facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ২৬ এপ্রিল শুক্রবার, ২০২৪

Walton

আর্থিক ও বীমা খাতে মাত্রা ছাড়া দরপতন


২১ মে ২০১৭ রবিবার, ০৫:১৭  পিএম

শেয়ার বিজনেস24.কম


আর্থিক ও বীমা খাতে মাত্রা ছাড়া দরপতন

দেশের দুই শেয়ারবাজারে গত সপ্তাহে লেনদেন হওয়া ৬১ শতাংশেরও বেশি শেয়ারের দরপতন হয়েছে। তবে অন্য যে কোনো খাতের তুলনায় ব্যাংক, ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং বীমা খাতের দরপতন অনেকটাই মাত্রা ছাড়া। এ তিন খাতের শেয়ারের দরপতন শেয়ারবাজারের সার্বিক দরপতনকেও উস্কে দিচ্ছে।

প্রধান শেয়ারবাজার ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী, গত সপ্তাহে এ বাজারে লেনদেন হয়েছে ৩৩১ কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড। এর মধ্যে ২০২টিই দর হারিয়েছে। বেড়েছে ১০৩টির ও অপরিবর্তিত থেকেছে ২৬টির দর।
 
এর মধ্যে আলোচিত তিন খাতের ১০০ তালিকাভুক্ত কোম্পানির মধ্যে ৭৩টিই দর হারিয়েছে, বেড়েছে মাত্র ১৭টির ও অপরিবর্তিত ছিল বাকি ১০টির দর। ডিএসইতে দর হ্রাসের শীর্ষ ১০ কোম্পানির মধ্যে এ তিন খাতের কোম্পানিই ছিল ৯টি। বিপরীতে মিউচুয়াল ফান্ড ও করপোরেট বন্ড ব্যতীত অন্য ১৫ খাতের ১৯৬টি কোম্পানির মধ্যে ১০৯টির দর কমেছে, বেড়েছে ৭৭টির দর ও বাকি ৯টির দর ছিল অপরিবর্তিত। মিউচুয়াল ফান্ডের ৩৫টির মধ্যে দর কমেছে ২০টির।

আর্থিক ও বীমা খাতের অধিকাংশ কোম্পানির দরপতন বিষয়ে বাজারসংশ্লিষ্টরা জানান, এসব কোম্পানির প্রায় সবগুলোর গত হিসাব বছরের জন্য লভ্যাংশ প্রদান শেষ হয়েছে। ইতিমধ্যে অনেকগুলোর বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) সম্পন্ন হয়েছে। ফলে আগামী প্রায় এক বছরে কোম্পানিগুলো থেকে বিনিয়োগকারীরা সরাসরি কোনো মুনাফা পাবেন না।

উল্টো দিকে জুনে হিসাব বছর সমাপ্ত হওয়া বাকি উৎপাদন ও সেবামুখী কোম্পানিগুলোর হিসাব বছর শেষ হয়ে আসছে। এ অবস্থায় বিনিয়োগকারীরা ওই সব কোম্পানির দিকে ঝুঁকছেন। বিনিয়োগ হস্তান্তরের এ প্রবণতায় খাত তিনটির দর কমছে। তবে এ তিন খাতের বাজার মূলধন বেশি হওয়ায় কোম্পানিগুলোর শেয়ারের সামান্য দরপতনেই বাজার সূচকে বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব ফেলে, যা সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে দরপতন বিষয়ে মনস্তাত্তি্বক চাপ বাড়ায়। এতে অনেকেই নতুন করে বিনিয়োগে না যাওয়ার নীতি গ্রহণ করে।

কেউ কেউ লোকসানে শেয়ার বিক্রি করে সম্ভাব্য লোকসানের ভার এড়াতে চান। এতে দরপতন ত্বরান্বিত হয়।

ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী, গত সপ্তাহে এ বাজারের প্রধান সূচক ডিএসইএক্সের পতন হয়েছে ৯৬ পয়েন্ট বা পৌনে ২ শতাংশ। এতে সূচকটি প্রায় সাড়ে তিন মাস পর আবারও ৫৪০০ পয়েন্টের নিচে নেমেছে। সর্বশেষ অবস্থান ছিল ৫৩৯৯ পয়েন্টে। এ বাজারের অপর দুই সূচক ডিএস-৩০ ১ দশমিক ৫৯ শতাংশ হারিয়ে ১৯৯১ পয়েন্টে এবং ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক ১ দশমিক ৪৩ শতাংশ হারিয়ে ১২৫৫ পয়েন্টে নেমেছে।

ডিএসইর খাতওয়ারি লেনদেন পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ব্যাংক খাতের ৩০ কোম্পানির মধ্যে ১৭টির দর কমেছে। এতে এ খাতের সার্বিক দরপতন হয়েছে প্রায় ২ শতাংশ। বীমা খাতের ৪৭ কোম্পানির মধ্যে ৩৫টির দর কমার কারণে এ খাতেরও সার্বিক দরপতন হয়েছে প্রায় ২ শতাংশ। তবে ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতের ২৩ কোম্পানির মধ্যে ২১টিরই দরপতন হওয়ায় এ খাতের সার্বিক দরপতন হয়েছে প্রায় সাড়ে ৫ শতাংশ। এ ছাড়া বস্ত্র খাতের ৪৭ কোম্পানির মধ্যে ৩৩টির দর কমেছে। সিমেন্ট খাতের ৭ কোম্পানির মধ্যে ৫টির দর কমেছে। নিম্নমুখী ধারা ছিল টেলিযোগাযোগ এবং সেবা ও নির্মাণ খাতে। অন্য খাতগুলোতে ছিল মিশ্রধারা।

সর্বশেষ বৃহস্পতিবার পাট খাতের তিন কোম্পানির সবগুলোর বাজারদর কমলেও সপ্তাহের সার্বিক হিসাবে তিন কোম্পানিরই বাজারদর বেড়েছে। এতে এ খাতের সার্বিক দরবৃদ্ধি ২১ শতাংশ ছাড়িয়েছে। এ ছাড়া প্রকৌশল খাতের ১৪ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে ১৮টির দর কমলেও এ খাতের সার্বিক দরবৃদ্ধি হয়েছে পৌনে ৫ শতাংশ।

খাতওয়ারি লেনদেন পর্যালোচনায় দেখা গেছে, আগের সপ্তাহের তুলনায় প্রকৌশল খাতের লেনদেন সর্বাধিক প্রায় ১৪৬ কোটি টাকা বেড়ে ৩৯৬ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। তবে বস্ত্র খাতের ৪৫৪ কোটি টাকার লেনদেন ছিল ডিএসইতে খাতওয়ারি লেনদেনের সর্বোচ্চ। এ খাতের লেনদেন আগের সপ্তাহের তুলনায় সাড়ে ৮৩ কোটি টাকা বেশি। জ্বালানি ও বিদ্যুৎ এবং সেবা ও নির্মাণ খাত ছাড়া গত সপ্তাহে অন্য সব খাতের লেনদেন বেড়েছে।

বিপরীতে ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতের লেনদেন ১৮৭ কোটি টাকা কমে ৩৩২ কোটি টাকায় নেমেছে। ব্যাংক খাতের লেনদেন প্রায় ৩০ কোটি টাকা কমে ৩৭০ কোটি টাকায়, বীমা খাতের লেনদেন পৌনে ৩ কোটি টাকা কমে সাড়ে ৩৮ কোটি টাকায় নেমেছে।

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন: