facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ৩০ এপ্রিল মঙ্গলবার, ২০২৪

Walton

পুঁজিবাজারের উন্নয়নে ব্যাংকঋণ বাধা


২০ এপ্রিল ২০১৯ শনিবার, ১১:৪৯  এএম

নিজস্ব প্রতিবেদক


পুঁজিবাজারের উন্নয়নে ব্যাংকঋণ বাধা

সহজে ব্যাংক থেকে ঋণ পেলে উদ্যোক্তারা মূলধন সংগ্রহের জন্য ব্যাংকিং খাতেই বেশি ঝুঁকবেন। কাঠখড় পুড়িয়ে কেউ আর পুঁজিবাজারে আসতে চাইবেন না। তাই ব্যাংকঋণ সহজলভ্য থাকলে পুঁজিবাজারের উন্নয়ন হবে না। রাজধানীর সিএ ভবনে ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএবি) ও দৈনিক প্রথম আলোর যৌথ আয়োজনে ‘কেমন চাই জাতীয় বাজেট ২০১৯-২০’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা এসব কথা বলেন। গত বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত বৈঠকে প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. মোশাররফ হোসেন ভুঁইয়া।

বৈঠকে পুঁজিবাজারের উন্নয়ন প্রসঙ্গে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সাবেক চেয়ারম্যান ফারুক আহমেদ সিদ্দিকী বলেন, পুঁজিবাজার থেকে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে তহবিল সংগ্রহে এক থেকে দেড় বছর সময় লাগে। অন্যদিকে উদ্যোক্তারা ব্যাংক থেকে সহজেই ঋণ পেয়ে যাচ্ছেন। তাহলে তারা কেন দেড় বছর অপেক্ষা করে পুঁজিবাজার থেকে অর্থ সংগ্রহ করতে যাবেন? ব্যাংকঋণের সহজলভ্যতা থাকলে পুঁজিবাজারের উন্নয়ন হবে না।

দীর্ঘমেয়াদে অর্থায়নের জন্য উদ্যোক্তাদের পুঁজিবাজারমুখী করতে উদ্যোগ নেয়ার তাগিদ জানিয়ে তিনি বলেন, তালিকাভুক্ত ও তালিকা-বহির্ভূত কোম্পানির মধ্যে ১০ শতাংশ কর ব্যবধান থাকা সত্ত্বেও কোম্পানিগুলো পুঁজিবাজারে আসতে চায় না। এর কারণ হচ্ছে তালিকা-বহির্ভূত কোম্পানিগুলো তাদের আয়ের তথ্য গোপন করে ১০ শতাংশ করছাড়ের চেয়েও বেশি সুবিধা নিচ্ছে। তাই তারা পুঁজিবাজারে আসে না। তথ্য গোপনের মাধ্যমে তারা যেন কর ফাঁকি দিতে না পারে, তা নিশ্চিত করতে কঠোর মনিটরিং করতে হবে বলে মনে করেন তিনি।

সাবসিডিয়ারি কোম্পানির ক্ষেত্রে তিন স্তরে কর আরোপের বিষয়ে তিনি বলেন, এ নিয়মের কারণে উদ্যোক্তারা সাবসিডিয়ারি কোম্পানি খুলতে নিরুৎসাহিত হচ্ছেন। এক্ষেত্রে একবার কর প্রদানের নিয়ম চালু করার পাশাপাশি করের হার ১০ শতাংশ করা উচিত। তার মতে, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বাজেট প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়িত হলে প্রতিষ্ঠানগুলো লাভবান হবে, বিনিয়োগকারীদের কোনো উপকার হবে না।

বৈঠকে বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন চৌধুরী ব্যক্তি শ্রেণীর বিনিয়োগকারীদের বিদ্যমান ১০ শতাংশ ডিভিডেন্ড ট্যাক্সকেই চূড়ান্ত কর হিসেবে বিবেচনা করার দাবি জানান। তিনি বলেন, ব্যক্তি বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ বিতরণের সময় সংশ্লিষ্ট কোম্পানি ১০ শতাংশ হারে ডিভিডেন্ড ট্যাক্স কেটে রাখে। লভ্যাংশ থেকে পাওয়া আয়কে বিনিয়োগকারী তার ব্যক্তিগত রিটার্নে প্রদর্শনের সময় আয়কর আইন অনুযায়ী তাকে আবার কর দিতে হয়। পুঁজিবাজারের স্বার্থে কেবল সেই ১০ শতাংশ ডিভিডেন্ড ট্যাক্সকেই চূড়ান্ত করা উচিত।

তিনি আরো বলেন, তালিকাভুক্ত কোম্পানির করপোরেট করহার আরো কমিয়ে তালিকা-বহির্ভূত কোম্পানির ওপর নজরদারি বাড়াতে হবে। ব্রোকারদের টার্নওভারের ওপর বিদ্যমান করহার দশমিক ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে আগের মতো দশমিক ১২৫ শতাংশ করার দাবি জানান তিনি। নাসির উদ্দিন চৌধুরী জানান, মার্চেন্ট ব্যাংকগুলো বিএসইসির লাইসেন্সপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান। অথচ নামের শেষে ব্যাংক থাকার কারণে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মতোই মার্চেন্ট ব্যাংককে সাড়ে ৩৭ শতাংশ হারে কর দিতে হচ্ছে। তিনি মার্চেন্ট ব্যাংকের করপোরেট কর ৩৫ শতাংশ নির্ধারণের দাবি জানান।

বন্ড মার্কেটকে কার্যকর করার জন্য এর ওপর আরোপিত ২ শতাংশ স্ট্যাম্প ডিউটি প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা যখন বন্ড ইস্যু করি, তখন এনবিআর এর ওপর ২ শতাংশ হারে স্ট্যাম্প ডিউটি কেটে নেয়। এটি বন্ড মার্কেটকে কার্যকর করার ক্ষেত্রে বড় অন্তরায়। বন্ডে স্ট্যাম্প ডিউটি প্রত্যাহারের দাবি জানান তিনি। প্রয়োজনে এক্ষেত্রে স্ল্যাবভিত্তিক কর নির্ধারণ করা যেতে পারে বলে মত দেন তিনি।

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন: