০৩ ডিসেম্বর ২০২২ শনিবার, ১১:২২ এএম
স্টাফ রিপোর্টার
শেয়ার বিজনেস24.কম
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কাছে পুঁজিবাজারে লভ্যাংশ কর প্রত্যাহারসহ বেশ কিছু নীতি সহায়তা চেয়েছে বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমবিএ)।
এনবিআর চেয়ারম্যানের কাছে মঙ্গলবার পাঠানো চিঠিতে সই করেন সংগঠনটির সভাপতি ছায়েদুর রহমান এবং সেক্রেটারি জেনারেল রিয়াদ মতিন।
পুঁজিবাজারকে গতিশীল করে সার্বিক অর্থনীতিতে অবদান বাড়ানোর লক্ষ্যে ৯টি বিষয় বিবেচনার প্রস্তাব দেয়া হয়।
এগুলো হলো- লভ্যাংশের ওপর থেকে কর প্রত্যাহার করতে হবে। এর কারণ হিসেবে বিএমবিএর চিঠিতে বলা হয়, একটি প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানি করপোরেট কর পরিশোধের পর লভ্যাংশ প্রদান করে। সেই লভ্যাংশ থেকে আবার উচ্চহারে কর কর্তন দ্বৈত করের সামিল। তাই বিনিয়োগকারীদের মধ্যে লভ্যাংশ গ্রহণের প্রতি অনীহা। দীর্ঘ মেয়াদী বিনিয়োগ বাড়ানোর জন্য লভ্যাংশের কর প্রত্যাহার করা জরুরি।
তালিকাভুক্ত ও অতালিকাভুক্ত কোম্পানির করপোরেট করহারের পার্থক্য বাড়াতে হবে। বিএমবিএর চিঠিতে বলা হয়, কর কমাতে বলছি না, কেবল তালিকাভুক্ত ও অতালিকাভুক্ত কোম্পানির করের হারের ব্যবধান বাড়ানোর জন্য প্রস্তাব করছি।
তাহলে বৃহৎ বা ভালো প্রতিষ্ঠানসমূহ তালিকাভুক্তিতে আগ্রহী হবে এবং বাজারের আকৃতি ও গভীরতা বৃদ্ধি পাবে। এতে অর্থনৈতিক কর্মকান্ড আরও গতিশীল হবে। বর্তমানে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ হারের ব্যবধান উদ্যোক্তাদের তালিকাভুক্তির জন্য উৎসাহিত করতে পারছে না।
বন্ড বাজারকে গতিশীল করা বা বিনিয়োগে উৎসাহিত করার জন্য কর কাঠামোতে পরিবর্তন আনতে হবে।
চিঠিতে বলা হয়, বন্ড থেকে প্রাপ্ত আয়ের ওপর স্পেশাল রেটে (৫ শতাংশ) কর আরোপ করা যেতে পারে, তাহলে বন্ডে বিনিয়োগে আগ্রহী হবেন বিনিয়োগকারীরা। লেনদেনের (ট্রেডিং) ওপর করহার কমিয়ে শূন্য দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ থেকে শূন্য দশমিক শূন্য এক পাঁচ শতাংশ নির্ধারণ করতে হবে। এতে বাজারে লেনদেনের পাশাপাশি সরকারের করের পরিমাণ বাড়বে। তালিকাভুক্ত কোম্পানির আয়কর নিষ্পত্তি সহজীকরণ করতে হবে। মিউচ্যুয়াল ফান্ডকে জনপ্রিয় করার লক্ষ্যে পলিসি প্রয়োজন এবং এর লভ্যাংশ করমুক্ত হতে হবে। ভালো/বৃহৎ/প্রতিষ্ঠান/এমএনসি/সরকারি লাভজনক প্রতিষ্ঠানগুলোকে তালিকাভুক্তির জন্য পলিসি করতে হবে।
চিঠিতে বলা হয়, ব্যবসার আকার বা ঋণ ও পুঁজির আকারের ভিত্তিতে তালিকাভুক্তির পলিসি করা প্রয়োজন। যত বেশি তালিকাভুক্ত কোম্পানি হবে সরকার তত বেশি কর পাবে। তালিকাভুক্ত কোম্পানির ভ্যাট হার ৫ শতাংশ কমানো যেতে পারে। এতে বৃহৎ প্রতিষ্ঠানগুলো তালিকাভুক্তির জন্য উৎসাহিত হবে। ট্রেডিং গেইন এবং ক্যাপিটাল গেইন একই সংজ্ঞায় সংজ্ঞায়িত না করে আলাদা কর কাঠামোয় আনতে হবে।
সুপারিশগুলো বাস্তবায়নের দাবির যৌক্তিকতা উল্লেখ করে বিএমবিএর চিঠিতে বলা হয়, দেশের অর্থনীতিতে জিডিপির তুলনায় বাজার মূলধন অনুপাত অত্যন্ত নগণ্য (১৭ শতাংশ)। ১৭ থেকে ১৮ কোটি জনসংখ্যার দেশে কর্মসংস্থান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
কর্মসংস্থান তৈরির জন্য শিল্পায়ন, ব্যবসা-বাণিজ্য তথা অর্থনৈতিক কর্মকান্ড বৃদ্ধি করা অত্যন্ত জরুরি। এ লক্ষ্যে অর্থের যোগান বাড়ানো গুরুত্বপূর্ণ। অব্যবহৃত ছোট ছোট সঞ্চয়সমূহকে উৎপাদনমুখী করার একমাত্র মাধ্যম হলো গতিশীল পুঁজিবাজার। পুঁজিবাজার গতিশীল না থাকলে এ ধরনের উদ্যোগ কার্যকর হয় না।
শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।