facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ০৪ মে শনিবার, ২০২৪

Walton

পাগলা মসজিদে রেকর্ড ভেঙে মিলল পৌনে ৮ কোটি টাকা


২১ এপ্রিল ২০২৪ রবিবার, ১০:২৯  এএম

স্টাফ রিপোর্টার

শেয়ার বিজনেস24.কম


পাগলা মসজিদে রেকর্ড ভেঙে মিলল পৌনে ৮ কোটি টাকা

কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দানবাক্স (সিন্দুক) চার মাস ১০ দিন পর খোলা হয়েছে। এবার টাকা গণনা করে রেকর্ড ৭ কোটি ৭৮ লাখ ৬৭ হাজার ৫৩৭ টাকা পাওয়া যায়। এ ছাড়াও স্বর্ণ ও রূপাসহ বেশ কিছু বৈদেশিক মুদ্রাও পাওয়া গেছে।

শনিবার (২০ এপ্রিল) দিনগত রাত ২টার পর গণনা শেষে দানের টাকার এ হিসাব পাওয়া যায়। এর আগে শনিবার (২০ এপ্রিল) সকালে পাগলা মসজিদের এসব দানবাক্স (সিন্দুক) খোলা হয়। এরপর শুরু হয় দিনব্যাপী টাকা গণনার কাজ এবং রাত ২টার দিকে টাকা গণনার কাজ শেষ হয়।

সাধারণত ৩ মাস পর পর পাগলা মসজিদের দান সিন্দুক খোলা হলেও এবার ৪ মাস ১০ দিন পর সকালে পাগলা মসজিদে ৯টি দানবাক্স ও একটি ট্রাঙ্ক খোলা হয়। মূলত মসজিদের ১০টি দানবাক্সে পাওয়া যায় রেকর্ড ২৭ বস্তা টাকা। দিনভর গণনা শেষ রাত দেড়টার দিকে জানানো হয় টাকার পরিমাণ।

পাগলা মসজিদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা এ কেএম শওকত আলী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, শনিবার সকাল ৮টা থেকে টানা ১৭ ঘণ্টা গণনার পর টাকার পরিমাণ জানা গেছে। টাকা ছাড়াও পাওয়া গেছে বেশ কিছু বিদেশি মুদ্রা ও স্বর্ণালংকার। ভোরে মস‌জি‌দের ৯টি সিন্দুক ও একটি স্টিলের ট্রাঙ্ক খুলে বের করা হয় ২৭ বস্তা টাকা।

ভোরে পাগলা মসজিদে গিয়ে দেখা গেছে, বড় বড় লোহার সিন্দুক খুলে বের করে আনা হচ্ছে টাকা। একটি কিংবা দুটি নয়, গুণে গুণে ৯টি লোহার সিন্দুক আর একটি ট্রাঙ্ক থেকে পাওয়া এসব টাকা। পরে বস্তায় করে নেওয়া হয় মসজিদের দ্বিতীয় তলায়। সেখানে মেঝেতে ঢেলে চলে গণনার কাজ। প্রতি তিন মাস পর এমন দৃশ্য দেখা যায় কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদে। এবার ৪ মাস ১০ দিনের ব্যবধানে মসজিদের দান সিন্দুক খোলা হয়।

শনিবার সকাল সাড়ে ৭টায় জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে মসজিদের বিভিন্ন স্থানে রাখা নয়টি দান সিন্দুক ও একটি অস্থায়ী ট্রাঙ্ক থেকে টাকা সংগ্রহ করা হয়। দানবা‌ক্সে পাওয়া টাকা গণনার কা‌জে অংশ নেন পাগলা মস‌জিদ নূরানী কোরআন হা‌ফি‌জিয়া মাদরাসার ১১২ শিক্ষার্থী, রুপালী ব‌্যাংকের ৫০ কর্মকর্তা কর্মচা‌রিসহ দুই শতা‌ধিক মানুষ। এর আগে ৯ ডিসেম্বর সব‌শেষ মস‌জি‌দের দান সিন্দুক থে‌কে পাওয়া গিয়েছিল ৬ কোটি ৩২ লাখ ৫১ হাজার ৪২৩ টাকা।

মস‌জিদ প‌রিচালনা ক‌মি‌টির সভাপ‌তি কি‌শোরগ‌ঞ্জ জেলা প্রশাসক মো. আবুল কালাম আজাদ জানান, দানের টাকা জমা রাখা হয় মস‌জি‌দের না‌মে খোলা একটি ব‌্যাংক একাউ‌ন্টে। প্রায় ১১৫ কো‌টি টাকা ব‌্যয়ে বহুতল মস‌জিদ কম‌প্লেক্স নির্মা‌ণের উদ্যোগ নেওয়া হ‌য়ে‌ছে। পাগলা মসজিদের টাকা নয়ছয় করার কোনো সুযোগ নেই। সুক্ষ্মভাবে প্রতিটি টাকার হিসাব রাখা হয়। প্রতিবার টাকাগুলো গুনে ব্যাংকের হিসাবে জমা রাখা হয়।

জনশ্রুতি আছে, কোনো এক সময় একজন আধ্যাত্মিক পাগল সাধকের বাস ছিল কিশোরগঞ্জ শহরের হারুয়া ও রাখুয়াইল এলাকার মাঝ দিয়ে প্রবাহিত নরসুন্দা নদীর মধ্যবর্তী স্থানে জেগে ওঠা চ‌রে। ওই পাগল সাধকের মৃত‌্যুর পর এখা‌নে নি‌র্মিত মস‌জিদ‌টি পাগলা মসজিদ হিসেবে প‌রি‌চি‌তি পায়। পাগলা মসজিদে মানত করলে মনের আশা পূর্ণ হয়। এমন ধারণা থেকে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে অসংখ‌্য মানুষ এ মসজিদে দান করে থাকেন। বি‌শেষ ক‌রে প্রতি শুক্রবার এখা‌নে হাজার হাজার মানু‌ষের ঢল না‌মে।

গত বছ‌র পাগলা মস‌জি‌দের দান‌সিন্দুক থে‌কে পা‌ওয়া যায় ২১ কো‌টি, ৫৬ লাখ, ২ হাজার ৩‌৫৮ টাকা। তবে মসজিদের তহবিলে মোট কত টাকা জমা আছে সেটি প্রকাশ করেনি, মসজিদ কমিটি।

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন: