫০ বিলিয়ন ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে। এ লক্ষ্য বাস্তবায়নে উদ্যোক্তাদের এগিয়ে আসতে হবে। সে অনুযায়ী তৈরি পোশাকের চাহিদা বাড়ছে। এতদিন আমরা বাংলাদেশ থেকে যে পণ্য রফতানি করতাম, সেগুলো ‘লো মিড রেঞ্জের’ পণ্য। এখন ‘মিড অ্যান্ড আপার’ রেঞ্জের দিকে যাচ্ছে। আগে আমরা শুধু গেঞ্জি বা শার্ট রফতানি করতাম। বর্তমানে এর সঙ্গে এখন ফ্যাশন ওয়ার্কও করা হয়। এতদিন বিদেশ থেকে ক্রেতারা নিজস্ব ডিজাইন নিয়ে আসতেন। আমরা ওই ডিজাইন কপি করে পণ্য তৈরি করে রফতানি করতাম। এখন আমরা নিজেরাই ডিজাইন করে ক্রেতাদের কাছে তুলে ধরছি। ভালো সাড়া পাচ্ছি।

এস্কোয়্যার নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে তিনি বলেন, কীভাবে উৎপাদনশীলতা বাড়ানো যায়, সেটা নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করেই নতুন প্লান্ট স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। যেখানে দেশের প্রায় ১০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হবে। যা আমাদের প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সঙ্গে দেশের জন্যও ভালো কিছু বয়ে আনবে। তাছাড়া কীভাবে আরও বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে পারি, কীভাবে বিশ্বে আরও সুযোগ সৃষ্টি করা যায়- সে লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। দেশের শেয়ারবাজারে এস্কোয়্যার নিট কম্পোজিট তালিকাভুক্ত হবে একটা ব্রান্ড যুক্ত হওয়া।

চ্যালেঞ্জ হিসেবে এহসানুল হাবীব বলেন, চ্যালেঞ্জ তো প্রতিনিয়তই থাকে। বিশ্ববাজারে দাম পড়ে যাচ্ছে। ব্রেক্সিট হওয়ায় ইউরোপে মূল্যের দরপতন হয়েছে। আর তাদের ওই বিষয়টা আমাদের ওপর চাপিয়ে দিচ্ছে। তাদের অভ্যন্তরীণ ক্রয়ক্ষমতা কমে গেছে। যেমন-আগে একটা টি-শার্ট তিন পাউন্ডে কিনতে পারতো; কিন্তু এখন আড়াই পাউন্ডে কিনতে চায়। ওই চাপটা আছে। আর অভ্যন্তরীণ কিছু চ্যালেঞ্জও আছে। যেমন ক্রেতারা চান খুব কম সময়ে পণ্য সরবরাহ করতে। আগে ক্রেতাদের কাছ থেকে অর্ডারের পর পণ্য তৈরির সময় পাওয়া যেত ১২০ থেকে ১৮০ দিন। কিন্তু এখন ৬০ দিনে চলে এসেছে। চ্যালেঞ্জ হলো, সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলা। এছাড়া অবকাঠামোগত কিছু সমস্যাও আছে। যেমন বিদ্যুৎ, গ্যাসের ঊচ্চমূল্য। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের সঙ্গে আমাদের পার্থক্য হচ্ছে, তাদের সরকার অনেক এগিয়ে এসেছে। আমাদের এ প্রতিষ্ঠানে প্রচুর জনবল রয়েছে। সরকারের এখানে এগিয়ে আসা দরকার। তাছাড়া ব্যাংক ইন্টারেস্টও অন্য দেশের তুলনায় বেশি। এসব চ্যালেঞ্জ থাকা সত্ত্বেও আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। উৎপাদন বাড়ানোর চেষ্টা করছি।

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন: