facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ২৬ এপ্রিল শুক্রবার, ২০২৪

Walton

নারীদের অপহরণ ঠেকাতে ট্যাটু কৌশল!


২৯ ডিসেম্বর ২০১৬ বৃহস্পতিবার, ০৪:১৯  পিএম

শেয়ার বিজনেস24.কম


নারীদের অপহরণ ঠেকাতে ট্যাটু কৌশল!
কন্যাশিশুর বয়স ১২ থেকে ১৪ বছর হলেই কুৎসিতভাবে সাজানোর রীতি শুরু হয়। এটি চলে মৃত্যু পর্যন্ত।

নারীদের অপহরণের হাত থেকে বাঁচাতে এক অভিনব কৌশল আবিষ্কার করেছেন মিয়ানমারের আদিম এক জনগোষ্ঠী।

প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ার পর সুন্দরী তরুণীরা যাতে অপহরণের শিকার না হন সেজন্য কৌশল অবলম্বন করে ‘চিন’ নামে মিয়ানমারের আদিম জনগোষ্ঠী। সেখানে একজন কন্যাশিশু প্রাপ্ত বয়স্ক হলে তার শরীরে কুৎসিত কালো রঙের ট্যাটু এঁকে দেওয়া হয়। কারণ নারীরা দেখতে কুৎসিত হলে রাজাদের নজর পড়বে না। আর রাজাদের নজর না পড়লে অপহরণ হওয়ারও আশঙ্কা নেই।

সম্প্রতি তাহ হান লিন নামের এক ফটোগ্রাফার মিয়ানমারের চিন রাজ্যে ভ্রমণে গিয়েছিলেন। ওই সময় তিনি চিন নামের এ জনগোষ্ঠীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে মিশে তাদের জীবনধারণ সম্পর্কে অনেক তথ্য সংগ্রহ করেন। আর ফেরার সময় তাদের কিছু ছবিও তুলে আনেন তিনি।

সেখানে তিনি আবিষ্কার করেন, চিন জনগোষ্ঠীটি হাজার বছর ধরে তাদের ঐতিহ্যবাহী একটি রীতি মেনে আসছেন। তারা তাদের শরীরে কুৎসিতভাবে ট্যাটু আঁকেন যেন দেখতে খুব খারাপ দেখায় এবং তাদের উপর কোনো পুরুষের নজর না পড়ে। তাদের এ বিশ্বাসের পেছনে সুদীর্ঘ ইতিহাস আছে।

জানা যায়, আগের দিনে রাজারা তাদের জনগোষ্ঠীকে শাসন করতেন। তারা নিজেদের রাজা হিসেবে তাদের সম্মানও করতেন। কিন্তু রাজাদের সঙ্গে ঝামেলা হতো নারী নিয়ে। রাজারা একের অধিক উপপত্নী রাখতেন। আর উপপত্নীগুলো হলো এলাকার কোনো না কোনো প্রজার সুন্দরী কিশোরী কন্যা বা স্ত্রী। অর্থাৎ রাজারা রাজ্যের ভেতরে কোনো সুন্দরী নারী দেখলেই তাকে অপহরণ করে নিয়ে যেতেন। এ কারণে চিন নারীরা তাদের কন্যাশিশুকে রাজাদের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য কুৎসিতভাবে সাজাতেন যেন তাকে সুন্দরী না দেখায়। তখন থেকেই শরীরে কালো ট্যাটু ও কানে বড় বড় রিং পরার প্রচলন শুরু হয়। এরপর থেকেই চিনা নারীরা পদ্ধতিটি অনুসরণ করে আসছেন।

তাদের এ ট্যাটু আঁকাও খুবই কঠিন ও যন্ত্রণাদায়ক। এক নারীর শরীরে ট্যাটু আঁকতে পুরো একদিন সময় লাগে। শরীরে যে অংশে ট্যাটু আঁকা হয় সেই অংশে লোহার অস্ত্র দিয়ে কেটে তার উপর গরু ছাগল বা ভেড়ার কালো চর্বি লাগানো হয় ট্যাটু আঁকতে। একবার ট্যাটু আঁকলে প্রায় ৬ থেকে ৭দিন স্থায়ী হয়। তারপর আবার একই ভাবে ট্যাটু আঁকা চলতে থাকে মৃত্যু পর্যন্ত।

এ ট্যাটু আঁকতে নারীদের খুব যন্ত্রণা সইতে হয়। তাই দির্ঘদিন ধরে চিন জনগোষ্ঠীর এক অংশ এর বিরোধীতা করে আসছিলেন। এই বিরোধীতার প্রেক্ষিতে মিয়ানমার সরকার ১৯৬০ সালে এই রীতি নিষিদ্ধ করেন। তারপরও এক অংশ এই রীতি মেনে আজও  শরীরে ট্যাটু এঁকে আসছেন।

তাহ হান লিন বলেন, ‘আমি মিয়ানামার যাওয়ার পরই ভাবলাম সেখানে কোনো আদিম জনগোষ্ঠী থাকলে তাদের সম্পর্কে একটু তথ্য সংগ্রহ করবো। খোঁজ নিয়ে সেখানে চিন জনগোষ্ঠী সম্পর্কে জানতে পারলাম। তারা তাদের নারীদের অপহরণ ঠেকাতে এক অদ্ভুত পদ্ধতি গ্রহণ করেন। শরীরে কালো রঙের ট্যাটু আঁকার রীতিও তাদের মধ্যে একটি। এটি নারীদের জন্য খুবই ভয়ঙ্কর ও যন্ত্রণাদায়ক। তাই ১৯৬০ সাল থেকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তারপরও অনেক বৃদ্ধ নারী এই রীতি আজও  ধারণ করে আসছেন।’

ভিডিও:

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন: