facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ২৭ এপ্রিল শনিবার, ২০২৪

Walton

হাজার কোটি টাকা করে মুনাফা ৬ কোম্পানির


০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ শুক্রবার, ০৩:৪৭  পিএম

স্টাফ রিপোর্টার

শেয়ার বিজনেস24.কম


হাজার কোটি টাকা করে মুনাফা ৬ কোম্পানির

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বাংলাদেশ এক্সপোর্ট ইমপোর্ট কোম্পানি (বেক্সিমকো) লিমিটেড ২০২১-২২ অর্থবছরে নতুন করে এক হাজার কোটি টাকা মুনাফাকারী কোম্পানির তালিকায় যুক্ত হয়েছে। এ নিয়ে দেশের পুঁজিবাজারে এক হাজার কোটি টাকা লাভ করা কোম্পানির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ছয়-এ।

২০২০-২১ অর্থবছরে এ ধরনের কোম্পানির সংখ্যা ছিল পাঁচটি। এর মধ্যে তিনটি স্থানীয় এবং দুটি বহুজাতিক – গ্রামীণফোন, ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, ইউনাইটেড পাওয়ার এবং ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো (বিএটি) বাংলাদেশ।

বাজার সংশ্লিষ্টদের মতে কোভিড-১৯ মহামারি চলাকালে বেক্সিমকোর বিক্রি বাড়ার কারণে আয় ১ হাজার কোটি ছুঁয়েছে।

বেক্সিমকো

বেক্সিমকো গ্রুপের সিস্টার কনসার্ন বেক্সিমকোর ২০২১-২২ অর্থবছরে মুনাফা করেছে ১ হাজার ২৫৭ কোটি টাকা। আগের বছরে কোম্পানিটি ৬৬৩ কোটি টাকা মুনাফা করেছিল।

২০২১-২২ অর্থবছরে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় ( ইপিএস) হয়েছে ১৪ টাকা ৩২ পয়সা। আগের অর্থবছরে এর পরিমাণ ছিল ৭ টাকা ৫৩ পয়সা।

বেক্সিমকো ২০২২ সালের জুন মাসে ৩০ শতাংশ ডিভিডেন্ড দিয়েছে। ২০২২ সালে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য ছিল ৯১ টাকা ১৯ পয়সা।

সর্বশেষ বার্ষিক প্রতিবেদনে বেক্সিমকোর চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান বলেন, ‘কোম্পানিটির ২০২২ সালে দেশের বাজারে বিক্রি এবং রপ্তানি উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। আমরা আশা করি এ ধারা অব্যাহত থাকবে। কোভিড-১৯ পরিস্থিতির উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে ব্যক্তিগত সুরক্ষামূলক সরঞ্জামের (পিপিই) চাহিদা অনেক কমে গেছে।’

গত বৃহস্পতিবার ব্লক মার্কেটে কোম্পানিটির বড় ধরনের বিনিয়োগে ঝুঁকেছেন বিনিয়োগকারীরা। প্রতিষ্ঠানটির লেনদেন হয় ৭ কোটি ২৫ লাখ টাকার বেশি। ওইদিন সর্বশেষ শেয়ার দর ছিল ১১৫ টাকা ৬০ পয়সা।

গত নভেম্বরে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ছিল ২৯ দশকি ৮৮ শতাংশ। আর সদ্য সমাপ্ত ডিসেম্বরে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৩১ দশমিক ৩৫ শতাংশে।

আমার স্টক সূত্রে জানায় যায়, ছয় মাসে বেক্সিমকোর রিটার্ন -৬ দশমিক ১৭।

গ্রামীণফোন

গ্রামীণফোন দেশের বৃহত্তম মোবাইল ফোন অপারেটর এবং বাজার মূলধনের দিক থেকে শীর্ষ প্রতিষ্ঠান। আগের বছরের তুলনায় কোম্পানিটির নিট মুনাফা ৮.২২ শতাংশ বা ৩০৫ কোটি ৮ লাখ টাকা কমে ২০২১ সালে ৩ হাজার ৪১৩ কোটি হয়েছে।

২০২১ সালে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে ২৫ টাকা ২৮ পয়সা। আগের বছর এর পরিমাণ ছিল ২৭ টাকা ৫৪ পয়সা। কোম্পানিটি ২০২১ সালে ১২৫ শতাংশ অন্তর্বর্তী নগদ ডিভিডেন্ড সহ মোট ২৫০ শতাংশ ডিভিডেন্ড দিয়েছে।

গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইয়াসির আজমান বলেছেন, করোনা মহামারি এবং তার সাথে বেশ কয়েকটি প্রতিবন্ধকতার ফলে এর আয় কমেছে।

নরওয়ের টেলিনরের হাতে রয়েছে গ্রামীণফোনের ৫৫.৮ শতাংশ শেয়ার। স্থানীয় প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ টেলিকম কোম্পানির হাতে ৩৪.২ শতাংশ শেয়ার রয়েছে এবং বাকি ১০ শতাংশ প্রাতিষ্ঠানিক এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে।

গত নভেম্বরে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ছিল ৫ দশকি ৫১ শতাংশ। আর সদ্য সমাপ্ত ডিসেম্বরে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৫ দশমিক ৫৪ শতাংশে।

আমার স্টক সূত্রে জানায় যায়, ছয় মাসে রিটার্ন -৪ দশমিক ০২।

স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস

এটি দেশের শীর্ষস্থানীয় ওষুধ প্রস্তুতকারক এবং স্কয়ার গ্রুপের একটি সহযোগী প্রতিষ্ঠান। এর নিট মুনাফা ২০২২ অর্থবছরে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৬৪২ কোটি টাকা। গত অর্থবছরে এর পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৪৭৪ কোটি টাকা।
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর মধ্যে এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মুনাফা অর্জনকারী প্রতিষ্ঠান।

স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস ২০২১-২২ অর্থবছরে রপ্তানি আগের বছরের চেয়ে ১২.৫৮ শতাংশ বেড়েছে।

গত অর্থবছরে কোম্পানিটি রপ্তানি বাবদ ১৭০ কোটি আয় করেছে। আগের বছরে এর পরিমাণ ছিল ১৫১ কোটি টাকা।

কোম্পানিটি তার সাম্প্রতিক বার্ষিক প্রতিবেদনে বলেছে, আধুনিক প্রযুক্তি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার এবং বায়োটেকনোলজি দেশের এবং বিশ্ববাজারে আমাদের অবস্থান সুসংহত করেছে।

স্কয়ার ফার্মার ওষুধগুলি এখন ৪৫ টিরও বেশি দেশে রপ্তানি হয়।

২০২২ অর্থবছরে কোম্পানিটির রাজস্ব আয় হয়েছে ৬ হাজার ৬৪১ কোটি টাকা। আগের বছরে এর পরিমাণ ছিল ৫ হাজার ৮৩৫ কোটি টাকা। সে হিসেবে কোম্পনিটির আয় বছরের ব্যবধানে ১৩.৮১ শতাংশ বেড়েছে।

এর শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) ২০২১-২২ অর্থবছর শেষে ২০ টাকা ৫১ পয়সায় দাঁড়িয়েছে যা আগের বছরে ১৭ টাকা ৯৯ পয়সা ছিল। কোম্পানিটি ২০২২ সালের জুনে শেষ হওয়া অর্থবছরে ১০০ শতাংশ নগদ ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে, যা কোম্পানিটির ইতিহাসে সর্বোচ্চ ঘোষিত ডিভিডেন্ড।

স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তপন চৌধুরী বলেন, চলমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে কোম্পানির এই সফলতাকে উৎসর্গ করেছেন সেই কর্মীদের জন্য যারা মহামারী এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের মতো কঠিন সময়েও কঠোর পরিশ্রম করেছিলেন।

বৃহস্পতিবার ব্লকে ৯ কোটি ৯৪ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে। ব্লকে ২০০ টাকা থেকে ২০৪ টাকায় শেয়ারটির লেনদেন হয়।

গত নভেম্বরে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ ছিল ১৩ দশকি ৫১ শতাংশ। আর সদ্য সমাপ্ত ডিসেম্বরে তা বেড়ে দাঁড়ায় ১৩ দশমিক ৬২ শতাংশে।

আমার স্টক সূত্রে জানায় যায়, ছয় মাসে রিটার্ন -১ দশমিক ০৮।

ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ

এটি একটি স্থানীয় ইলেকট্রনিক্স এবং হোম অ্যাপ্লায়েন্স কোম্পানি যা টিভি, রেফ্রিজারেটর এবং এয়ার-কন্ডিশনারের মতো বিভিন্ন পণ্য সরবরাহ করে। এর নিট মুনাফা ২০২১ সালে আগের বছরের তুলনায় ২৫.৮১ শতাংশ কমে ১ হাজার ২১৬ কোটি টাকা হয়েছে। আগের বছর এর পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৬৩৯ কোটি টাকা।

২০২১-২২ অর্থবছরে কোম্পানিটির বার্ষিক ইপিএস হয়েছে ৪০ টাকা ১৬ পয়সা আগের বছর এর পরিমাণ ছিল ৫৪ টাকা ২১ পয়সা।

কোম্পানিটি তার সাধারণ শেয়ারহোল্ডারদের প্রতি শেয়ারের বিপরীতে ২৫ টাকা নগদ ডিভিডেন্ড প্রদান করেছে কিন্তু কোম্পানির পরিচালকরা শেয়ার প্রতি ১৫ টাকা করে ডিভিডেন্ড নিয়েছিলেন।

২০২৩ এর প্রথম ত্রৈমাসিকে ৪৬ কোটি টাকা লোকসান হওয়ায় ওয়ালটন তার প্রবৃদ্ধি কমেছে। কোম্পানিটি বলেছে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে বিশ্ববাজারে কাঁচামালের মূল্য বৃদ্ধির কারণে উৎপাদন খরচ এবং অন্যান্য ব্যয়ের উচ্চ বৃদ্ধির কারণে সদ্য সমাপ্ত প্রান্তিকে এটি ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। টাকার বিপরীতে ডলারের মূল্যবৃদ্ধিও এর আয়কে প্রভাবিত করেছে।

কোম্পানিটি ২০২২ এর প্রথম ত্রৈমাসিকে ২৮১ কোটি টাকা নিট লাভ করেছে।

গত নভেম্বরে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ ছিল ০ দশমিক ৩৭ শতাংশ। আর সদ্য সমাপ্ত ডিসেম্বরে তা বেড়ে দাঁড়ায় ০ দশমিক ৩৮ শতাংশে।

আমার স্টক সূত্রে জানায় যায়, ছয় মাসে রিটার্ন -০ দশমিক ৭৭।


ইউনাইটেড পাওয়ার

ইউনাইটেড পাওয়ার জেনারেশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি, একটি বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান। ইউনাইটেড পাওয়ার ২০২২ অর্থবছরে ১ হাজার ১৫ কোটি টাকা নিট মুনাফা করেছে। ২০২১ অর্থবছরে এর পরিমাণ ছিল ১ হাজার ১১১ কোটি টাকা। শতাংশের হিসেবে বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির আয় ৮.৬৪ শতাংশ কমেছে।

কোম্পানিটি তার সর্বশেষ বার্ষিক প্রতিবেদনে বলেছে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা, স্থানীয় মুদ্রার দ্রুত অবমূল্যায়নের কারণে তেল কেনার পেছনে ব্যয় উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে যার প্রভাবে কোম্পোনিটির আয় কমেছে।- সূত্র : বিজনেস পোস্ট

২০২২ অর্থবছরে কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের ১৭০ শতাংশ নগদ ডিভিডেন্ড প্রদান করেছে।

গত নভেম্বরে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ ছিল ৭ দশমিক ৩৫ শতাংশ। আর সদ্য সমাপ্ত ডিসেম্বরে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৭ দশমিক ৩৫ শতাংশে।

আমার স্টক সূত্রে জানায় যায়, ছয় মাসে রিটার্ন -১ দশমিক ৮৫।


বিএটি বাংলাদেশ

বিএটি বাংলাদেশ, একটি বহুজাতিক তামাক পণ্য প্রস্তুতকারক কোম্পানি। ২০২১ সালে কোম্পানিটি ১ হাজার ৪৯৭ কোটি নিট মুনাফা করেছে। ২০২০ সালে এর পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৪৯৭ কোটি টাকা। শতাংশের হিসেবে কোম্পানিটির নিট মুনাফা ৩৭.৪৭ শতাংশ বেড়েছে।

বিএটি বাংলাদেশের অর্থ পরিচালক আমুন মুস্তাফিজ সর্বশেষ বার্ষিক প্রতিবেদনে বলেছেন,“,আমরা নতুন পণ্য চালু এবং ব্যবসা সম্প্রসারণের মৌলিক বিষয়গুলিতে মনোনিবেশ করেছি। যার ফলে আমাদের আয় বেড়েছে।

বিএটি বাংলাদেশ তামাকজাত দ্রব্য তৈরি করে, যেমন বেনসন অ্যান্ড হেজেস, জন প্লেয়ার গোল্ড লিফ, ক্যাপস্টান, স্টার, রয়্যালস, লাকি স্ট্রাইক, ডার্বি, পাইলট, পতাকা এবং হলিউড। এটি ১৯৭৭ সালে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত হয়।

বৃহস্পতিবার ব্লকে ২ কোটি ১৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। ৪৭৯ টাকা ৯০ পয়সা থেকে ৪৭৯ টাকা ৮০ পয়সায় লেনদেন হয়।

গত নভেম্বরে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ ছিল ১২ দশমিক ৭৩ শতাংশ। আর সদ্য সমাপ্ত ডিসেম্বরে তা বেড়ে দাঁড়ায় ১২ দশমিক ৭৬ শতাংশে।

আমার স্টক সূত্রে জানায় যায়, ছয় মাসে রিটার্ন -০ দশমিক ৫৯।

 

 

 

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন: