facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ৩০ এপ্রিল মঙ্গলবার, ২০২৪

Walton

প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগে ইতিবাচক পুঁজিবাজার


২৫ জানুয়ারি ২০২০ শনিবার, ১২:৪৮  পিএম

নিজস্ব প্রতিবেদক


প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগে ইতিবাচক পুঁজিবাজার

প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগের পর গত রোববার শেয়ারবাজারে বড় ধরনের উত্থান হয়েছে। একদিনে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) মূল্যসূচক ২৩২ পয়েন্ট বেড়েছে। শতকরা হিসাবে যা সাড়ে ৫ শতাংশ। এতে ডিএসইর বাজারমূলধন বেড়েছে ১৫ হাজার কোটি টাকা। একই অবস্থা চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)।

এদিকে শেয়ারবাজারে তারল্য প্রবাহ বাড়ানোর আশ্বাস দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে রোববার এ আশ্বাস দেন গভর্নর ফজলে কবির। এদিকে বাজারের এ অবস্থাকে ইতিবাচক হিসাবে দেখছেন সংশ্লিষ্টরা।

এ ব্যাপারে ডিএসইর পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমন বলেন, টানা দরপতনে বাজার তলানিতে এসেছিল। এরপর বাজার উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী উদ্যোগ নিয়েছেন। আর স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগে বিনিয়োগকারীরা আশার আলো দেখছেন। বাজারে তারই প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের শেয়ারবাজার অত্যন্ত সম্ভাবনাময়। দেশের শিল্পায়নের বিকাশে এই সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে হবে। এক্ষেত্রে বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়িয়ে বাজারকে শক্তিশালী করা জরুরি। আশা করি প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগে সেদিকেই যাবে বাজার।

বিপর্যস্ত শেয়ারবাজার টেনে তুলতে খোদ সরকার নজর দিয়েছে। এ লক্ষ্যে ইতিমধ্যে সুনির্দিষ্ট ৬টি উদ্যোগ নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এছাড়াও রাষ্ট্রায়ত্ত ৪ ব্যাংক থেকে নতুন করে বিনিয়োগের ঘোষণা দেয়া হয়েছে। এসব উদ্যোগের পর রোববারই ছিল প্রথম লেনদেন। আর লেনদেনের শুরু থেকেই বাড়তে থাকে বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ারের দাম। দিনের শেষ সময় পর্যন্ত এ ধারা অব্যাহত ছিল। বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ডিএসইতে রোববার ৩৫৬টি কো¤পানির ১৬ কোটি ৯ লাখ ৬৩ হাজার ৪২২টি শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের লেনদেন হয়েছে। ডিএসইতে আজ মোট লেনদেনের পরিমাণ ৪১১ কোটি ৩৬ লাখ ৬৯ হাজার ৪৩৭ টাকা। এর মধ্যে দাম বেড়েছে ৩৪৬টি কোম্পানির শেয়ারের, কমেছে ৬টি এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৪টি কোম্পানির শেয়ারের দাম। ডিএসইর ব্রড সূচক আগের দিনের চেয়ে ২৩২ পয়েন্ট বেড়ে ৪ হাজার ৩৮২ পয়েন্টে উন্নীত হয়েছে। ডিএসই-৩০ মূল্যসূচক আগের দিনের চেয়ে ৮০ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৪৮৭ পয়েন্টে উন্নীত হয়েছে। ডিএসই শরীয়াহ সূচক আগের দিনের চেয়ে ৫৭ পয়েন্ট বেড়ে ৯৯৭ পয়েন্টে উন্নীত হয়েছে। ডিএসইর বাজারমূলধন আগের দিনের চেয়ে বেড়ে ৩ লাখ ৩৪ হাজার কোটি টাকায় উন্নীত হয়েছে।

সিএসই : চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে রোববার ২৫৭টি প্রতিষ্ঠানের ১ কোটি ৩২ লাখ শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যার মোট মূল্য ৪৩ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। এর মধ্যে দাম বেড়েছে ২৩১টি কোম্পানির শেয়ারের, কমেছে ১৫টি এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১১টি কোম্পানির শেয়ারের দাম। সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক আগের দিনের চেয়ে ৬৭৭ পয়েন্ট বেড়ে ১৩ হাজার ২৭৭ পয়েন্টে উন্নীত হয়েছে। সিএসই ৩০ মূল্যসূচক আগের দিনের চেয়ে ৬৪৩ পয়েন্ট বেড়ে ১১ হাজার ৫১০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। সিএসইর বাজারমূলধন আগের দিনের চেয়ে বেড়ে ২ লাখ ৬১ হাজার কোটি টাকায় উন্নীত হয়েছে।

