facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ০৯ মে বৃহস্পতিবার, ২০২৪

Walton

যে কারণে এবি ব্যাংকের বার্ষিক সাধারণ সভা স্থগিত


১৬ আগস্ট ২০১৭ বুধবার, ০৩:০১  পিএম

নিজস্ব প্রতিবেদক

শেয়ার বিজনেস24.কম


যে কারণে এবি ব্যাংকের বার্ষিক সাধারণ সভা স্থগিত

৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত ২০১৬ হিসাব বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন, লভ্যাংশ ও অন্যান্য এজেন্ডা অনুমোদনের জন্য আগামীকাল ১৭ আগস্ট সকাল ৯টায় রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) আহ্বান করেছিল এবি ব্যাংক লিমিটেড। সোমবার এক সভায় অনিবার্য কারণে সভাটি স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ব্যাংকের পর্ষদ। ব্যাংকের কর্মকর্তারা আনুষ্ঠানিক বক্তব্যে এজিএম স্থগিতের নেপথ্যে শুধু ‘অনিবার্য কারণ’ উল্লেখ করলেও দায়িত্বশীল একাধিক সূত্র জানিয়েছে, সভায় উত্থাপনযোগ্য নিরীক্ষিত হিসাব প্রতিবেদনে ব্যাংকের জন্য অস্বস্তিকর ও শেয়ারহোল্ডারদের জন্য হতাশার কিছু বিষয় উল্লেখ রয়েছে। এছাড়া এজিএমে শীর্ষ কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণ নিয়েও অনিশ্চয়তা রয়েছে।

সূত্র জানায়, বার্ষিক সাধারণ সভার স্থান, সময় সবছুিই ঠিক ছিল। তবে সভায় শেয়ারহোল্ডারদের সামনে উত্থাপন হতে যাওয়া বার্ষিক প্রতিবেদনে নিরীক্ষকের বক্তব্যসহ বেশকিছু বিষয় ব্যাংক কর্তৃপক্ষের জন্য অস্বস্তিকর। এর ওপর ঋণ অনিয়মের অভিযোগে ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ জ্যেষ্ঠ অনেক কর্মকর্তা দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় আসামি হওয়ায় এজিএমে তাদের অংশগ্রহণ নিয়েও অনিশ্চয়তা রয়েছে। সব মিলিয়ে এজিএম স্থগিত করে পরবর্তী কোনো সময়ে তা আয়োজনকেই শ্রেয় মনে করছে ব্যাংকের পর্ষদ। এ কারণেই সোমবার সরকারি ছুটির দিনে অনির্ধারিত পর্ষদ সভায় এজিএম স্থগিতের সিদ্ধান্ত হয়।
উল্লেখ্য, ব্যাংকের উদ্যোক্তা মোরশেদ খানের মালিকানাধীন সেলফোন অপারেটর সিটিসেলকে ঋণ দেয়ার নামে সাড়ে ৩০০ কোটি টাকার বেশি আত্মসাতের অভিযোগে জুনের শেষ দিকে রাজধানীর বনানী থানায় মামলা করে দুদক। সেখানে বর্তমান ও সাবেক তিন ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ ব্যাংক-সংশ্লিষ্ট মোট ১২ কর্মকর্তাকে আসামি করা হয়। এরপর গ্রেফতার এড়াতে তারা গা-ঢাকা দিয়েছেন বলে জানান দুদক কর্মকর্তারা। এর আগে এবি ব্যাংকের অফশোর ব্যাংকিং ইউনিটের কার্যক্রম নিয়েও অনিয়ম পায় বাংলাদেশ ব্যাংক। প্রথম প্রজন্মের বেসরকারি ব্যাংকটির খেলাপি ঋণও দিন দিন বাড়ছে।

এসব কারণে গত মে মাসে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিদর্শন বিভাগের মহাব্যবস্থাপক শেখ মোজাফফর হোসেনকে পর্যবেক্ষক হিসেবে এবি ব্যাংকে পাঠায় বাংলাদেশ ব্যাংক। পর্ষদ সভায় অংশ নিয়ে তিনি ব্যাংকের কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ও দক্ষতা বাড়ানোর লক্ষ্যে কাজ করছেন।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত হিসাব বছরের জন্য ১২ দশমিক ৫ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ সুপারিশ করেছে এবি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ। এজিএম ও লভ্যাংশের রেকর্ড ডেট ছিল ১২ জুন। গেল হিসাব বছরে ব্যাংকটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয় ২ টাকা ২৫ পয়সা, আগের হিসাব বছরে যা ছিল ২ টাকা ১৫ পয়সা। ৩১ ডিসেম্বর ব্যাংকের শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়ায় ৩৬ টাকা ১০ পয়সায়।

এদিকে চলতি হিসাব বছরের প্রথমার্ধে (জানুয়ারি-জুন) ৮৯ পয়সা ইপিএস দেখিয়েছে এবি ব্যাংক, আগের বছর একই সময়ে যা ছিল ১ টাকা ৪৬ পয়সা। ৩০ জুন এনএভিপিএস দাঁড়ায় ৩৬ টাকা ৫৫ পয়সায়।

ক্রেডিট রেটিং এজেন্সি অব বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিআরএবি) সর্বশেষ প্রত্যয়ন অনুসারে দীর্ঘমেয়াদে এবি ব্যাংকের ঋণমান ‘এ ওয়ান’ ও স্বল্পমেয়াদে ‘এসটি-টু’।

এর আগে ২০১৫ ও ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত হিসাব বছরের জন্যও ১২ দশমিক ৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

ডিএসইতে এবি ব্যাংক শেয়ারের সর্বশেষ দর ছিল ২১ টাকা। গত এক বছরে এ শেয়ারের সর্বোচ্চ দর ছিল ২৭ টাকা ৮০ পয়সা ও সর্বনিম্ন ১৫ টাকা ৩০ পয়সা।

১৯৮৩ সালে তালিকাভুক্ত এবি ব্যাংকের অনুমোদিত মূলধন ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ও পরিশোধিত মূলধন ৬৭৩ কোটি ৮৯ লাখ ৪০ হাজার টাকা। রিজার্ভ ১ হাজার ৬৮৩ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। কোম্পানির মোট শেয়ারের ৩৬ দশমিক ৫৮ শতাংশ এর উদ্যোক্তা-পরিচালকদের কাছে, বাংলাদেশ সরকার দশমিক ৫৭, প্রতিষ্ঠান ২৮ দশমিক ৩, বিদেশী ১ দশমিক ৮৮ ও বাকি ৩২ দশমিক ৬৭ শতাংশ শেয়ার রয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে।

বোনাস শেয়ার সমন্বয়ের পর সর্বশেষ এজিএমে অনুমোদিত নিরীক্ষিত ইপিএস ও বাজারদরের ভিত্তিতে এ শেয়ারের মূল্য আয় (পিই) অনুপাত ৯ দশমিক ৮১, হালনাগাদ অনিরীক্ষিত মুনাফার ভিত্তিতে যা ১১ দশমিক ৮৫।

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন: