২৩ অক্টোবর ২০২০ শুক্রবার, ০৫:০২ পিএম
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার বিজনেস24.কম
অতিরঞ্জিত আর্থিক প্রতিবেদন নিয়ে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজের বিডিংয়ে যোগ্য বিনিয়োগকারীরা (ইলিজিবল ইনভেস্টর) নীতিমালা অনুযায়ী দর প্রস্তাব দিয়েছে কি-না তার ব্যাখ্যা চাইবে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এছাড়া ৬০ টাকার ঊর্ধ্বে যেসব যোগ্য বিনিয়োগকারী বিডিং দর প্রস্তাব করেছে তাদের কাছেও ব্যাখা চাওয়া হবে।
গত বুধবার কমিশনের ৭৪৫তম সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
এতে বলা হয়, বুকবিল্ডিং পদ্ধতিতে যদি কোনো কোম্পানির বিডিংয়ে ৬০ টাকার বেশি কোনো যোগ্য বিনিয়োগকারী দর প্রস্তাব করে তাহলে, ২০১৮ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি জারি করা বিএসইসির সার্কুলার অনুসারে তাদের কাছে ব্যাখ্যা চাওয়া হবে। ব্যাখ্যা সন্তোষজনক না হলে আইন অনুসারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গত ১৪ সেপ্টেম্বর পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয় ওয়ালটন। বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে কোম্পানিটির শেয়ার প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা সর্বনিম্ন ৩১৫ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৭৬৫ টাকা দর প্রস্তাব করে। আর সাধারণ বিনিয়োগকারীরা নির্দেশক মূল্য (কাট-অব-প্রাইস) ৩১৫ টাকার ওপর ২০ শতাংশ ছাড়ে ২৫২ টাকা দরে লটারিতে বরাদ্দ পান। এর ফলে ১০০ কোটি টাকা মূলধন সংগ্রহ করতে গিয়ে মাত্র ২৯ লাখ ২৮ হাজার ৩৪৩টি শেয়ার ইস্যু করতে হয়েছে, যা কোম্পানির মোট শেয়ারের মাত্র শূন্য দশমিক ৯৭ শতাংশ।
স্বল্প সংখ্যক ফ্রি-ফ্লোট শেয়ার থাকায় গত ২৩ সেপ্টেম্বর লেনদেন শুরুর প্রথম সাত কার্যদিবসে ওয়ালটনের শেয়ারের সর্বোচ্চ দরবৃদ্ধির পরও সেকেন্ডারি বাজারের বিনিয়োগকারীরা শেয়ার কিনতে পারেননি। মাত্র সাত দিনেই শেয়ার দর তিন গুন বেড়ে যায়। এমন পরিস্থিতিতে বিভিন্ন সমালোচনা তৈরি হলে ওয়ালটনসহ যেসব কোম্পানির যেসব কোম্পানির ১০ শতাংশের কম ফ্রি-ফ্লোট শেয়ার রয়েছে, সেসব কোম্পানির ফ্রি-ফ্লোট শেয়ার বাড়াতে এসইসির ওপর চাপ তৈরি হয়।
বিএসইসিও উদ্যোগ নেয়, যদিও তা একেবারেই প্রাইমারি স্টেজে রয়ে যায়। তবে বিএসইসির উদ্যোগ নেওয়ার বিষয়টি পুঁজিবাজারে ছড়িয়ে পড়লে ওয়ালটনের শেয়ারে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করে। টানা নয় কার্যদিবস সর্বোচ্চ দরবৃদ্ধির পর সাধারণ বিনিয়োগকারীরা ওয়ালটনের শেয়ার কেনার সুযোগ পাওয়ার পর থেকে দরে উল্টো চিত্র দেখা যায়। সাধারণ বিনিয়োগকারীরা ওয়ালটনের শেয়ার মূলত ৯৪০ থেকে ১ হাজার ৯ টাকায় কেনার সুযোগ পান। এ সময়ে প্রায় ১৭ লাখ শেয়ার কেনেন তারা। তবে ওয়ালটনের ফ্রি-ফ্লোট শেয়ার বাড়াতে বিএসইসির পদক্ষেপের বিষয়টি বাজারে ছড়িয়ে পড়লে গত চার কার্যদিবসে প্রায় ২৪ শতাংশ দর হারিয়ে ৭৬৭ টাকা ৪০ পয়সায় নেমে আসে। এমন পরিস্থিতিতে কোনো কোনো বিনিয়োগকারী আইনি প্রক্রিয়ায় যাওয়ার প্রস্তুতি নেন বলে জানা যায়। তবে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের ক্ষতির বিষয়টি বিবেচনা করে কমিশন ওয়ালটনের ফ্রি-ফ্লোট শেয়ার বাড়ানোর প্রক্রিয়া থেকে সরে আসে।
শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।