শীর্ষ দশ কোম্পানি : রোববার ডিএসইতে যেসব কোম্পানির শেয়ার বেশি লেনদেন হয়েছে সেগুলো হল- স্কয়ার ফার্মা, সিঙ্গার বিডি, লাফার্জ হোলসিম বাংলাদেশ, খুলনা পাওয়ার কোম্পানি, এসএস স্টিল, গ্রামীণফোন লিমিটেড, এডিএন টেলিকম, এনসিসি ব্যাংক, রিং সাইন টেক্সটাইল এবং ব্যাংক এশিয়া। এদিন যেসব কোম্পানির শেয়ারের দাম বেশি বেড়েছে সেগুলো হল- বেক্সিমকো ফার্মা, আইসিবি, স্টাইলক্র্যাফট লিমিটেড, হাইডেলবার্গ সিমেন্ট, দেশ গার্মেন্টস, সোনার বাংলা ইন্স্যুরেন্স, আজিজ পাইপস, বিডি ল্যাম্পস, জেমিনী সি ফুড এবং বঙ্গজ লিমিটেড। অন্যদিকে যেসব প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বেশি কমেছে সেগুলো হল- এসএস স্টিল, ইস্টার্ন ব্যাংক এনআরবি মিউচুয়াল ফান্ড, স্ট্যান্ডার্ড সিরামিকস, জুট স্পিনার্স, এলআর গ্লোবাল মিউচুয়াল ফান্ড-১, প্রগ্রেসিভ লাইফ ইন্স্যুরেন্স, এবিবি ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড, অলটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ, বিডি সার্ভিসেস এবং ঢাকা ডাইং।

তারল্য বাড়াতে উদ্যোগ নেবে বাংলাদেশ ব্যাংক : পুঁজিবাজার স্থিতিশীলতা এবং তারল্য সংকট কাটাতে ইতিবাচক পদক্ষেপ নিচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। যা চলতি সপ্তাহেই বাস্তবায়ন করবে বলে আশ্বস্ত করেছে ব্যাংক ও আর্থিক খাতের এ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা। রোববার বর্তমান পুঁজিবাজার পরিস্থিতি নিয়ে বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈঠকে এ আশ্বাস দেন গভর্নর ফজলে কবির। বৈঠক বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, বর্তমান পুঁজিবাজার নিয়ে আজকে বিএমবিএর সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। সভায় পুঁজিবাজারের বিস্তারিত আলোচনার পাশাপাশি বিএমবিএর প্রস্তাবিত বিশেষ তহবিল নিয়ে আলোচনা হয়। গভর্নর তাদের আশ্বস্ত করেছেন এ বিষয়ে নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে আলোচনা চলছে এবং পুঁজিবাজারের বিষয়ে দীর্ঘমেয়াদি সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। একই সঙ্গে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনার পর শিগগিরই বিস্তারিত বিষয়ে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত জানানো হবে। তিনি বলেন, পুঁজিবাজার স্থিতিশীলতায় তারল্য সংকট নিরসন ও প্রয়োজনীয় নীতি সহায়তা দিতে পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। যা নির্দেশনা আকারে জারি করা হবে। যাতে পুঁজিবাজার দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীলতায় কাজ করে।

বিএমবিএ সভাপতি ছায়েদুর রহমান বলেন, পুঁজিবাজারে এখন তারল্য সংকট চলছে। এ বিষয়টি আমরা বাংলাদেশকে জানিয়েছি। বাংলাদেশ ব্যাংক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়ে আশ্বাস দিয়েছেন। পাশাপাশি পুঁজিবাজারে তহবিল সহযোগিতা দেয়ার বিষয়ে কাজ করছে বলে জানিয়েছেন গভর্নর। তিনি আরও জানান, পুঁজিবাজারের সহযোগিতা দেয়ার বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের মতামত চেয়েছিল অর্থ মন্ত্রণালয়। সহযোগিতার বিষয়টি ইতিবাচকভাবে বিবেচনা করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। চলতি সপ্তাহেই প্রস্তাব আকারে অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে। এর আগে বর্তমান পুঁজিবাজারে তারল্য সংকট কাটাতে ১০ হাজার কোটি টাকার একটি তহবিল চেয়ে প্রস্তাব দেয় বিএমবিএ। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, বর্তমান তারল্য সংকট কাটাতে ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করা হবে, এটা কোন মাধ্যমে দেয়া হবে তা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন: