facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ৩০ এপ্রিল মঙ্গলবার, ২০২৪

Walton

এস এস স্টিলের প্রতারণার ভয়াবহ তথ্য ফাঁস, ব্যবস্থা নেয়ার দাবি


২৫ অক্টোবর ২০২০ রবিবার, ০২:২০  পিএম

নিজস্ব প্রতিবেদক

শেয়ার বিজনেস24.কম


এস এস স্টিলের প্রতারণার ভয়াবহ তথ্য ফাঁস, ব্যবস্থা নেয়ার দাবি

শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত এসএস স্টিলের নানা প্রতারণার তথ্য একের পর এক বেরিয়ে আসছে। শেয়ারবিজনেস২৪ডট কমে তাদের অনেক গোমর বেরিয়ে আসার পর অন্য মিডিয়াও তাদের সম্পর্কে খবর প্রকাশ শুরু করেছে। কোম্পানিটির বিরুদ্ধে প্লেসমেন্ট শেয়ার জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠে। এমন কি আইপিও অনুমোদনের প্রসপেক্টাসে বাড্ডায় তাদের নিজস্ব ফ্লোর দাম এক কোটি টাকার কিছু বেশি অথচ এসএস স্টিল সেই ফ্লোরের দাম দেখিয়েছে ২৪ কোটি টাকার বেশি।

এ ব্যাপারে আলোচিত সংবাদ নামে একটি মিডিয়া একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। যা শেয়ারবিজনেস২৪ডট কম এর পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হল-

এস এস স্টিলের চেয়ারম্যানের নামে-বেনামে প্রায় ১৭২ কোটি টাকার অবৈধ প্লেসমেন্ট শেয়ার রয়েছে। 

এস এস স্টিলের পরিশোধিত মূলধন ছিল মাত্র ১০ কোটি টাকা। ২১০ কোটি টাকার পরিশোধিত মূলধন ২৮ জুন ২০১৬ তারিখে যোগ হয়েছে। ২১০ কোটি টাকা উত্তোলনের জন্য যে IM(information memorandum) তৈরি করা হয়েছিল সে তথ্য অনুযায়ী ২১০ কোটি টাকা থেকে ১৭০ কোটি টাকা ব্যাংক লোন পরিশোধ করার কথা ছিল। ৩০/০৯/২০১৫ তারিখে Total Equity & Liabilities ২৯৮.৫৪ কোটি টাকা এবং ৩০/০৬/২০১৬ তারিখে তা ৫০২.২০ কোটি টাকা। যা IM অনুযায়ী ব্যাংক লোন পরিশোধ হলে ৩০/০৬/২০১৬ তারিখে Total Equity & Liabilities ৫০২.২০ কোটি টাকা থেকে অন্তত ১৫০ কোটি টাকা কমে ৩৫২.২০ কোটি টাকা হতো।

এদিকে ২১০ কোটি টাকার মধ্যে অধিকাংশ প্লেসমেন্ট শেয়ার ভুয়া। যার সিংহ ভাগ জাভেদ অপগেনহেপেন ও তার সহধর্মিণী নাবিহা ইয়াসমিন সহ তাদের কিছু অস্তিত্বহীন প্রতিষ্ঠানের নামে আছে। এস এস স্টিলের IM (Information Memorandum) এর তথ্য অনুযায়ী MTB (মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক ) এর লোন পরিশোধের কথা ছিল। ৮/০৬/২০১৬ ইং ১১২ কোটি টাকা ব্যাংক এশিয়া থেকে লোন টেকওভার হয় MTB তে (মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক) । MTB এর লোন পরিশোধের ১১২ কোটি টাকার pay-order দেখিয়ে তার সমপরিমাণের প্লেসমেন্ট শেয়ার জাভেদ অপগেনহেপেন ও তার সহধর্মিণী নাবিহা ইয়াসমিনের নামে নেওয়া হয়েছে।

তাছাড়া জাভেদ অপগেনহেপেনের অস্তিত্বহীন কিছু প্রতিষ্ঠানের নামে আছে প্রায় -১২ কোটি ৬০ লাখ ৫৭ হাজার ৯ শ প্লেসমেন্ট শেয়ার। যার বর্তমান মূল্য- ১৭১ কোটি ৪৩ লাখ ৮৭ হাজার ৪৪০ টাকা। এরমধ্যে nj holding ltd এর ৫,০০০,০০০ প্লেসমেন্ট শেয়ার,al dewan technical services llc এর ৮,৫৪১,২১২ প্লেসমেন্ট শেয়ার,shorecap holding ltd এর ৯,৯৯১,০০০ প্লেসমেন্ট শেয়ার,a.j corporation ltd এর ৫,০০০,০০০ প্লেসমেন্ট শেয়ার, AAJ Ltd এর ৫,০০০ প্লেসমেন্ট শেয়ার এবংfortune wealth management ltd এর ৫,০০০,০০০ প্লেসমেন্ট শেয়ার।

 

Rjsc-এর তথ্য অনুযায়ী এস এস স্টিলের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান shorecap holding ltd-এর রেজিস্ট্রেশন ২০১৯ সালে অথচ এস এস স্টিলের প্রসপেক্টাস এর ২৭ পৃষ্ঠা তথ্য অনুযায়ী প্লেসমেন্ট শেয়ার ইস্যুর সর্বশেষ কার্যক্রম ছিল ২০১৬ সালে কিন্তু shorecap holding ltd-এর রেজিস্ট্রেশন ২০১৯ সালে যে প্রতিষ্ঠানের জন্মই হয়নি ২০১৬ সালে সে প্রতিষ্ঠান নামে রয়েছে প্রায় ১০ কোটি টাকার প্লেসমেন্ট শেয়ার।

অন্যদিকে pearl trade center-এ অবস্থিত এসএস স্টিলের কর্পোরেট অফিসের দলিল নং-৫৪৭৪ এর প্রসপেক্টাসে দলিল মূল্য কত?৫৫০০ বর্গফুট অফিসের প্রসপেক্টাসে উল্লেখ করা দলিল মুল্য-২৪,২০,৩০,৫০০/= চবিশ কোটি বিশ লাখ ত্রিশ হাজার পাঁচশ টাকা।দলিল নং -৫৪৭৪ এর প্রকৃত মূল্য ১,০৩,৬৮,০০০/= এক কোটি তিন লক্ষ আটষট্টি হাজার টাকা। প্রসপেক্টাসে দলিলের প্রকৃত মূল্য থেকে ২০ গুণ বেশি(২৪,২০,৩০,৫০০-১,০৩,৬৮,০০০= ২৩ কোটি ১৬ লাখ ৬২ হাজার ৫০০ টাকা। অর্থাৎ জাভেদ অপগ্যানহ্যাপেন তেইশ কোটি ষোল লাখ বাসট্টি হাজার পাঁচশ টাকা বেশি দেখিয়েছেন।

তাছাড়া এস এস স্টিল ২০১৮-২০১৯ সালের বার্ষিক প্রতিবেদন (Annual Report) এর তথ্য অনুযায়ী ১৪.৫০ কোটি টাকার ভুয়া এফ ডি আর (fixed deposit receipt) দেখিয়েছে ।বার্ষিক প্রতিবেদন এর ৫৫ পৃ: note ৯.০২ এর তথ্যনুযায়ী এফ ডি আর এ এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেড এর ২.৫০ কোটি টাকা এবং ট্রাস্ট ব্যাংক লিমিটেড এর ১২ কোটি টাকা ভুয়া এফ ডি আর দেখানো হয়েছে।

স্থায়ী বিনিয়োগ: প্রসপেক্টাসে তথ্য ও আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী জানা যায় কোম্পানি কয়েক বছর ধরে এস এস স্টিল কোম্পানিটি স্থায়ী বিনিয়োগ দেখিয়ে আসছে। বিল্ডিং ও সিভিল খাতে কয়েক বছর ধরেই চলছে বিনিয়োগ। প্রতিবছরের অবাক করা বিনিয়োগ গুলো যে কাউকে ভাবতে বাধ্য করাবে , আসলে কি বিনিয়োগ হচ্ছে নাকি কারসাজির আর্থিক প্রতিবেদনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ সেই বিল্ডিং ও সিভিল খাত।

২০১৮-২০১৯ সালের বার্ষিক প্রতিবেদন এর তথ্য অনুযায়ী স্থায়ী বিনিয়োগ প্রায় ১৪ কোটি টাকার ভিতর বিল্ডিং ও সিভিল খাতে হয়েছে ১২.৩৩ কোটি টাকা।নতুন করে কত বর্গফুট বিল্ডিং তৈরি হলো তা এখানে বলা নেই এক বছরে ১২.৩৩ কোটি টাকা ওই খাতে খরচ সম্ভব কিনা তা ভেবে দেখার বিষয়। এস এস স্টিল এর ২০১৮-২০১৯ এর বার্ষিক প্রতিবেদন কারসাজি করা। যা বিনিয়োগকারীদেরকে মারাত্নক ভাবে প্রভাবিত করছে এবং অচিরেই ক্ষতিগ্রস্ত হবে বিনিয়োগকারীরা।

এদিকে কোম্পানিটির এ ধরনের প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ডের জন্য কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ডিএসই, সিএসই ও বিএসইসির প্রতি দাবি জানিয়েছেনজানিয়েছেন বিনিয়োগকারীরা। 

আরো পড়ুন- 

এবার এসএস স্টিল দিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার পাঁয়তারা

 

 

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন: